Sylhet Today 24 PRINT

থানায় সাপ, অভিযোগ দায়ের বন্ধ!

সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক |  ১৩ মে, ২০১৬

নাহ! সাধারণ মানুষের অভিযোগ গ্রহণ ঠেকাতে কৌশল করে পুলিশ এ কাজ করেনি। সাপকাণ্ডে পুলিশও অনেকটা বিপাকে। আর এমন ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রগতি ময়দান থানায়।

কাজ শেষে রাতে সোফায় একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলেন থানার এক কর্মকর্তা। এমন সময় হঠাৎই 'ফোঁস, ফোঁস' শব্দ! প্রথমে খেয়াল করেননি তিনি। কিন্তু ফের একই শব্দ। এবার ভয় পেয়ে ধড়ফড়িয়ে উঠলেন ওই কর্মকর্তা। টর্চ জ্বেলে দেখেন ঘরের মাটিতে ঘাড় উঁচিয়ে তার দিকে তাকিয়ে দুলছে ধূসর রঙের চার ফুট লম্বা চন্দ্রবোড়া!

ততক্ষণে ওই অফিসার বুঝে গিয়েছেন এটি কিন্তু বিষাক্ত সাপ। ফোন করে সহকর্মীদের ডেকে এ যাত্রায় কোনো মতে রক্ষা পান তিনি। ওই থানারই এক কর্মকর্তার মন্তব্য, কেউটে, চন্দ্রবোড়ার দল যেন 'টার্গেট' করে রেখেছে প্রগতি ময়দান থানাকেই!

অবশ্য তিনি বলেন, 'সাপ তো আর আমাদের জায়গায় আসেনি, আমরাই সাপের জায়গায় এসেছি। উপদ্রব তো সহ্য করতেই হবে।' জানা গেছে, প্রগতি ময়দান থানার পিছনেই রয়েছে আড়ুপোতা এলাকা। সেখানে পুকুর ও জঙ্গলে বহু বছর ধরেই কেউটে, চন্দ্রবোড়াসহ বিভিন্ন বিষধর সাপের বাস।

বাম আমলে পুকুরের একাংশ ভরাট করে তৈরি হয় থানা। কিন্তু ক্রমশ জনবসতি বাড়তে থাকায় সাপের দল বাস্তুহারা হয়ে পড়ে। হয়তো সামনে থানা পেয়ে সেখানেই পাকাপাকি আস্তানাও গড়তে তেড়েফুঁড়ে নামে তারা।

এছাড়া সম্প্রতি প্রগতি ময়দান থানায় অফিসার পদে যোগ দেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক গ্রামের বাসিন্দা এক যুবক। তিনি আবার সাপুড়েদের মতোই সাপ ধরতে পটু ছিলেন। সাপ ধরে নজরও কেড়েছিলেন তিনি।

কিন্তু মাস কয়েক আগে তিনি বদলি হওয়ার পর থেকেই ফের ঘুম হারাম অন্যদের। বিশেষত সন্ধ্যা নামলেই আতংকে থাকে গোটা থানা। পাছে মাটিতে থাকা সাপের গায়ে পা পড়ে এই ভয়ে ঘর থেকে বেরোতে চান না কেউ।

কিন্তু শান্তি নেই সেখানেও। কারণ ঘরের চালে অবিরাম ধুপধাপ শব্দেও প্রাণ প্রায় খাঁচাছাড়া হওয়ার হাল হয়।

এক কর্মকর্তা বলেন, 'যে কোনো সময়ে দেয়াল বেয়ে নিচে নামলেই বড় বিপদ। একে তো পরিবার ছেড়ে বাইরে থাকি। তার ওপরে এভাবে সাপের উপদ্রবে কবে যে প্রাণ যায় সেই ভয়ে থাকি।'

থানায় অনবরত চলছে ব্যতিক্রমী এক প্রতিযোগিতা। এক কর্মকর্তা বললেন, 'আমি পাঁচটা কেউটে দিয়েছি।' অন্যজন বলে উঠলেন, 'আমি তো সাতটা চন্দ্রবোড়া দিয়েছি।'

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাপের খোঁজ পেলেই বন দফতরে জানান কর্মকর্তা। তারাই সাপ উদ্ধার করেন। থানা থেকে কে কত সাপের খোঁজ বন দফতরকে দিতে পারেন তা নিয়ে চলে প্রতিযোগিতা।

এদিকে বিষয়টি সামনে আসতেই বেজায় ফাঁপরে পড়েছেন ওই থানা এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় এক যুবক বলেন, 'থানায় তো আসাই দায়। মারধরের অভিযোগ করতে এসে শেষে সাপের কামড়ে মরব নাকি!' সূত্র: আনন্দবাজার।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.