Sylhet Today 24 PRINT

শিশু পর্নোগ্রাফিকে পর্নো না বলে যৌন নিপীড়ন বলছে ইন্টারপোল

নিউজ ডেস্ক  |  ১১ মে, ২০১৫

কোনো শিশুর যে কোনো ধরনের যৌনচিত্রায়ন পর্নোগ্রাফি নয় বরং তা যৌন শোষণ-নিপিড়নের পর্যায়েই পড়ে- এমনটাই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল।

এ প্রসঙ্গে তাদের বক্তব্য- পর্নোগ্রাফি টার্মটি ব্যবহৃত হয় প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে। দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের সম্মতিতে তাদের যৌন ক্রীড়ার দৃশ্য স্থিরচিত্রে বা ভিডিওতে ধারণ করে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় তা ভোক্তাদের কাছে যৌন আনন্দদানের জন্য উপস্থাপন করা হলে সেটাকে বলা হয় পর্নোগ্রাফি।

অন্যদিকে, শিশুদের যৌনায়িত করে যে স্থিরচিত্র বা ভিডিও ধারণ করা হয় সেটা পর্নোগ্রাফি নয়। কারণ এতে যে শিশুটিকে সংশ্লিষ্ট করা হয় সে সচেতনভাবে সম্মতিদানে সক্ষম নয়। সে বরং অপরাধমুলক তৎপরতার শিকার।

ইন্টারপোল তাদের ওয়েবসাইটে শিশুদের যৌনায়িত করে তোলা স্থিরচিত্র বা ভিডিওকে শিশুদের ওপর যৌন নিপিড়নের দালিলিক সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। আর যেসব প্রাপ্তবয়স্ক এসব দেখে আনন্দ লাভ করেন তারা হয়তো শিশুটি নিপীড়িত হচ্ছে কি না সে বিষয়ে কোনো তোয়াক্কাই করেন না। অথবা এটা যে নিপিড়ন সেটাই হয়তো বিশ্বাস করেন না।

ইন্টারপোল জানিয়েছে, যে প্রাপ্তবয়স্করা শিশু পর্নোগ্রাফি দেখেন তারা এর প্রভাবে তাদের যৌনাকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করার জন্য কোনো শিশুর ওপরও যৌন সহিংসতা চালাতে পারেন।

এ কারণে অনলাইনে শিশু পর্নোগ্রাফির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাজ করতে গিয়ে ইন্টারপোল একে পর্নোগ্রাফি হিসেবে আখ্যায়িত করতেই অনিচ্ছুক। কারণ এতে শিশুদের ওপর যৌন নিপিড়নকে লোকের কাছে ‘গ্রহণযোগ্যতা’ ও ‘বৈধতা’ দেওয়া হয়।

এ কারণেই সম্প্রতি লন্ডনের ইমপেরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী নূর ফিতরি আজমির নগ্ন শিশুদের বা যৌন তৎপরতায় লিপ্ত শিশুদের যে ৩০ হাজার স্থিরচিত্রসহ আটক হয়েছেন সেগুলোকে শুধুমাত্র পর্নো হিসেবে আখ্যা করা যাবে না। আর নূর ফিতরিকে ‘ছেলেরা ছেলেদের মতোই আচরণ করবে’ এই গতানুগতিক ধারণার ওপর ভিত্তি করে রেহাইও দেওয়া যাবে না।

ইউনিসেফ এর মালয়েশিয়া শাখা নূর ফিতরির এই কাজকে ঘৃণ্য তৎপরতা ও বিশ্বব্যাপী শিশুদের ক্ষতিসাধন ও শোষণ-নিপীড়নের ওপর ভিত্তি করে যে হাজারকোটি টাকার অবৈধ ব্যবসা চলছে তার সহায়ক হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। কথিত আছে, প্রতি বছর হাজার হাজার সাইট ও অনলাইন অ্যাকাউন্টে লাখ লাখ শিশুর নগ্ন স্থিরচিত্র ও ভিডিও বিতরণ করে বছরে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের ব্যবসা হয়।

যৌন আনন্দ লাভের জন্য কোনো শিশুকে যৌন বস্তু হিসেবে দেখাটা স্বাভাবিক- এই দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে সবাইকে যার যার জায়গা থেকে লড়াই করার আহবানও জানিয়েছে ইউনিসেফ।

এদিকে ইন্টারনেট ও ডিজিটাল প্রযুক্তির আগমনের ফলে শিশু পর্নোগ্রাফি ব্যাপকহারে বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। কারণ এখন যে কেউ চাইলে নিজেই শিশু পর্নোগ্রাফি তৈরি করে ইন্টারনেটে আপলোড করে দিতে পারেন। এছাড়া যে কেউ যেকোনো স্থানে সংঘটিত শিশুর ওপর যৌন নিপীড়নের দৃশ্য ভিডিও করে সহজেই ইন্টারনেটে আপলোড করে দিতে পারেন। এমনকি শিশুরা নিজেরাও যৌন তৎপরতায় লিপ্ত হয়ে তা ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছাড়ছে!

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.