Sylhet Today 24 PRINT

আমাজনের জঙ্গলে প্রৌঢ় আদিবাসী যোদ্ধাকে নগ্ন হয়ে বিয়ে করলেন বাঙালি তরুণী

মিডিয়া বিশ্বে এখন তুলকালামের কেন্দ্রে এক বাঙালি তরুণী। পেশায় ডকুমেন্টারি নির্মেতা ব্রিটিশ নাগরিক সারা বেগম আমাজনের জঙ্গলে গিয়ে ছিলেন একটি তথ্যচিত্র বানাতে। সেখানে গিয়েই পাল্টে সারার জীবনটাই।

নিউজ ডেস্ক |  ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৪

Photo courtesy: MEDIA DRUM WORLD

মিডিয়া বিশ্বে এখন তুলকালামের কেন্দ্রে এক বাঙালি তরুণী। পেশায় ডকুমেন্টারি নির্মেতা ব্রিটিশ নাগরিক সারা বেগম আমাজনের জঙ্গলে গিয়ে ছিলেন একটি তথ্যচিত্র বানাতে। সেখানে গিয়েই পাল্টে সারার জীবনটাই। আমাজনের গভীর জঙ্গলে বয়সে অনেক বড় এক আদিবাসী নেতাকে বিয়ে করলেন তিনি। শুধু তাই নয় সেই আদিবাসী সমাজের রীতি অনুযায়ী সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে বিয়েতে অংশগ্রহণ করলেন। সেই বিয়ের ভিডিও প্রকাশ করেছেন সারা।

দু'সপ্তাহ আমাজনের হুয়ারোয়ানি আদিবাসীদের মধ্যে কাটিয়ে লন্ডনে ফিরে এসে সারা নিজের এই বিয়ের কথা ঘোষণা করলেন। সারার মতে তেল কোম্পানির মালিকরা কীভাবে আমাজনের জঙ্গল ধ্বংস করছে সেটা সামনে আনতেই তিনি এই লৌকিক বিয়েতে অংশগ্রহণ করেছেন। এই বিয়ের কোনও আইনি স্বীকৃতি নেই।

আমাজনের খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ এই অঞ্চলের আদিবাসীদের সঙ্গে বহির্জগতের সম্পর্ক কোনও দিনও ভাল ছিল না। ১৯৫০ সালে ৫ জন মিসনারিজ এই অঞ্চলে প্রবেশের চেষ্টা করলে আদিবাসীরা তাঁদের খুন করে। তবে সারা জানিয়েছেন তিনি যখন কাজ করতে গিয়েছিলেন, হুয়ারোয়ানিরা তাকে ভাল ভাবেই অভ্যর্থনা জানিয়ে ছিলেন।

হুয়ারোয়ানিদের কাছ থেকে ঘাসের মধ্যে ঢেউ তৈরি করতে শিখেছেন এই বঙ্গতনয়া। কাজের শেষে নিজের গিঙ্কটো নামের বছর ৫০-এর এক আদিবাসীকে বিয়ে করেন তিনি। গিঙ্কটো ওই গ্রামের ভাষা হুয়ারোয়ানি ছাড়া আর কোনও ভাষাতেই কথা বলতে পারেন না। জানেন শুধু একটা, দুটো স্প্যানিশ শব্দ।

২৬ বছরের সারার মতে তেল কোম্পানিগুলোর আগ্রাসনের আসল স্বরূপটা সামনে নিয়ে আসার জন্য এই বিয়ে তাঁর প্রতীকী প্রতিবাদ। এই বিয়ের কোনও আইনি বৈধতা নেই।  

তবে, এই বিয়ের আয়োজনের আগে ঘুণাক্ষরেও কিছু টের পাননি সারা।

তাঁর নিজের ভাষায় ''বয়স্ক কিছু মানুষ আমাকে নির্বাচিত করে একটি কুঁড়ে ঘরে ডেকে নিয়ে যান। আমি বুঝতেও পারিনি ওখানে ঠিক কী হতে চলেছে।''

সারা জানিয়েছেন কুঁড়ে ঘরের মধ্যে গিয়ে দেখেন সেখানে সবাই নগ্ন। হুয়ারোয়ানিরা সারাকে তাদের ট্র্যাডিশনাল পোশাক পড়তে বলে। তবে পোশাক বলতে গাছের বাকল দিয়ে তৈরি কব্জীতে পড়ার একটা সুতো।

সারা জানিয়েছেন ''এক সময় মনে হয়েছিল এভাবে ক্যামেরার সামনে আমি নগ্ন হতে পারবো না। একবার ভেবে ছিলাম পালাই। কিন্তু আমি ওদের রীতিনীতি সম্পূর্ণভাবে বুঝতে চেয়েছিলাম।''

সারার বয়ানে ''একজন মহিলা এসে আমার অন্তর্বাস খুলে দেন।'' এই বঙ্গতনয়া জানিয়েছেন প্রথমে চমকে গেলেও তিনি বুঝতে পেরে ছিলেন এই বিয়ে করা মানেই তাকে গিঙ্কটোর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে তা নয়। এই বিয়ে হুয়ারোয়ানিদের কাছে সম্মান প্রদর্শনের এক ধরণের প্রথা।  

সারা জানিয়েছেন তাঁর উদ্দেশ্য ছিল কীভাবে এই আদিবাসীরা বেঁচে আছেন সেটাই তিনি বহির্বিশ্বের মানুষের কাছে তুলে ধরতে চেয়ে ছিলেন তাঁর ডকুমেন্টারির মাধ্যমে। আর সেটা তিনি করেওছেন।

গত বছর কানে সারার ডকুমেন্টারি দেখানো হয়েছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.