Sylhet Today 24 PRINT

মোদি হত্যার ষড়যন্ত্র: ভারতজুড়ে ব্যাপক ধরপাকড়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক |  ২৯ আগস্ট, ২০১৮

ভারতের পুলিশ মঙ্গলবার বিভিন্ন রাজ্যে বামপন্থী লেখক, বুদ্ধিজীবী ও মানবাধিকার কর্মীদের বাড়ি বাড়ি হানা দিয়ে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ বলেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হত্যার এক বামপন্থী ষড়যন্ত্রের সঙ্গে এদের যোগসাজশ পাওয়া গেছে। দিল্লি, মুম্বাই, হায়দ্রাবাদ, রাঁচি থেকে শুরু করে আরো অনেক জায়গায় এই পুলিশি অভিযান চলে।

পুলিশ সূত্রগুলি নিশ্চিত করেছে, মাওবাদীদের সমব্যথী বলে পরিচিত কবি ভারভারা রাওকে হায়দ্রাবাদ থেকে এবং শীর্ষ মানবাধিকার সংগঠন পিপলস ইউনিয়ন অফ সিভিল লিবার্টিজ বা পিইউসিএলের প্রধান সুধা ভরদ্বাজকে ফরিদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এছাড়াও প্রাবন্ধিক ও মানবাধিকার কর্মী গৌতম নওলাখাকে দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অরুণ ফেরেরা ও ভেনন গঞ্জালভেজকে মহারাষ্ট্রের থানে ও মুম্বাই থেকে আটক করা হয়েছে।

গত বছর ৩১ ডিসেম্বর মহারাষ্ট্রের ভীমা কোরেগাঁওতে প্রায় তিন লাখ  দলিত মানুষ জড়ো হয়েছিলেন মারাঠা পেশোয়াদের বিরুদ্ধে তাদের বিজয়ের ২০০ বছর উদযাপন করতে। দলিতরা ভীমা কোরেগাঁওয়ের সেই যুদ্ধে ব্রিটিশদের পক্ষে লড়াই করেছিল।

দক্ষিণপন্থী কিছু সংগঠন ওই উদযাপনের বিরোধিতা করায় অশান্তি শুরু হয়, যা পরে হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। পরবর্তী তিনদিন ধরে নানা শহরে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে এবং অন্তত একজন নিহত হন।

সংশ্লিষ্টরা বলছে, ওই ঘটনার তদন্তের সূত্রে এর আগে কয়েকজন সামাজিক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের কাছ থেকেই যেসব ব্যক্তির নাম পাওয়া গিয়েছিল, তাদের বাড়িতেই আজ তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। সকাল থেকে তল্লাশি শুরু হওয়ার পরে থেকেই মানবাধিকার কর্মীরা ওইসব ব্যক্তিদের বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে গিয়েছিলেন।

ভারতে মাওবাদীদের যেভাবে নিরাপত্তা বাহিনী দমন করছে, তার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন বামপন্থী লেখক-বুদ্ধিজীবীরা দেশজুড়ে এই তল্লাশি অভিযান আর গ্রেপ্তারের তীব্র সমালোচনা করেছেন ভারতের নামকরা মানবাধিকার কর্মী এবং লেখক-বুদ্ধিজীবীরা।

লেখিকা অরুন্ধতী রায় জানিয়েছেন, ‘জনসমক্ষে যারা মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করছে, তাদের না ধরে উকিল, কবি, লেখক আর মানবাধিকার কর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে’।

‘এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে ভারত কোন দিকে চলেছে। হত্যাকারীদের সম্মানিত করা হবে আর ন্যায়বিচার এবং হিন্দু আধিপত্যের বিরুদ্ধে যারা মুখ খুলবেন, তাদের অপরাধী সাজানো হবে

এটা কি আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হল?’

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ভারতে এসব গ্রেপ্তারের ঘটনা উদ্বেগজনক এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে সরকার এই কাজ করছে কিনা সে প্রশ্ন উঠেছে।

অ্যামনেস্টি বলেছে, ‘ভারতে আইনজীবী, সাংবাদিক, অধিকার কর্মী এবং মানবাধিকারের রক্ষকদের বিরুদ্ধে এক বিরাট দমন অভিযান শুরু হয়েছে। একটি ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টির পরিবর্তে সরকারের উচিৎ মানুষের মতপ্রকাশের অধিকার এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশের অধিকার রক্ষা করা’।

নামকরা ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ টুইটারে এই গ্রেপ্তার অভিযানের নিন্দা করে বলেছেন, ‘এটি খুবই উদ্বেগজনক। দেশের স্বাধীন কণ্ঠগুলো রুদ্ধ করার এই অভিযান বন্ধ করতে সুপ্রিম কোর্টের এখনই হস্তক্ষেপ করা উচিৎ’।

তথ্যসূত্র : বিবিসি, আনন্দবাজার।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.