Sylhet Today 24 PRINT

গোপনে অত্যাধুনিক মারনাস্ত্র ‘কালি-৫০০০’ তৈরি করলো ভারত

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক |  ০২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

ভারতের সর্বাধুনিক যুদ্ধাস্ত্র ‘কালি’কে নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছে চিন। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বা আকাশপথে হওয়া যে কোনও আক্রমণ প্রতিরোধ করতে ‘কালি’ তৈরি করেছে ভারত। কিন্তু শক্তি বাড়তে বাড়তে ‘কালি’ এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে মহাকাশে ভাসমান কৃত্রিম উপগ্রহকেও সে ধ্বংস করতে পারে। আন্তর্জাতিক মহলে ‘কালি’কে নিয়ে জল্পনা এখন সে রকমই। লেজার অস্ত্র যেভাবে প্রয়োগ করা হয়, ‘কালি’র ব্যবহারও অনেকটা সে রকমই। কিন্তু লেজার অস্ত্রের চেয়েও ভয়ঙ্কর ভারতের তৈরি করা এই মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম।

‘কালি’-র পুরো অর্থ হল ‘কিলো অ্যাম্পিয়ার লিনিয়ার ইনজেক্টর’। ভারত অত্যন্ত গোপনে তৈরি করেছে এই অস্ত্র। ১৯৮৫ সালে ‘কালি’ তৈরির কাজ শুরু করে ভারত। প্রথমে এর কর্মক্ষমতা সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানানো হয়নি। শিল্পের প্রয়োজনে ভারত নতুন প্রযুক্তির লিনিয়ার ইনজেক্টর তৈরি করছে বলে জানানো হয়েছিল। ভারতের সশস্ত্র বাহিনীতে কালির অন্তর্ভুক্তি হওয়ার পর গোটা বিশ্বের টনক নড়ে। আন্তর্জাতিক মহল জানতে পারে, প্রতিপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্রকে আকাশেই ঝলসে দেওয়ার অস্ত্র তৈরি করে ফেলেছে ভারত। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা রুখতে ভারতের তৈরি এই ‘কালি’ যে ধরনের অস্ত্র, তা প্রায় কোনও দেশের হাতে নেই। আমেরিকা-সহ বেশ কয়েকটি দেশের হাতে লেজার অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে। কিন্তু ভারত লেজার অস্ত্র তৈরির পথে না হেঁটে যে অস্ত্র তৈরি করেছে, তা আরও ভয়ঙ্কর। কালি যখন প্রথম তৈরি হয়েছিল তখন তা ০.৪ গিগাওয়াট শক্তির ইলেকট্রন স্রোত নিয়ে আঘাত করার ক্ষমতা রাখত। পরে এই ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতে ঘটাতে কালি-৫০০০ বলে যে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, তা বহুগুণ বেশি শক্তিশালী। ৪০ গিগাওয়াট শক্তির ইলেকট্রন স্রোত ছাড়তে পারে কালি-৫০০০। এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

ঠিক কী ভাবে কাজ করবে কালি-৫০০০? কোনও ক্ষেপণাস্ত্র বা এয়ারক্র্যাফ্ট ভারতের দিকে ধেয়ে আসছে দেখলেই, তাকে লক্ষ্য করে অসংখ্য ইলেকট্রন কণার তীব্র গতিবেগসম্পন্ন স্রোত ছাড়বে কালি-৫০০০। এই ইলেকট্রন কণার স্রোত প্রচণ্ড তপ্ত এবং বিদ্যুৎবাহী। সেই তপ্ত কণার স্রোত বা রশ্মি তড়িৎ-চৌম্বকীয় বিকিরণে পরিণত হবে। সেই বিকিরণ মহাকাশে ছড়িয়ে থাকা মাইক্রোওয়েভের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে সক্ষম। ফলে কালি-৫০০০ থেকে নির্গত ইলেকট্রন স্রোত শেষ পর্যন্ত পরিণত হবে মাইক্রোওয়েভ বিকিরণে। এই মাইক্রোওয়েভ বিকিরণ প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে গ্রাস করবে ভারতের দিকে ছুটে আসা যে কোনও ক্ষেপণাস্ত্র বা এয়ারক্র্যাফ্টকে। লেজার অস্ত্র দিয়েও ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা যায়। কিন্তু লেজার রশ্মি ক্ষেপণাস্ত্রে আঘাত করে তাতে ছিদ্র তৈরি করে সেটিকে ধ্বংস করে। এই পদ্ধতি সময় সাপেক্ষ। কালি-৫০০০ যে মাইক্রোওয়েভ বিকিরণ ছাড়ে, তা ছুটন্ত ক্ষেপণাস্ত্রের সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষেপণাস্ত্রটি ঝলসে যাবে। চোখের নিমেষে আকাশেই ধ্বংস হয়ে যাবে।

পাকিস্তান তো বটেই, চিনও কালি মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমকে বিপজ্জনক হিসেবে দেখতে শুরু করেছে। শুধু ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে নয়, প্রতিপক্ষের আকাশসীমায় হামলা চালাতেও কালি-৫০০০ কার্যকরী। মাইক্রোওয়েভ বিকিরণকে কাজে লাগিয়ে যেভাবে ধ্বংসলীলা চালাতে সক্ষম ভারতের এই অত্যাধুনিক অস্ত্র, তাতে মহাকাশে ভাসমান কৃত্রিম উপগ্রহ ধ্বংস করাও সম্ভব। তা নিয়েও আন্তর্জাতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। ভারত কালি-৫০০০-এর উন্নতি ঘটিয়ে এখন কালি-১০০০০ তৈরির কাজ শুরু করায়, আরও অক্সিজেন পেয়েছে সেই জল্পনা। কিন্তু মহাকাশ গবেষণা সংক্রান্ত বিষয় এবং অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রের প্রয়োগের ক্ষেত্রে ভারত সরকারের যে নীতি রয়েছে, তাতে ভারত অকারণে কালি-৫০০০-এর প্রয়োগ করবে না বলে অধিকাংশ দেশই মনে করছে।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.