Sylhet Today 24 PRINT

স্তন্যপান করান কি না, বিমানবন্দরে পরীক্ষা দিলেন মা

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ০২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

জার্মানির বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা একজন নারী সন্তানকে স্তন্যপান করান কি না এই পরীক্ষা দিতে বাধ্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

গায়ত্রী বোস নামের এই নারী জার্মান পুলিশের কাছে এ বিষয়ে একটি অভিযোগও দায়ের করেছেন।

তিনি বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সামনে স্তন টিপে তাকে প্রমাণ করতে হয়েছে যে তিনি তার সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ান।

গায়ত্রী বোস বলেছেন, জার্মানিতে এরকম একটি ঘটনায় তিনি 'অপমানিত' বোধ করছেন। জানিয়েছেন, আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও তিনি বিবেচনা করছেন।

তিনি বলেন, ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দর দিয়ে তিনি তার শিশুকে ছাড়াই সফর করছিলেন। এসময় তার কাছে একটি ব্রেস্ট পাম্প দেখে কর্মকর্তারা তাকে সন্দেহ করেন।

জার্মান পুলিশ এই অভিযোগের ব্যাপারে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে বলেছে, এটি তাদের রুটিন কাজের কোন অংশ নয়।

'তোমার বাচ্চা কোথায়?'

সিঙ্গাপুরের নাগরিক গায়ত্রী বোস জানান, গত বৃহস্পতিবার তিনি প্যারিসে যাচ্ছিলেন। নিরাপত্তা বাহিনীর লোকেরা তখনই তাকে পরীক্ষা করে দেখার জন্যে থামায়।

তার হাত ব্যাগেই ছিলো একটি ব্রেস্ট পাম্প। সেটি এক্স-রে মেশিনের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে তাকে সেখান থেকে অন্য একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়।

"তাদের কণ্ঠে ছিলো অবিশ্বাসের সুর। তুমি দুধ খাওয়াচ্ছো? তাহলে তোমার বাচ্চা কোথায়? তোমার বাচ্চা সিঙ্গাপুরে থাকে?" বলেন তিনি।

তিনি জানান, অফিসাররা তার কথা কিছুতেই বিশ্বাস করছিলো না।

তখন তারা তার কাছ থেকে পাসপোর্ট নিয়ে নেন। তারপর একজন নারী পুলিশ অফিসার তাকে একটি ঘরে নিয়ে যান আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে।

গায়ত্রী বোস বলেন, ওই পুলিশ অফিসার তখন আমাকে বলেন আমি যে স্তন্যদাত্রী একজন মা সেটা প্রমাণ করে দেখাতে।

"তিনি আমাকে ব্লাউজ খুলে তাকে আমার স্তন দেখাতে বলেন। তারপর তিনি জানতে চান তুমি যদি বাচ্চাকে দুধ খাইয়ে থাকো তাহলে তোমার স্তনের সাথে কিছু লাগানো নেই কেন।"

"এবং আমি বলি, স্থায়ীভাবে লাগানোর মতো কোন জিনিস তো নেই। যখন দরকার হয় তখনই আমরা পাম্পটি ব্যবহার করি। তখন তিনি হাত দিয়ে আমাকে একটু করে দেখাতে বললেন।"

'আমি হতবাক'

গায়ত্রী বোস বলেন, এই ঘটনায় তিনি হতবাক হয়ে পড়েন। আমি তখন একা ছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না আমার কি হতে পারে। একসময় আমি কাঁদতে শুরু করি।"

তিনি জানান, পরীক্ষা করে দেখার পর কর্মকর্তারা তার পাসপোর্ট ফিরিয়ে দেন এবং তাকে বিমানে উঠার অনুমতি দেন।

গায়ত্রী বোস ওই মহিলা অফিসারের নাম জানতে চাইলে তিনি এক টুকরো কাগজে তার নামটা লিখে দেন।

গায়ত্রী বোস জানান 'অপমানজনক' এই পুরো পরীক্ষা শেষ হতে সময় লাগে ৪৫ মিনিট।

"যখন তারা আমাকে ছেড়ে দেয় তখন তাদেরকে আমি বলি নিরাপত্তা পরীক্ষার জন্যে এটা কোন উপায় হলো না। আমি তাদেরকে বলি, তোমার কী বুঝতে পারছো যে এইমাত্র তোমরা আমাকে কি করেছো? তোমরা আমাকে আমার স্তন দেখাতে বলেছো!"

তিন জানান, "অফিসার তখন বললেন, "পরীক্ষা শেষ। আপনি এখন যান। প্লিজ।"

"মনে হয়নি যে আমার প্রতি তার কোন ধরনের সহানুভূতি ছিলো।"

গায়ত্রী বোস একটি পরিবহন কোম্পানির ম্যানেজার। তার দুটো বাচ্চা।

'স্বাভাবিক ব্যবস্থা'

ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দরে জার্মান পুলিশের একজন মুখপাত্র ক্রিস্টিয়ান আলটেনহোফেন বলেছেন, তথ্যের গোপনীয়তার কারণে এবিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে পারবেন না।

তিনি বলেন, কোন যাত্রীর কাছে বিস্ফোরক রাখার সন্দেহ হলে তাকে ও তার লাগেজ পরীক্ষা করে দেখা অবশ্যই প্রয়োজন। তবে স্তন্যদাত্রী মায়ের ওপর এভাবে পরীক্ষা চালানোর কথা কোথাও বলা হয়নি।
      
সূত্র : বিবিসি বাংলা

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.