Sylhet Today 24 PRINT

রাত হলেই ওষুধ খাইয়ে দিতো বাবা, চলতো অত্যাচার!

সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক |  ০৭ জুন, ২০১৬

ঘটনার সূত্রপাত দিন বিশেক আগে। ছোটোবেলাতেই মাকে হারিয়েছিল রুশনি (ছদ্মনাম)। বাবা গাড়িচালক রঘু (ছদ্মনাম) ইদানিং খুব মারধর করতো তাকে। রাত হলেই অজানা একটা ওষুধ খাওয়াতো জোর করে। তাই ভয়ে কুঁকড়ে থাকতো সে। না খেলেই শুরু হত অত্যাচার। ওই ওষুধ খেলেই ঘুমে আচ্ছন্ন। ঘুম ভাঙলেই সারা শরীরে ব্যথা।


কিন্তু আর চুপ করে থাকতে পারেনি সে। কতোদিন আর মুখ বুজে সহ্য করবে? শিলিগুড়ির চম্পাসারিতে যে এলাকায় রুশনিরা ভাড়া থাকতো, সেখানকার এক প্রতিবেশিকে বলেছিল সব কথা। বিষয়টি পরে জানাজানি হতেই বাড়িতে পৌঁছায় শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানার পুলিশ। রঘুকে তুলে নিয়ে যায়। রুশনিকে মেডিকেল পরীক্ষা করানো হয়। যৌন নির্যাতনের প্রমাণও মেলে। কেউ না থাকায় সেফ হোমে পাঠানো হয় তাকে।

গত ১৪ বছর ধরে দেখে আসা পরিচিত পরিবেশটা এক মুহূর্তেই যেন বদলে গেছে তার জীবনে। এখন স্বস্তির ঠাঁই সেফ হোমের ছোট্ট ঘরটাই। রক্তের সম্পর্কের বাঁধন ছিঁড়ে এখন সেখানকার কর্মীরাই তার আপনজন। 

নিজেকে খানিকটা গুটিয়ে রুশনি বলছিল, ‘রোজ পায়ে হেঁটে স্কুলে যেতাম। স্কুলে অনেক বন্ধুরা ছিল। টিফিনের ঘণ্টা বাজলেই এক ছুটে বন্ধুরা মিলে মাঠে গিয়ে হইহই করতাম, গল্প হতো। আচ্ছা দিদি (পাশে থাকা হোমের এক কর্মী) এখন কি আর আমি স্কুলে যাবো?’ 

অভয় দিলেন সবাই। একজন বললেন, ‘আলবাত যাবে। কেন যাবে না? পড়তে হবে। বড় হতে হবে। সবাই পাশে আছি তোমার।’

চাইল্ড ইন নিড ইনস্টিটিউটের কো-অর্ডিনেটর সোনু ছেত্রী বললেন, ‘দিনের পর দিন নারকীয় অত্যাচারে ক্রমশ দেয়ালে পিঠ ঠেকেছিল ছোট্ট মেয়েটার। এখন আবার আত্মবিশ্বাস ফিরে পাচ্ছে সে, স্কুলেও যেতে চায়। আমরাও ওকে বলেছি নিশ্চয়ই স্কুলে যাবে। সে জানতে চেয়েছিল বাবার শাস্তি হবে তো?’

তিনি বলেন, ‘নিজের বাবার হাতে একমাত্র মেয়ের ধর্ষণের খবর পেয়ে চমকে উঠেছিলাম আমরা, কোনোভাবেই বিশ্বাস হয়নি। পরে যখন সব জানতে পারি, হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, নিকটাত্মীয় বলতে কেউ নেই ছোট্ট মেয়েটার।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.