Sylhet Today 24 PRINT

পানামা পেপারস: চাপ বাড়ছে মোদি সরকারের উপরেও

অনলাইন ডেস্ক |  ২৯ জুলাই, ২০১৭

পাকিস্তানে পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে নাম জড়িয়ে ক্ষমতা হারিয়েছেন নওয়াজ শরিফ। দাবি ওঠেছে, নরেন্দ্র মোদি পানামা নথিতে নাম থাকা ভারতীয়দের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা বিরোধীদের অভিযোগের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, ছত্তিসগড়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহের পুত্র, বিজেপি সাংসদ অভিষেক সিংহ থেকে নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি ও বিখ্যাত ব্যক্তিদের নাম ছিল পানামা নথিতে। যারা বিদেশের বিভিন্ন কর ফাঁকির স্বর্গরাজ্যে টাকা লগ্নি করেছেন।

কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘যে অভিযোগে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীকে ইস্তফা দিতে হয়েছে, একই কারণে ছত্তিসগড়ের মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা দেওয়া উচিত। একই সংস্থা থেকে ফাঁস হওয়া নথি, এক যাত্রায় পৃথক ফল কেন?’’

করের ক্ষেত্রে শিথিল নিয়মের জন্য ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস, বাহামার মতো দেশগুলি কালো টাকার ব্যবসায়ীদের কাছে আকর্ষণীয় গন্তব্য। কর ফাঁকির স্বর্গরাজ্যে লগ্নির একটি তালিকা পানামার আইনজীবী সংস্থা ‘মোজাক ফঁসেকা’-র দপ্তর থেকে ফাঁস হয়।

বিশ্বের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম একজোট হয়ে এর তদন্তে নেমেছিল। সেই তদন্তেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মতো ব্যক্তিদের নাম উঠে আসে। নথিতে ভারতেরও ৫০০ জনের নাম এসেছে।

অমিতাভ বচ্চন, ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন থেকে নরেন্দ্র মোদি-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শিল্পপতি গৌতম আদানির দাদা বিনোদ আদানির নামও ছিল।

নথি বলছে, রমন-পুত্র অভিষেক ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসের একটি সংস্থার মালিক।

সিঙ্ঘভির যুক্তি, ‘‘বিরোধীদের দুর্নীতি নিয়ে সরব হচ্ছেন মোদি। কিন্তু নিজেদের বেলায় চুপ।’’ বিজেপি নেতারা অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে বলছেন, রমন-অভিষেক অনেক আগেই বিদেশে কালো টাকা গচ্ছিত রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তা সত্ত্বেও বিরোধীদের কটাক্ষ, পানামা নথিতে ব্যক্তিরাই সরকারের ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুক্তি, পানামা নথি প্রকাশ্যে আসার পরেই প্রধানমন্ত্রী মোদির নির্দেশে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। তাতে রিজার্ভ ব্যাংক, আয়কর দপ্তর, আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা ও কেন্দ্রীয় প্রত্যক্ষ কর পর্ষদের অফিসাররা রয়েছেন। প্রতিটি নাম ধরে ধরে তদন্ত হচ্ছে। কিন্তু এটাও স্পষ্ট হওয়া দরকার, বিদেশে সংস্থা তৈরি করা শেয়ার কেনা মানেই বেআইনি কাজ নয়। রিজার্ভ ব্যাংকই বিদেশে সংস্থা গড়া, যৌথ উদ্যোগ শুরু করা বা শেয়ার কেনার অনুমতি দিয়েছে। তবে বিদেশে টাকা নেওয়ার ক্ষেত্রে বেআইনি পথ নেওয়া হয়েছে কি না বা বিদেশে লগ্নি থেকে আয়ের ক্ষেত্রে আইন ভাঙা হয়েছে কি না, তার তদন্ত হচ্ছে।

কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে সেই তদন্ত? অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্তারা বলছেন, অর্থমন্ত্রী জেটলি নিজেই সংসদে জানিয়েছেন, সুইজারল্যান্ডে এইচএসবিসির অ্যাকাউন্ট মালিকদের ফাঁস হওয়া তথ্যের তদন্তে ১৯ হাজার কোটি কালো টাকার সন্ধান মিলেছে।

আনন্দবাজার পত্রিকা আরও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমের তদন্তে পানামা নথি থেকে বিদেশে গচ্ছিত ১১,০১০ কোটি কালো টাকার সন্ধান মিলেছে। এ ছাড়া, ৮,৪৩৭ কোটি টাকার আয়ে কর বসানো হয়েছে। ১,২৮৭ কোটি টাকার জরিমানা আদায় হয়েছে।

বিরোধীদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে বা বিচার বিভাগীয় তদন্ত না হলে বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদি সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের গায়ে কোনও দিনই আঁচ আসবে না। সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে তদন্তের দাবিতে শীর্ষ আদালতে আর্জিও জানানো হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, সরকারের রিপোর্ট খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্ত হবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.