ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক | ২৮ মার্চ, ২০১৫
দেশ ছেড়ে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে উঠেছেন ইয়েমেনের 'বিতাড়িত' প্রেসিডেন্ট আবদ্রাবু মনসুর হাদি। ইয়েমেনে হুথি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের নেতৃত্বে চলমান বিমান হামলার মধ্যে দেশ ছাড়লেন তিনি। খবর সূত্র : এএফপি, দ্য হিন্দু।
এদিকে বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত বেসামরিক ৩৯ ব্যক্তি নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সৌদি আরব বলেছে, বিজয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।
গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত রাজধানী সানাসহ ইয়েমেনের অধিকাংশ এলাকা দখলে নিয়েছে শিয়াপন্থী হুথি মিলিশিয়ারা। তাদের হাতে বেশ কয়েকদিন অবরুদ্ধ থাকার পর সানা থেকে বন্দর নগরী এডেনে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন পশ্চিমাপন্থী প্রেসিডেন্ট হাদি। কিন্তু ইরান-সমর্থিত হুথি মিলিশিয়ারা এডেনের দিকে অগ্রসর হলে গত বুধবার রাতে সৌদি আরবের নেতৃত্বে ইয়েমেনে বিমান হামলা শুরু হয়। সৌদি আরব জানায়, হাদি ও দেশটির বৈধ সরকারকে রক্ষায় তারা এ হামলা চালিয়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় হুথিদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিভিন্ন এলাকায় বিমান হামলা হয়েছে। সানা ছাড়াও উত্তরের আমরান ও পূর্বাঞ্চলের মারিব প্রদেশ এসব হামলার আওতায় ছিল। হামলায় এ পর্যন্ত ৩৯ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রাজধানী সানার পরিস্থিতি সম্পর্কে বিবিসি জানায়, বিমান হামলার ভয়ে অনেক পরিবার শহর ছেড়ে পালাচ্ছে। জ্বালানি তেলের সংকট তৈরি হবে- এ আশঙ্কায় গাড়ির দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে রাজধানীর পেট্রল পাম্পগুলোয়।
বিবিসি আরো জানায়, সানার অনেক বাসিন্দা বিমান হামলাকে নিজেদের মুক্তির উপায় হিসেবে দেখছে। অপরদিকে হুথি সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিমান হামলার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আদেল আল-জুবায়ের প্রথম দফার হামলাকে সফল বলে দাবি করেছেন। সঙ্গে বলেছেন, 'অভিযান কেবল শুরু। বিজয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তা চলবে।'
সৌদি আরবের নেতৃত্বে অভিযানে যোগ দিয়েছে জর্দান, মিসর ও সুদান। সৌদি আরব জানিয়েছে, অভিযানে তাদের দেড় লাখ সেনা ও ১০০টি যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া আরো ৮৫টি যুদ্ধবিমান সরবরাহ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন, কুয়েত, জর্দান, মরক্কো ও সুদান।
বুধবার থেকে প্রেসিডেন্ট হাদিকে নিয়ে কথা ওঠে, হুথিদের সম্ভাব্য হামলার মুখে তিনি দেশ ছেড়েছেন। তাঁর সহযোগীরা তাৎক্ষণিকভাবে তা অস্বীকার করেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সৌদি কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, হাদি এখন রিয়াদে অবস্থান করছেন।
সৌদি আরবের বিমান হামলাকে তাৎক্ষণিকভাবে 'বিপজ্জনক' বলে মন্তব্য করে ইরান। সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়েছে- এ হামলার ফলে ইয়েমেনের সহিংসতা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়বে। একই ধরনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে হুথি মিলিশিয়ারাও।
বৃহস্পতিবার আবদুল মালিক নামে তাদের এক নেতা সৌদি আরবকে 'নির্বোধ' ও 'শয়তান' হিসেবে আখ্যা দেন। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা হুথিবিরোধী অভিযানে সহযোগিতা করবে, তবে মার্কিন সেনারা সরাসরি যুদ্ধে জড়াবে না।