Sylhet Today 24 PRINT

প্রেমিকাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ৩৫ টুকরো করে ফ্রিজে

সিলেটটুডে ডেস্ক: |  ১৫ নভেম্বর, ২০২২

লিভ-ইন পার্টনারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা এবং মরদেহ গুম করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন এক যুবক। তাকে পাঁচ দিনের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন তিনি।

যুবকের নাম আফতাব আমীন পুনাওয়ালা। তার বয়স ২৮। নিহত তরুণী ২৬ বছরের শ্রদ্ধা ওয়াকার।

বিভিন্ন সূত্রের বরাতে এনডিটিভির খবরে বলা হয়, এই যুগল ভারতের দিল্লিতে লিভ-ইন পার্টনারে ছিলেন। চলতি বছরের ১৮ মে তাদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে সেদিন শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন আফতাব। তারপর মরদেহ ৩৫ টুকরো করে সেগুলোকে রাখার জন্য ৩০০ লিটারের একটি ফ্রিজ কেনেন তিনি। পরের ১৮ দিনে মেহরাউলি জঙ্গলের বিভিন্ন এলাকায় টুকরোগুলো ফেলে আসেন আফতাব।

দক্ষিণ দিল্লির অতিরিক্ত ডিসিপি-আই অঙ্কিত চৌহান বলেন, ‘মুম্বাইতে কাজ করার সময় দুজনে প্রেমে পড়েছিলেন। পরিবারের বিরোধিতার মুখে পড়লে, এপ্রিলের শেষ বা মে মাসের প্রথম সপ্তাহে তারা দিল্লিতে চলে আসেন। মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে বিয়ে করা নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। সেই ঝগড়ার জেরে তরুণীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন অভিযুক্ত।

‘অভিযুক্ত মরদেহ একটি ফ্রিজে সংরক্ষণ করেছিলেন। সুযোগ বুঝে বিভিন্ন সময়ে সেটি পাশের জঙ্গলে ফেলে আসেন তিনি।’

মুম্বাইয়ের একটি বহুজাতিক কোম্পানির কল সেন্টারে কাজ করতেন শ্রদ্ধা। সেখানেই আফতাবের সঙ্গে তার পরিচয়। কিছুদিনের মধ্যে তারা ডেটিং শুরু করেন।

সম্পর্কটাকে মেনে নেয়নি শ্রদ্ধার পরিবার। ফলে বাধ্য হয়ে তারা পালিয়ে দিল্লিতে চলে আসেন। মেহরাউলিতে একটি ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেন তারা।

শ্রদ্ধার এক বন্ধু সেপ্টেম্বরে তার ভাইকে জানায়, মোবাইল ফোন দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে শ্রদ্ধার। সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট চেক করে তার পরিবার দেখতে পায় এ সময়ের মধ্যে শ্রদ্ধার সেখানে কোনো আপডেট নেই।

চলতি মাসে শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ মদন ওয়াকার মুম্বাই পুলিশের কাছে একটি নিখোঁজ মামলা করেন।

প্রাথমিক তদন্তে শ্রদ্ধার শেষ অবস্থান দিল্লিতে পাওয়া যায়। এর ভিত্তিতে মামলাটি দিল্লি পুলিশের কাছে স্থানান্তর করে মুম্বাই পুলিশ।

শ্রদ্ধার বাবা পুলিশের কাছে সন্দেহভাজন হিসেবে আফতাবের নাম প্রকাশ করেন। শ্রদ্ধার সঙ্গে আফতাবের সম্পর্কের বিষয়টিও তিনি জানান।

৮ নভেম্বর মেয়ের খোঁজে দিল্লি আসেন বিকাশ মদন ওয়াকার। তবে মেয়ের ফ্ল্যাটটি তিনি তালাবদ্ধ পান। পরে মেহরাউলি পুলিশের কাছে গিয়ে তিনি অপহরণের অভিযোগ করেন। অভিযোগে বিকাশ জানান, তার মেয়েকে প্রায়ই মারধর করতেন আফতাব।

এই অভিযোগের ভিত্তিতে গত শনিবার আফতাবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জেরার মুখে তিনি হত্যার করা স্বীকার করেন। জানান, শ্রদ্ধা তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝামেলা হতো। পরে হত্যার বর্ণনা দেন তিনি।

পুলিশ জানায়, জঙ্গল থেকে কিছু দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে সেগুলো মানুষের দেহাবশেষ কী না, তা জানা যায়নি। মরদেহ বিচ্ছিন্নে ব্যবহৃত ছুরিটি এখনও পাওয়া যায়নি। আফতাবের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছে পুলিশ।

দিল্লি কমিশন ফর উইমেন প্রধান স্বাতী মালিওয়াল টুইটে বলেছেন, ‘একটি হৃদয় বিদারক ঘটনা... দিল্লিতে এক তরুণীকে তার প্রেমিক খুন করে ৩৫ টুকরো করে ফ্রিজে রেখেছিল! তার মৃতদেহের টুকরো শহরের বিভিন্ন এলাকায় ফেলে দেয়া হয়েছিল। সমাজে কী ধরণের দানব বসবাস করছে? পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। তার কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.