Sylhet Today 24 PRINT

সীমান্তে প্রস্তুত সেনারা, পাকিস্তানে হামলার কথা ভাবছে ভারত

সিলেটটুডে ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক |  ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরে সেনা দফতরে রোববারের সন্ত্রাসী হামলার পাল্টা আঘাত হিসেবে সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে হামলার বিষয়টি সরকারকে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সরকারি ও নিরাপত্তাসূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর জানিয়েছে।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ভিডিও প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে উদ্দেশে জানান, ভারত-পাক সীমান্ত রেখা জুড়ে এখন যা চলছে, তা সীমিত যুদ্ধেরই ক্ষুদ্র সংস্করণ। পুরো দেশ জুড়ে যা ছায়াযুদ্ধ আকারে সীমাবদ্ধ ছিল তা, এখন এক সম্মুখযুদ্ধের দিকে এগিয়ে চলেছে।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ডোভাল বলেন, কাশ্মীরে এ বার বরফ গলার পর থেকে পাকিস্তানি সেনা অন্তত ৪৫ বার সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করে হামলা করেছে। কখনও এ হামলা হয়েছে পুঞ্চে, কখনও বা উরি সেক্টরে। আর দক্ষিণ কাশ্মিরে পাকিস্তানি সহযোগিতা ও সমর্থনপুষ্ট জঙ্গিরা বহু এলাকার দখল নিয়েছে।

আরএসএস ও বিজেপির একটা বড় অংশ পাকিস্তানি সন্ত্রাস দমনে কঠোর পাল্টা আঘাতের নীতি অনুসরণ করতে চাইছে। উরির ঘটনায় তাদের অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়েছে। বিজেপি'র রাম মাধব বলেছেন, "একটা দাঁতের জবাবে গোটা চোয়ালটাই নিয়ে নিতে হবে।"

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, নরেন্দ্র মোদি নিজেও পাকিস্তানের সঙ্গে কঠোরতার পক্ষে। মন্ত্রিসভার বৈঠকেই এই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। মোদি সেনাবাহিনীকে আরও বেশি করে পাকিস্তান সীমান্তে প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। সেনাদের প্রস্তুতিও বাড়ানো হচ্ছে।

এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, "২৬/১১ থেকে পাঠানকোট হামলার পর এভাবে আর কতদিন আমরা পাল্টা আঘাত না করে বসে থাকব? আমার রক্ষণশীল ভূমিকার কারণে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও আইএসআই সুযোগ পাচ্ছে।"

সামরিক কর্মকর্তারা একাধিক সামরিক পদক্ষেপের কথা বিবেচনা করছেন। সেনা কর্মকর্তারা চান সরকার পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিক, এমন হামলা সহ্য করা হবে না। সেনা কর্মকর্তারা সীমান্ত অতিক্রম করে অভিযান কিংবা সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে স্পেশাল ফোর্সের অভিযানের পক্ষে মত দিয়েছেন। এছাড়া দূরপাল্লার অস্ত্র দিয়ে জঙ্গিদের স্থাপনায় হামলার কথাও বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন সেনা কর্মকর্তারা। এক্ষেত্রে সেনাবাহিনী মিসাইল হামলার কথা বিবেচনা করছেন। সার্জিক্যাল বিমানহামলার মাধ্যমে লেজার নিয়ন্ত্রিত স্মার্ট বোমা ও ক্লাস্টার বোমা নিক্ষেপের কথাও ভাবা হচ্ছে।

তবে মোদি মন্ত্রিসভা সতর্কতার সঙ্গে এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে চাইছে। কারণ, ভারত-পাকিস্তান উভয়েই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র। দ্বিতীয়ত, সংযত থাকার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক চাপও রয়েছে। বিশেষ করে আমেরিকা দু’দেশের রাজনৈতিক উত্তাপ কমানোর পক্ষে।

উল্লেখ্য, গতকাল রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ভারি অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত একদল সন্ত্রাসী কাশ্মিরের উরিতে লাইন অব কন্ট্রোলের নিকটে সামরিক বাহিনীর একটি প্রশাসনিক স্থাপনায় হামলা চালায়। ওই হামলায় ১৭ সেনা সদস্য ও ৪ হামলাকারী নিহত হন।

এখন পর্যন্ত কোনও সংগঠনের পক্ষ থেকে ওই হামলার দায় স্বীকার করা হয়নি। তবে হামলার জন্য পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জয়েশ-ই-মোহাম্মদকেই সন্দেহ করছে ভারত। এর আগে চলতি বছরের প্রথমদিকে পাঞ্জাবের পাঠানকোটে ভারতের বিমানঘাঁটিতে হামলার জন্যও ওই সশস্ত্র সংগঠনটিকে দায়ী করেছিল ভারত।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.