Sylhet Today 24 PRINT

নেপালের প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি

নিউজ ডেস্ক |  ১১ জুলাই, ২০১৬

নেপালের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে প্রথম নারী সুশীলা কারকি। তিনি নেপালের সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি থেকে এই পদোন্নতি পেলেন। এই বিষয়ে নেপাল পার্লামেন্টারি হেয়ারিং স্পেশাল কমিটি সুপারিশ সত্যায়ন করে এবং রাষ্ট্রপতি তাকে এই পদে নিয়োগ দেন।

সুশীলা কারকির জন্ম ১৯৫২ সালের ৭ জুন এক কৃষক পরিবারে। নেপালের মরাং জেলার শংকরপুরের ৩ নং ওয়ার্ডের বিরাটনগরে। এখানেই কাটে তার শৈশব। এখানকার প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে তিনি প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। যদিও তার আদি নিবাস নেপালের কশি জোনের মধুমারার ১১ নং ওয়ার্ডের বিরাটনগরে। বর্তমানে বসবাস করছেন নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ধাপাসিতে। তার বাবা এক বাহাদুর থাপা এবং মা পদম কুমারী থাপা। সাত ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়।

তিনি ১৯৭২ সালে নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের মহেন্দ্র মোরাং কলেজ বিরাটনগর থেকে স্নাতক করেন। এরপর স্নাতকোত্তর করার জন্য চলে যান ভারতে। ভারতের বারানস হিন্দু ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেন। নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৮ সালে আইনে স্নাতক করেন।

তার আইনজীবী কাকা এবং ভাইদের আইন পেশায় দেখে তিনিও এই পেশার প্রতি অনুপ্রাণিত হন। অবৈধ শিশুর পিতৃত্ব নিরূপণ করা এবং পিতাকে সন্তানের ভরণ-পোষণের জন্য নিয়মিত অর্থ প্রদানের দায়িত্ব নির্ধারণ করে প্রদত্ত ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ বিষয়ক আইনজীবী হিসেবে ১৯৭৯ সালের ২৯ মার্চ নেপাল বার অ্যাসোসিয়েশন হতে আইনি পেশায় কাজ করার অনুমতি পান। পাশাপাশি তিনি নেপালের ধরনের মহেন্দ্র মাল্টিপল ক্যাম্পাসের সহকারী শিক্ষক হিসেবে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

সুশীলা কারকি ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি অনানুষ্ঠানিক বিচারপতি হিসেবে নেপাল সুপ্রিম কোর্টে যোগদান করেন। তিনি ২০১০ সালে ১৮ নভেম্বর স্থায়ীভাবে নেপাল সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ২০১৭ সালের ৬ জুন পর্যন্ত জুডিশিয়ারি প্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন।

এ ছাড়া তিনি নেপালের বার অ্যাসোসিয়েশনের ইস্টার্ন জোনাল কোর্টের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন ১৯৮৮ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত। পরপর দু’বার তিনি সারলাহির নেপাল ওমেন অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। আপিল কোর্ট বার বিরাটনগরের বার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন ২০০২ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত। তিনি নেপাল বার অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে ২০০৪ সালের ২০ ডিসেম্বর যোগদান করেন।

নেপালের জাজেস সোসাইটির সদস্য, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ওমেন জাজেসের সদস্য, ইন্টারন্যাশনাল গ্লো প্রোগামের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সুশীলা কারকি শুধু নেপালি ভাষাই নয়, ইংরেজি এবং হিন্দি ভাষায়ও পারদর্শী।

কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন মহেন্দ্র বিক্রম সমরক ট্রাস্ট অ্যাওয়ার্ড, সম্ভব কানুন পুরস্কার, নেপালি ভাষার লেখক হিসেবে ২০১১ সালে পেয়েছেন জেন্ডার ইক্যুয়ালিটি পুরস্কার।

বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডেও নিজেকে যুক্ত রেখেছেন। তিনি হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল নেপাল, নেপাল রেডক্রস সোসাইটির সদস্য হিসেবে কাজ করছেন।

সুশীলা কারকি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সেমিনারে অংশ নেন। এ সব সেমিনারের মধ্যে রয়েছে ভারতের নয়াদিল্লিতে সাউথ এশিয়া রিজিওনাল মির্টিং, চীনে অবজারভেশন ট্যুর অন ইউজ অব ইনফরমেশন টেকনোলজি ইন চাইনিজ জুডিশিয়ারি, ব্যাংককে জুডিশিয়াল ডায়ালগ অন এইচআইভি, হিউম্যান রাইট, টোকিওতে কেইস ম্যানেজমেন্ট, ভারতে সেকেন্ড এনুয়াল ওমেন অব জাস্টিস কনফারেন্স জেন্ডার বেইসড ভায়োলেন্স অ্যান্ড জাস্টিস ইন সাউথ এশিয়া ইত্যাদি।

তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মধ্যে আমেরিকা, ইউরোপ, শ্রীলংকা, জাপান, চীন, তানজানিয়া এবং নেদারল্যান্ড ভ্রমণ করেন। তার স্বামী দুর্গা প্রসাদ সুবেদী নেপালি কংগ্রেসের জনপ্রিয় যুব নেতা। তাদের এক ছেলে প্রশান্ত সুবেদী।

 

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.