আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ১২:১৬

জেরুজালেমে সিনাগগে বন্দুক হামলায় নিহত ৭

পূর্ব জেরুজালেমের নেভ ইয়াকভ এলাকায় একটি সিনাগগে (ইহুদি উপাসনালয়) বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। অধিকৃত পশ্চিমতীরের জেনিন শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর বেপরোয়া হামলায় ১০ ফিলিস্তিনির মৃত্যুর একদিন পরই এই ঘটনা ঘটলো। এটি ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীদের প্রতিশোধমূলক হামলা বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গতকাল শুক্রবার রাত ৮টা ১৫ মিনিটে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই মারা যান পাঁচজন। বাকি দু’জন হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান। এছাড়া আহতদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ইসরায়েলি পুলিশ বন্দুকধারীকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, রাত ৮টা ১৩ মিনিটে গাড়িতে করে হামলাকারী আসেন। প্রার্থনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি সিনাগগের বাইরে অপেক্ষা করেছিলেন। মানুষজন উপাসনা শেষে বের হয়ে আসার পর গুলি চালান তিনি।

তারপরে তিনি গাড়িতে করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে ফিলিস্তিনি পাড়া বেইত হানিনার দিকে যান। খবর পেয়ে পাঁচ মিনিট পরই সেখানে পুলিশ চলে আসে।

পুলিশ জানায়, ওই যুবক গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার পরে পায়ে হেঁটে পালানোর চেষ্টা করেন। এসময় তিনি অফিসারদের ওপর গুলি চালান। পাল্টা গুলিতে তার মৃত্যু হয়। হামলায় ব্যবহৃত একটি পিস্তল জব্দ করা হয়েছে।

পুলিশ কমিশনার কোবি শাবতাই বলেছেন, এই হামলাটি কয়েক বছরের মধ্যে ইসরায়েলের সবচেয়ে খারাপ হামলার একটি।

ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীর নাম আলকাম খায়েরি (২১)। তিনি ফিলিস্তিনের একজন হামাস সদস্য। তিনি পূর্ব জেরুজালেমের শুয়াফাতে বসবাস করতেন।

খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যান কট্টর ইহুদীবাদী প্রধানমন্ত্রী বেনয়ামিন নেতানিয়াহু। এসময় হামলাকারীকে হত্যা করায় তিনি পুলিশ অফিসারদের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “আমাদের অবশ্যই দৃঢ় সংকল্প এবং সংযম নিয়ে কাজ করতে হবে।” এসময় জনগণকে আইন নিজের হাতে তুলে না নিতে আহ্বান জানান তিনি।

নেতানিয়াহু আরও বলেন, আমরা বেশ কয়েকটি তাত্ক্ষণিক পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছি যা আজ রাতে শুরু হবে।" হামলার ঘটনা নিয়ে আজ শনিবার মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন তিনি।

গেল বৃহস্পতিবার অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে ভয়াবহ অভিযান চালায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। অভিযানে অন্তত ১০ ফিলিস্তিনি নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলছেন, এটা বছরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হামলা। এ ঘটনার পর তেল আবিবের সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতা স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বশাসন কর্তৃপক্ষ। এই হামলার প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দেয় হামাসসহ ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। এরপরই সিনাগগে হামলার খবর এলো। কট্টরপন্থী নেতানিয়াহু ফের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ফিলিস্তিনিদের ওপর মারমুখি অবস্থানে রয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ ও সেনা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত