Sylhet Today 24 PRINT

বিক্ষোভের মুখে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি। তার সচিবালয় এক বিবৃতি দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।

এরই মধ্যে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পুডেল ও প্রধানমন্ত্রী ওলির বাড়িতে ঢুকে পড়েছে এবং আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে।

অপরদিকে, বিবিসি বলছে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি পদত্যাগ করেছেন বলে তার সচিবালয় এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভবনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় ও রাজনৈতিক নেতাদের বাসভবন ভাঙচুর করার একদিন পর অলির পদত্যাগের ঘোষণা আসে।

সোমবার সামাজিকমাধ্যম ব্যবহারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতির প্রতিবাদে নেপালে বিক্ষোভ শুরু হয়। রাজধানী কাঠমান্ডু ছাড়াও ছাত্র-জনতা পোখারা, বুতোয়াল, ভারতপুর ও ইতাহারিসহ কয়েকটি শহরের রাস্তায় নামে। সকালে কাঠমান্ডুর বাণেশ্বর এলাকায় প্রথম বিক্ষোভ শুরু হয় এবং অল্প সময়ের মধ্যে তা রাজধানীর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ দমনে সরকার সেনাবাহিনী মোতায়েন করে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সংঘাতে পুলিশের গুলিতে অন্তত ১৯ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়, যাদের মধ্যে শিক্ষার্থীরাও ছিলেন। এ ঘটনায় ৪০০ জনের বেশি তরুণ আহত হন।

২০২৪ সালের জুলাই থেকে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন অলি। নেপালি কংগ্রেসের সমর্থনে তিনি ক্ষমতায় এসেছিলেন। তবে রক্তক্ষয়ী দমন-পীড়নের দায় তার প্রশাসনের উপর চাপতে শুরু করলে ক্রমেই তার বিরুদ্ধে চাপ বাড়তে থাকে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোও নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের জন্য তার সরকারকে দায়ী করে।

অলি এর আগে ২০১৫–১৬, ২০১৮–২১, স্বল্প সময়ের জন্য ২০২১ সালে এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুলাই থেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দৃঢ় মনোভাব ও জাতীয়তাবাদী নীতির জন্য পরিচিত এই নেতা ক্ষমতায় আসেন স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি নিয়ে।

তবে তার রাজনৈতিক জীবন শেষ হলো অস্থিরতা, জনঅসন্তোষ ও কর্তৃত্ববাদিতার অভিযোগের মধ্যে দিয়ে।

তিনি পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, দেশের সংকট সমাধান ও রাজনৈতিক সমাধানের পথে অগ্রসর হওয়ার জন্যই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। খবর আল জাজিরার।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নিষেধাজ্ঞা, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, বেকারত্ব ও অর্থনৈতিক সংকটের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের মুখে কেপি শর্মা অলি পদত্যাগ করেন।

দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রকাশ সিলওয়ালের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

এর আগে, কারফিউ ভেঙে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা দেশটির সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল নেপালি কংগ্রেসের কার্যালয় এবং একাধিক শীর্ষ নেতার বাড়িতে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। এর একদিন আগেই সরকারবিরোধী আন্দোলনে অন্তত ১৯ জন নিহত হন।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে দেশটির সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। তবে আন্দোলনকারীদের দাবি, ফেসবুক-টিকটক নিষেধাজ্ঞা ছিল কেবলমাত্র স্ফুলিঙ্গ—আসল ক্ষোভ জমে ছিল দীর্ঘদিনের দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, বেকারত্ব ও অর্থনৈতিক সংকটের বিরুদ্ধে।

বিক্ষোভের জেরে সরকারের অন্তত তিন মন্ত্রী পদত্যাগ করেন। বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন।

গত সপ্তাহে ভুয়া তথ্য, প্রতারণা ও ঘৃণামূলক বক্তব্য রোধের অজুহাতে নেপাল সরকার ২৬টি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেয়। এর মধ্যে ছিল হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইন ও ইউটিউব।

এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে “জেন জি” আন্দোলন নামে প্রতিবাদ শুরু হয়। রাজধানী কাঠমান্ডু ও বিভিন্ন বড় শহরে হাজারো তরুণ-তরুণী ও শিক্ষার্থী নেমে আসে রাস্তায়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
✉ sylhettoday24@gmail.com ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.