Sylhet Today 24 PRINT

ভারতেও বায়োমেট্রিক বিতর্ক

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১৬ মার্চ, ২০১৬

তৃতীয়পক্ষের হাতে নাগরিকদের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত তথ্য চলে যাবে- এমন আশঙ্কায় সিমকার্ড পুনঃনিবন্ধনে বায়োমেট্রিক নিয়ে চলছে বিতর্ক। ইতিমধ্যে বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। যদিও সরকার বারবার এর পক্ষে ওকালতি করছে।

এদিকে ভারতেও বায়োমেট্রিক ডাটা সহ সচিত্র পরিচয়পত্র চালু নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ‘আধার কার্ড বিল’ নামে এ সংক্রান্ত বিল বুধবার রাজ্যসভায় পেশ করার পরই শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা।

ভারতের ইন্টারনেট অ্যাক্টিভিস্টদের একটি বড় অংশ মনে করছে, এই পদক্ষেপ ব্যক্তিগত গোপনীয়তার জন্য বড় বিপদ।

ভারতের দ্য সেন্টার ফর ইন্টারনেট অ্যান্ড সোসাইটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই আধার কার্ড বিল নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকারে হস্তক্ষেপেরই সামিল।

এমপি আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বিপক্ষে যুক্তি দিয়ে বলছেন, জাতীয় নিরাপত্তার নামে সরকার এই বিলের অপব্যবহার করতে পারে। আধার কার্ডের জন্য সংগৃহীত বায়োমেট্রিক তথ্য অন্য কাজে ব্যবহার করতে পারে। বলা হচ্ছে থানায় গিয়ে এফআইআর করা থেকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া, সব কাজেই এই কার্ড লাগবে। সেই জন্যই আমি মনে করি এই বিল ভারতে একটি পুলিশ-রাষ্ট্রের জন্ম দিতে যাচ্ছে।

ভারতে সেন্টার ফর ইন্টারনেট অ্যান্ড সোসাইটি বা সিআইএস এবং ন্যাশনাল ল ইউনিভার্সিটির বহু গবেষকও এক যৌথ বিবৃতিতে এই বিলের বিরোধিতা করছে।

ব্যক্তিগত গোপনীয়তার হুমকির কারণ ব্যাখ্যায় বলা হচ্ছে, আঙুলের ছাপ, চোখের স্ক্যান বা ডিএনএ-র মতো বায়োমেট্রিক ডাটা যদি একবার ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে অন্য কারও হাতে পড়ে তাহলে ‘আমি যে আসলে আমিই’ তা প্রমাণ করার কোনও উপায় থাকে না।

এছাড়া বাংলাদেশে মোবাইল কোম্পানিগুলো বা ভারতে সরকার নিজে যে বায়োমেট্রিক ডাটা সংগ্রহ করছে তা কতটা সুরক্ষিত, কীভাবে তা সংরক্ষণ করা হবে তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও ধারণা কারোরই নেই।

তবে বিতর্ক যতোই হোক বাংলাদেশের মতো ভারত সরকারও বিলটি নিয়ে অনড়। শুধু তা-ই নয়, এটিকে অর্থ বিলের আকারে পেশ করা হয়েছে, যাতে আর কোনও পরিবর্তন না আনা যায়।

অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি যুক্তি দিয়ে বলছেন, সরকারি রাজস্বের ন্যায্য পাওনা নাগরিকদের কাছে পৌঁছানোর উদ্দেশ্যেই এই আধার কার্ড। এতে অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই।

বলা হচ্ছে, রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি পাওয়া, একশো দিনের কাজের মজুরি পাওয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে আধার কার্ড অনেক সুবিধা দেবে। তাছাড়া ভারত বা বাংলাদেশের মতো দেশে আইডেন্টিটি ফ্রড বা পরিচিতি চুরির বিষয়ে সাধারণ মানুষের তেমন ধারণাই নেই। ফলে আমজনতার পক্ষ থেকে সরকারকে প্রতিরোধের মুখে পড়তে হচ্ছে না। যেমন, বাংলাদেশেও প্রতিবাদ করছে শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক প্রযুক্তি সচেতন মানুষেরা।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো- বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড যেকোনো সময় পরিবর্তনের সুযোগ থাকে। কিন্তু এই বায়োমেট্রিক পাসওয়ার্ড একবার হারালে তা বদলে নেয়ার কোনও সুযোগ নেই।
সূত্র : বিবিসি বাংলা।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.