Sylhet Today 24 PRINT

‘আদভানি নয়, বাবরি মসজিদ ভেঙেছিলাম আমি’

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২২ এপ্রিল, ২০১৭

ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ভাঙা নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানি, মুরলিমনোহর যোশী ও উমা ভারতী বিরুদ্ধে মামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। তখন এ নিয়ে যখন বিজেপির অন্দরমহল আর রাজনীতির অঙ্গন উত্তপ্ত তখনি রামবিলাস বেদান্তি নামে বিজেপির এক নেতা ও সাবেক বিধায়ক বলছেন অন্য কথা! তাঁর দাবি, বাবরি মসজিদ ভাঙার নির্দেশ তিনিই দিয়েছিলেন, অন্য কেউ নয়।

শুক্রবার সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন বেদান্তি। তিনি বলেন, ‘এই ঘটনায় তাঁর (আদভানি) কোনো হাত নেই। আমিই এটা ভেঙেছিলাম এবং নিশ্চিত করেছিলাম যেন এটা ধূলিসাৎ হয়ে যায়।’

ষোড়শ শতকে নির্মিত বাবরি মসজিদ ভাঙার জন্য জনরোষ নিজেই ছড়িয়েছিলেন বলেও দাবি করেন বেদান্তি। ১৯৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের প্রতাপগড় থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন তিনি। খবর এনডিটিভির।

প্রয়াত অশোক সিংঘাল ও অবিদ্যানাথ নামে গোরাখনাথ মন্দিরের এক পুরোহিতকে সঙ্গে নিয়ে মসজিদ ভাঙতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কর্মীদের মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়েছিলেন বলে স্বীকার করেন বেদান্তি।

বাবরি মসজিদ ভাঙার মামলায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের তালিকায় আদভানি, যোশী, উমা ভারতী, বিনয় কাটিয়ারসহ ২১ জনের নাম রয়েছে। এই মামলা আগামী দুই বছরের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। এই মামলার শুনানি চলবে উত্তর প্রদেশের লক্ষ্ণৌর আদালতে।

১৯৯২ সালে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের ওপর কর সেবকদের হামলায় উসকানি এবং ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগ ওঠে বিজেপির এই নেতাদের বিরুদ্ধে। সেই সময় এই মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয় উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদ ও রায়বেরিলিতে। পরবর্তী সময়ে এই মামলার তদন্তে নামে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই।

তদন্ত শেষে সিবিআই জানায়, বাবরি মসজিদের কাছে এক জনসভায় দাঁড়িয়ে উসকানিমূলক বক্তৃতা দিয়েছিলেন বিজেপির নেতা-নেত্রীরা। তদন্ত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বাবরি মসজিদ ধ্বংস হঠাৎ ঘটে যাওয়া কোনো কাণ্ড নয়। রীতিমতো পরিকল্পনা করে এই কাণ্ড ঘটানো হয়েছিল।

সিবিআই প্রাথমিক প্রমাণ হিসেবে একটি গোপন বৈঠকের কথাও উল্লেখ করে। তবে ২০১০ সালে সিবিআইয়ের এই দাবি নাকচ করে দেয় এলাহাবাদ হাইকোর্ট। এর ফলে এই মামলা চলতে থাকে রায়বেরিলি আদালতে।

এদিকে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন জানায় সিবিআই। বুধবার সেই মামলার রায়ে ভারতের শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেন, বিজেপি নেতা আদভানি, যোশী, উমা ভারতী, বিনয় কাটিয়াসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক চক্রান্তে জড়িত থাকার অভিযোগে শুরু হবে বিচারপ্রক্রিয়া। এখন থেকে আদভানিদের বিরুদ্ধে এই মামলা চলবে লক্ষ্ণৌর আদালতে।

এই মামলা থেকে নিষ্কৃতি দেওয়া হয়েছে উত্তরপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা কল্যাণ সিংকে। বর্তমানে তিনি রাজস্থানের রাজ্যপাল। সে কারণে যত দিন তিনি রাজ্যপাল আছেন, তত দিন তাঁর বিরুদ্ধে বিচার বন্ধ থাকবে। তবে রাজ্যপালের পদ থেকে সরে গেলে কল্যাণ সিংয়ের বিরুদ্ধেও অভিযোগ গঠন হতে পারে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.