সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক

১৮ ফেব্রুয়ারি , ২০১৬ ২০:৩১

কানহাইয়ার মুক্তির দাবিতে উত্তাল যাদবপুর, ভারতজুড়ে বিক্ষোভ

দেশদ্রোহীতার অভিযোগে গ্রেফতার ভারতের দিল্লির জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ছাত্র সংসদের সভাপতি বামপন্থি ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমারের মুক্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার ভারতের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ, সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে ক্ষোভে এদিন সবচেয়ে বেশি উত্তাল ছিল পশ্চিমবঙ্গের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

উত্তাল ছাত্রবিক্ষোভে প্রকম্পিত রাজপথ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি শিক্ষার্থীদের সমর্থন জানিয়ে বলেছেন, শিক্ষার্থীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করা হলে তিনি পদত্যাগ করবেন। এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি কংগ্রেসের সমর্থন থাকলেও বিজেপি এবং তাদের ছাত্র সংগঠনের তরফে আন্দোলন দমনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

ছাত্রদের পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন শিক্ষকরাও। বৃহস্পতিবার ভারতের অন্তত ১০টি শহরের রাজপথে বিক্ষোভে অংশ নেন ছাত্ররা। বেঙ্গালুরু, জয়পুর ও চেন্নাইয়ের বিক্ষোভ থেকে গ্রেফতারকৃত ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমারের দ্রুত মুক্তির দাবি জানানো হয়। বিক্ষোভের এই বাস্তবতায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, দিল্লির এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়িয়ে এ আন্দোলন এখন পুরো ভারতজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সুরঞ্জন দাস বলেন, ‘দরজা বন্ধ করে, ফোর্স দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করা যায় না। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গন হলো মুক্ত চিন্তার জায়গা।’ বিচ্ছিন্নতাবাদী বা দেশবিরোধী স্লোগানের নিন্দা করলেও গণতন্ত্রে সবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন সুরঞ্জন দাস।

যাবদপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বৃহস্পতিবার দিনভর শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল ছিল। তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কুশপুত্তলিকা দাহ করে কানাইয়া কুমারের মুক্তি দাবি করে।

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি’র রাজ্য সম্পাদক সুবীর হালদারের দাবি, ‘আমাদের কাছে প্রমাণ আছে যাদবপুরের নির্ঝর, প্রিয়স্মিতা এবং অরুমিতা রাষ্ট্রদ্রোহী এবং পাকিস্তানের দালাল। এরা লাহোরে গিয়ে ভারতের বিরোধিতা করতে পারে। আমরা অবিলম্বে এদের দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়ে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।’ সুবীর হালদারের দাবি, ‘রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঋতব্রত (সিপিআই-এম-এর এমপি) এই দেশদ্রোহীদের সুরে সুর মিলিয়ে মিছিল করেছে। আমরা ওর উপরে নজর রাখছি। যদি এর পরেও তাকে এ ধরনের মিছিলে দেখা যায় তাহলে এফআইআর করে গ্রেফতারের দাবি তুলব।’

এদিকে, জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়েও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানিয়ে দিয়েছেন, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হবেন না। উচ্চ পর্যায়ের ওই প্যানেলে মাত্র তিনজনের পরিবর্তে আরও ছাত্র ও শিক্ষকদের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

গত মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) ভারতের পার্লামেন্টে হামলার দায়ে দোষী সাব্যস্ত আফজাল গুরুকে ২০১৩ সালে ফাঁসিতে ঝোলানোর বর্ষপূর্তি পালন করে ভারতের জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল শিক্ষার্থী। সেসময় তারা আফজাল গুরুকে ফাঁসিতে ঝোলানোর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন বলে অভিযোগ ওঠে।

এ ঘটনায় প্রবল আপত্তি জানিয়ে বৃহস্পতিবার বসন্তকুঞ্জ (উত্তর ) থানায় ভারতীয় দ্ণ্ডবিধির ১২৪ এ (দেশদ্রোহিতা) ও ১২০ বি (ফৌজদারি চক্রান্ত) মামলা দায়ের করেন বিজেপি নেতা মহেশ গিরি ও বিজেপির ছাত্র শাখা এবিভিপি। আর শুক্রবার গ্রেফতার হন ছাত্র সংসদের সভাপতি কানহাইয়া কুমার।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত