আন্তর্জাতিক ডেস্ক | ২৪ জুন, ২০১৮
আজ রোববার থেকে সৌদি আরবে নারীদের ওপর থেকে গাড়ি চালানোর নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। কার্যকর হচ্ছে সৌদি আরবের নতুন আইন। যাতে নারীরাও চালাতে পারবেন গাড়ি।
এতোদিন সৌদি আরবই ছিল বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে নারীরা গাড়ি চালাতে পারতেন না।
সৌদি আরবে গত বছরের সেপ্টেম্বরে এ-সংক্রান্ত ঘোষণা দেওয়া হয়। চলতি মাসের শুরু থেকেই নারীদের লাইসেন্স দেওয়া শুরু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আজ থেকে হাজার হাজার নারী সৌদির রাস্তায় গাড়ি চালাতে নামবেন। এ বিষয়ে সৌদি টিভি উপস্থাপক সাবিকা আল-দোসারি বলেন, ‘প্রত্যেক সৌদি নারীর জন্য এটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’
এদিকে, সৌদির মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, গাড়ি চালানোয় নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এরপরও নারীদের আটকে রাখার বিষয়টি লজ্জাজনক ও হৃদয়বিদারক।
শনিবার মধ্যরাতেই অনেক সৌদি নারী চালকের আসনে বসে গাড়ি চালিয়েছেন।
এই দিনটির জন্য নারী অধিকারকর্মীদের লড়তে হয়েছে প্রায় ৩০ বছর। তিন দশকের লড়াইয়ে অর্জিত এই অধিকার নারীর অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দেবে বলে মনে করেন দেশটির প্রতিষ্ঠিত নারীরা।
২৩ বছরের মাজদুলিন আল-আতিক জীবনে প্রথমবারের মতো তাঁর কালো রঙের লেক্সাস নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন রাজধানী রিয়াদের রাস্তায়। বাঁধভাঙা আনন্দ ভাসছিলেন তিনি। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘এ এক অদ্ভুত অনুভূতি। আমি খুব খুশি...এখন এই মুহূর্তে গাড়ি চালাতে পারে নিজেকে খুব গর্বিত মনে হচ্ছে।’
গতকাল মধ্যরাতে নারীরা পূর্বাঞ্চলীয় শহর খোবারের প্রধান সড়কে চালকের আসনে বসে গাড়ি হাঁকিয়ে বেড়িয়েছেন। প্রথম দিকে যেসব নারী ড্রাইভিংয়ের লাইসেন্স পেয়েছেন, তাঁদের একজন জেদ্দার ৪৭ বছর বয়সী মনোবিজ্ঞানী সামিরা আল-ঘামদি।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রস্তুত। এটি আমাদের জীবনকে পাল্টে দেবে।’
এদিকে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নারী ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে কবে নাগাদ হবে তা নিশ্চিত নয়।
অনেকে আবার এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর কী পরিস্থিতি দাঁড়ায়, তা দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন।
এই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার কারণে সৌদি পরিবারগুলোর এখন বেতনভোগী চালকের পেছনে শত শত ডলার খরচ করতে হবে না। নারীরা এখন আরও কর্মমুখী হবেন। ফলে দেশের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে।