Sylhet Today 24 PRINT

‘নিরাপত্তাজনিত কারণে’ মুসলিম পরিবারকে নামিয়ে দিলো যুক্তরাষ্ট্রের বিমান

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ০২ এপ্রিল, ২০১৬

নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে এক মুসলিম পরিবারকে নামিয়ে দেওয়ার পর নতুন করে সমালোচনার মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের বিমান। গত বছরের মে মাসে একই এয়ারলাইন্সের বিমানে কোকভর্তি ক্যানকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারে ভেবে এক মুসলিম নারীকে ক্যান দিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছিল।

ইসলামোফোবিয়া থেকেই ওই নারীর সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়েছে বলে সে সময় সমালোচনা হয়েছিল। এবার আবারও এয়ারলাইন্সটির বিরুদ্ধে ইসলামোফোবিয়াজনিত আচরণের অভিযোগ উঠেছে।

ওয়াশিংটন যাওয়ার জন্য শিকাগো বিমানবন্দর থেকে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ওঠেন ইমান-এমি সাদ শিবলি, তার স্বামী ও তাদের তিন সন্তান। বিমানটি উড্ডয়নের আগ মুহূর্তে পাইলট এসে তাদেরকে বিমান থেকে নেমে যেতে বলেন। তার আগে ওই দম্পতি তাদের সন্তানের জন্য বিশেষ সুরক্ষামূলক আসন দেওয়া যাবে কিনা তা বিমানবালার কাছে জানতে চেয়েছিলেন।

শিবলি পরে ওই ঘটনার দুটি ভিডিও প্রকাশ করেন যেখানে দেখা যায় প্রথমে বিমান বালা এরপর পাইলট এসে তাদের নেমে যেতে বলছেন। শিবলি পাইলটের কাছে জানতে চান এটি ‘বৈষম্যমূলক’ সিদ্ধান্ত কিনা। জবাবে পাইলট জানান, ‘এটি ফ্লাইটের নিরাপত্তা ইস্যু।’ তবে বিস্তারিত জানাননি তিনি।

এদিকে অভিযোগকারী পরিবারের তরফে এরইমধ্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স বরাবর চিঠি দিয়েছে দ্য কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস কর্তৃপক্ষ। চিঠিতে বলা হয়, ‘তুচ্ছ কারণে নিরাপত্তার কথা বলে মুসলিমবেশী যাত্রীদের বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়ার ঘটনা দেখতে দেখতে আমরা ক্লান্ত। নিরাপত্তার মানে হলো যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তাদের হয়রানি করা নয়। কিংবা নিরাপত্তার অজুহাতে তাদের বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া নয়।

ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে শিবলি লিখেছেন, ‘ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স, ধিক্কার জানাই তোমাদের! কারণ ছাড়াই ফ্লাইটের নিরাপত্তার অজুহাতে আমি এবং আমার পরিবারকে বিমান থেকে নামিয়ে দিয়েছো। এ ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হওয়ার মতো বয়স আমার বাচ্চাদের হয়নি।’

এরইমধ্যে বেশ কয়েকবার শিবলি পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। ওই বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়ার পর অন্য একটি ফ্লাইটে তাদের ওয়াশিংটন পাঠানো হয়।

বাজফিড নিউজের কাছে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ দাবি করে, ‘বাচ্চাদের জন্য সুরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করতেই ওই পরিবারকে বিমান থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় এবং তাদেরকে পরবর্তী একটি ফ্লাইটে গন্তব্যে পাঠানো হয়।’ ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষ বৈষম্যের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে বলেও বিবৃতিতে দাবি করা হয়।

তবে গত বছর মে মাসে তাহেরা আহমেদ নামের একজন নারী ওই এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে শিকাগো থেকে ওয়াশিংটন যাচ্ছিলেন। বিমান সহকারী তার জন্য একটি ঢাকনা খোলা ডায়েট কোকের ক্যান নিয়ে আসে। তাহেরা পরিচ্ছন্নতাজনিত কারণে একটি ঢাকনা লাগানো ক্যান চাইলে বিমান সহকারী তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, এটা কোম্পানির নীতিবিরোধী। এরপর তিনি আরেকজনকে ঢাকনা লাগানো ক্যান দিলে তাহেরা প্রতিবাদ জানান। তখন আরেক যাত্রী তাকে গালি দিয়ে বলেন, 'তুমি মুসলিম'।

এ ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান তাহেরা আহমেদ। তিনি ওই এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বয়কটের দাবি জানান। ওই বছরই জুন মাসে অবমাননাকর আচরণের জন্য এবার আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চায় ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স। একই সাথে সংশ্লিষ্ট ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট তাদের বিমানে আর সার্ভ করবে না বলেও জানায় কর্তৃপক্ষ। সূত্র: ইন্ডিপেনডেন্ট

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.