Sylhet Today 24 PRINT

ভারতে মুসলমান হত্যা ও বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বদলা নেওয়ার হুমকি আইএসের!

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২২ মে, ২০১৬

আইএসের নামে প্রচারিত এক তথ্যচিত্রে মুসলমান হত্যা ও বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তবে প্রচারিত তথ্যচিত্রটি সত্যিই আইএসের কিনা, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, গত শুক্রবার অনলাইনে প্রকাশ হওয়া ওই ভিডিওটি আইএসের কিনা, তা যাচাই করা হচ্ছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, ২০১৪ সালে আইএসে যোগ দিতে ইরাক ও সিরিয়ায় যাওয়া ৫ জিহাদিকে ওই ভিডিওতে প্রতিশোধের অঙ্গীকার ব্যক্ত করতে দেখা গেছে। তারা বলছেন, ভারতের গুজরাট, কাশ্মির, মুজাফফরনগরের মুসলমান হত্যা এবং বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রতিশোধ নেবেন।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবর অনুযায়ী, আরবি ভাষায় নির্মিত ২২ মিনিটের ওই তথ্যচিত্রে ভারতের মাটিতে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন যুদ্ধের ছবি দেখা গেছে। তথ্যচিত্রে রয়েছে ভারতের উল্লেখযোগ্য স্থান, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও পুরনো ইতিহাসের কথা।

ঐতিহাসিক পরিক্রমার প্রসঙ্গ তুলে তথ্যচিত্রের শুরুতে বলা হয়, একসময় মোহাম্মদ বিন কাশিম অঞ্চলটি (ভারত) জয় করেছিলেন এবং ইসলামি শাসনের ভিত্তি তৈরি করেন। এর পর ব্রিটিশরা হিন্দুদের কাছে ভারতের নিয়ন্ত্রণ তুলে দেয় উল্লেখ করে ভিডিওতে বলা হয়, দেশটির মুম্বাই, গুজরাট, আসাম ও মোরাদাবাদসহ বিভিন্ন জায়গায় মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চলছে। ভারতীয় হিন্দুদের ‘গরুর পূজক’ হিসেবে উল্লেখ করা হয় ভিডিওতে।

তথ্যচিত্রে দেখা গেছে সিরিয়ার মাটিতে জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর একদল তরুণকে হামলা চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবর অনুযায়ী, ২০১৪ সালে আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় চলে যাওয়া ভারতীয় তরুণ ফাহাদ তানভীর শেখকে ভিডিওতে দেখা গেছে। তিনি মহারাষ্ট্রের থানের প্রকৌশলবিদ্যার শিক্ষার্থী ছিলেন। এই ভিডিওতে তাকে আবু আমর আল-হিন্দি নামে দেখা গেছে। সেখানে শেখকে প্রতিজ্ঞা নিতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওতে তিনি বলছেন, ‘আমরা আবার ফিরব, তবে হাতে তলোয়ার থাকবে। বদলা নেব কাশ্মির, গুজরাট, মুজাফফরনগরে মুসলিম হত্যার, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের।’

তথ্যচিত্রের বেশিরভাগ অংশজুড়েই রয়েছে বিভিন্ন সাক্ষাৎকার। অপরিচিত কোনও উপকূলীয় এলাকায় সাক্ষাৎকারগুলো ধারণ করা হয়েছে। ভিডিওর একটি অংশে দেখা গেছে ছয় ব্যক্তি পাশাপাশি বসে আছেন এবং জিহাদি গান গাইছেন। সে গানের মধ্য দিয়ে তারা নতুন প্রভাতের শপথ নিচ্ছেন।

নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে এক জিহাদি বলেন, ২০০৮ সালে বাটলা হাউজে গোলাগুলির পর তিনি মুম্বাই থেকে খোরাসান অঞ্চলে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। বাটলা হাউজের ওই গোলাগুলিতে ইন্ডিয়ান মুজাহিদীনের কমান্ডার নিহত হয়েছিলেন। ওই জিহাদি খোরাসানে যাওয়াকে তার প্রথম হিযরত বলে উল্লেখ করেন আর সিরিয়া যাওয়াকে দ্বিতীয় হিযরত বলে উল্লেখ করেন। ভারতে ফিরে মুসলিম হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার জানিয়ে সে জিহাদি বলেন, ‘আপনারা কি মুম্বাইয়ের ট্রেনে বোমা হামলার কথা ভুলে গেছেন কিংবা আহমেদাবাদ, সুরাট, জয়পুর ও দিল্লিতে বোমা হামলার কথা?’

যেসব ভারতীয় মুসলিম আইএসের বিরোধিতা করছেন তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে ভিডিওতে। মুখোশে মুখ ঢাকা এক জিহাদি বলেন, ‘যারা ইসলামকে শান্তির ধর্ম বলে তাদের কথা শুনবেন না। ইসলাম একদিনের জন্যও শান্তির ধর্ম ছিল না। ইসলাম যুদ্ধের ধর্ম। আল্লাহর শাসন প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যেতে মহানবী আমাদের আদেশ দিয়েছেন।’

ডকুমেন্টারিতে যেসব জিহাদির সাক্ষাৎকার রাখা হয়েছে তারা আইএসের অধীনের জীবন-যাপনের প্রশংসা করেছেন। বলেছেন-‘এখানে শরিয়া প্রতিষ্ঠিত আছে। এখানে চোরদের হাত কেটে নেওয়া হয়। আমাদের ধর্ম এখানে নিরাপদ।’

২২ মিনিটের এই ভিডিওতে এক অপরিচিত জিহাদিকে দেখা গেছে। তাকে বলতে দেখা গেছে ‘তোমরা ইসলাম ধর্মকে গ্রহণ করো, জিজিয়া দাও, না হলে মৃত্যুর জন্যে তৈরি হও।’

এই ভিডিও প্রসঙ্গে এখনও কোনও সরকারি বিবৃতি দেয়নি ভারতীয় প্রশাসন। তবে মনে করা হচ্ছে ভারত থেকে আরও বেশি সংখ্যক তরুণকে আইএস-এ যোগদানের জন্য আকৃষ্ট করতেই এই পদক্ষেপ। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.