Sylhet Today 24 PRINT

গাজায় নিহত ২১ হাজার ছাড়াল, অধিকাংশই নারী ও শিশু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক |  ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৩ সপ্তাহ ধরে অব্যাহত ইসরায়েলি হামলায় ভূখণ্ডটিতে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ২১১১০ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।

একই সময় গাজায় আরও ৫৫২৪৩ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে এবং ৭০০০ জনেরও বেশি নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। 

ইতোমধ্যে ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা, গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় সবাই বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষেও হতাহতের সংখ্যা বেড়েছে। বুধবার দেশটির সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজায় অভিযানে থাকা তাদের বাহিনীর আরও তিন সেনা নিহত হয়েছে।

এই নিয়ে ২০ অক্টোবর গাজা ভূখণ্ডে স্থল অভিযান শুরু করার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর ১৬৬ জন সেনা নিহত হল। এই সময়জুড়ে আরও ৮৯৮ জন ইসরায়েলি সেনা আহত হয়েছে বলে আল জাজিরা জানিয়েছে।

৭ অক্টোবর গাজা সংলগ্ন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস নজিরবিহীন হামলা চালায়। তাদের হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১২০০ জন নিহত হয়, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক। এ সময় হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েল থেকে প্রায় ২৪০ জন বন্দি করে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে রাখে।

ওই দিন থেকেই হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্য নিয়ে গাজায় ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরায়েল। দেশটি ১৯৭৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে প্রথমবারের মতো যুদ্ধ ঘোষণা করে। হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটির শাসনাধীনে থাকা গাজা ভূখণ্ডকে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে ইসরায়েল।

ইসরায়েলি বাহিনী এখন গাজার মধ্যাঞ্চলেই বেশি হামলা চালাচ্ছে। আকাশ, সাগর ও স্থল- তিন দিক থেকে সর্বাত্মক হামলা চালাচ্ছে তারা। বুধবার ইসরায়েলি হামলা আরও বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

বুধবার রাতে গাজার চিকিৎসা কর্মীরা জানিয়েছেন, এদিন ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো গাজার মধ্যাঞ্চলীয় আল নুসেরাতে তিনবার হামলা চালিয়েছে, এতে সাতজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। মধ্যাঞ্চলের আল-মাঘাজি এলাকায় বিমান হামলায় আরও পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হয়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বুধবার খান ইউনিস শহরের আল-আমল হাসপাতালের কাছে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

মন্ত্রণালয়টির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এদিন উত্তরাঞ্চলে গাজা সিটির আল শিফা হাসপাতালে সাত ফিলিস্তিনির মৃতদেহ আনা হয়।

গাজার মধ্যাঞ্চলের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রাত নেমে আসার পর আল-বুরেইজ ও আল-মাঘাজিতে ইসরায়েলি ট্যাংকগুলো গোলাবর্ষণ শুরু করে, এখানে ট্যাংকগুলো শক্তিপ্রয়োগ করে বসতি এলাকার ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছে।  

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, তাদের কর্মীরা হাজার হাজার গাজাবাসীকে গাজার মধ্যাঞ্চল ও খান ইউনিস শহর থেকে পায়ে হেঁটে, গাধার পিঠে চেপে অথবা গাড়িতে করে পালাতে দেখেছেন। ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচার চেষ্টায় পালাচ্ছিল তারা। মূল সড়কের ধারে অস্থায়ী আশ্রয় গড়ে সেখানে অবস্থান করছেন বাস্তুচ্যুত বহু গাজাবাসী ফিলিস্তিন।

ইসরায়েলের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বুধবার লেবানন থেকে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যে বহু রকেট ও অস্ত্রসজ্জিত ড্রোন হামলা চালিয়েছে। আগের যে কোনো দিনের চেয়ে এদিন হামলা অনেক জোরালো ছিল বলে জানিয়েছেন তারা।

ইসরায়েল জানিয়েছে, তাদের যুদ্ধবিমানগুলো লেবাননে হিজবুল্লাহর সামরিক স্থাপনা ও অন্যান্য স্থানে হামলা চালিয়েছে।

ইসরায়েল ও হামাসের চলমান যুদ্ধ ক্রমেই ওই অঞ্চলজুড়ে বিস্তৃত হতে থাকায় মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিমা বহু সরকার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.