Sylhet Today 24 PRINT

ইন্দিরা গান্ধীর যত প্রেম

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১৬ জানুয়ারী, ২০১৬

ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনীতিতে এক স্মরণীয় নাম ইন্দিরা গান্ধী। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পেছনেও রয়েছে তার অসামান্য অবদান। ভারতের প্রথম এবং আজ পর্যন্ত একমাত্র নারী প্রধানমন্ত্রী তিনি। উপমহাদেশের মানুষের কাছে একজন রাজনীতিবিদ হিসেবেই পরিচিত জওহর লাল নেহেরুর কন্যা ইন্দিরা।

তবে রাজনীতিবিদ ইন্দিরার জীবনেও রয়েছে গোপন কিছু অধ্যায়। তরুণী এবং যুবতী থাকাকালে, এমনকি বিয়ের পরেও একাধিক প্রেমে মজেছিলেন নামকরা এই রাজনীতিবিদ। ইন্দিরার এসব প্রেম কাহিনী পাওয়া যায় তার জীবনীকারক ক্যাথেরিন ফ্রাঙ্কের লেখা ‘দ্য লাইফ অব ইন্দিরা নেহেরু গান্ধী’ বইতে। এছাড়া পাওয়া যায় নেহেরুর সচিব এম ও মাথাইয়ের আত্মজীবনীতেও।

১৯৩৬ সালে ইন্দিরার মা কমলা নেহেরু মারা যাওয়ার পর যুক্তরাজ্যে পড়াশুনা করতে যান ইন্দিরা গান্ধী। সেখানে তার সাথে প্রেম হয় ফিরোজ গান্ধীর। ১৯৪২ সালে তিনি বিয়ে করেন সাংবাদিক ফিরোজ গান্ধীকে। অবশ্য ১৯৩০ সালে ইন্দিরা গান্ধীকে একবার বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল ফিরোজ। তবে তখন ইন্দিরার বয়স (তখন ১৬) কম থাকায় তার পরিবার রাজি হয়নি। ফিরোজ গান্ধী ছিলেন ভারতের পারসি সম্প্রদায়ের সদস্য। এ কারণে এ বিয়ে মেনে নিতে চাননি তার বাবা জওহর লাল নেহেরু। বিয়েতে আপত্তি ছিল মহাত্মা গান্ধীরও। তবে কোনো কিছুই বাধা হতে পারেনি। অবশ্য শেষ পর্যন্ত সুখের হয়নি তাদের এ বিয়ে। বিবাহ বিচ্ছেদ না ঘটলেও ১৯৫০ সালের পর আর একসাথে থাকা হয়নি ফিরোজ-ইন্দিরার।

ফিরোজ গান্ধীর সাথে এ সম্পর্কচ্ছেদের আগেই একাধিক প্রেমে মজেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা শেষ না করেই ভারতে ফিরে আসেন তিনি। তার বাবা তাকে ভর্তি করিয়ে দেন রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনে। এখানে তিনি প্রেমে পড়েছিলেন এক জার্মান শিক্ষকের। ওই শিক্ষক তাকে জার্মান ভাষা শেখাতেন।

১৯৫০ সালে ফিরোজ গান্ধীর সাথে সম্পর্কচ্ছেদের পর থেকে ইন্দিরা তার বাবার একান্ত সহকারী হিসেবে কাজ করতেন তাদের ‘তিন মূর্তি ভবনে’। এখানে এসে তিনি প্রেমে পড়েন তার বাবার সচিব এম ও মাথাইয়ের। মাথাইয়ের সাথে তার প্রেম চলে প্রায় ১২ বছর। এমনকি এ সময় একবার গর্ভবতীও হয়েছিলেন ইন্দিরা। তবে শেষ পর্যন্ত ইন্দিরার যোগ শিক্ষক ধীরেন্দ্র ব্রহ্মচারীর কাছে হেরে যান মাথাই।

ইন্দিরা নতুন করে প্রেমে পড়েন ধীরেন্দ্রর। এসব ঘটনা ইতিহাসবিদ এস. গোপালের বইতেও পাওয়া যায়। যেহেতু মাথাই দেখতে সুদর্শন ছিল না, সেদিক থেকে ধীরেন্দ্র ছিল অনেক বেশি সুদর্শন এক বিহারী যুবক। এরপর ইন্দিরার জীবনে আসে দিনেশ সিং। সে প্রতিদিন প্রধানমন্ত্রী ভবনে এসে আড্ডা দিতো ইন্দিরার সাথে। তারপর থেকেই শুরু হয় প্রেম। দিনেশ সিং ছিলেন জওহর লাল নেহেরুর মন্ত্রিসভার বিদেশমন্ত্রী।

এর মধ্যে ফিরোজ গান্ধীর সাথে সম্পর্ক থাকাকালেই আরো একজনের সাথে প্রেম ছিল ইন্দিরার। তার নাম মোহাম্মদ ইউনুস। কে এন রাও তার ‘নেহেরু ডায়নাস্টি’ বইতে লিখেছেন, ইন্দিরার ছোট ছেলে সঞ্জয় গান্ধী মূলত ইন্দিরা-ইউনুসের ছেলে। কারণ সঞ্জয় মানেকাকে বিয়ে করায় ইউনুস ছিল ক্ষুব্ধ। একজন শিখ মেয়ের সাথে নিজের ছেলের বিয়ে মেনে নিতে পারেনি সে। ঘটনাটি মোহাম্মদ ইউনুসের লেখা ‘পারসন, প্যাশন অ্যান্ড পলিটিক্স’ বইতেও পাওয়া যায়।

এতসব সত্ত্বেও রাজনীতিতে কোনো কিছুই বাধা হতে পারেনি ইন্দিরার। ভারতের রাজনীতিতে তার জনপ্রিয়তা ছিল আকাশচুম্বী। তৃণমূল পর্যায় থেকে শীর্ষ পর্যায় পর্যন্ত সবাখানেই তিনি ছিলেন সমাদৃত।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.