Sylhet Today 24 PRINT

ইন্দোনেশিয়ায় সুনামিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক |  ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৮

ইন্দোনেশিয়ার জাভা ও সুমাত্রার মধ্যবর্তী সুন্দা স্ট্রেট উপকূলে সুনামির আঘাতে মৃত মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৮-তে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৭৪৫ জন।

এর আগে সকালে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা হতাহত মানুষের সংখ্যা জানাতে গিয়ে তা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল। ওই সময় মৃত মানুষের সংখ্যা ছিল ৬২।

শনিবার রাতে সুনামির আঘাতে শত শত বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সমুদ্রের তলদেশে ভূমিধসের কারণে সুনামি ঘটে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিবিসি অনলাইন ইন্দোনেশিয়ার সরকারি তথ্যের বরাত দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে।

দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, দুজন নিখোঁজ রয়েছেন। প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে প্যানদেগ্ল্যাং, দক্ষিণ লাম্পাং ও সেরাং এলাকায়।

জাভা ও সুমাত্রা দ্বীপের মধ্যবর্তী সুন্দা স্ট্রেট জাভা সাগরকে ভারত মহাসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।

মৃত মানুষের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা। পূর্ণিমার কারণে সাগর আরও ফুঁসে উঠতে পারে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

সংস্থার মুখপাত্র সুতোপো পুরও নুগ্রহ সুনামির আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা, ভেসে যাওয়া সড়ক, গাড়ির ছবি পোস্ট করেছেন টুইটারে।

প্রত্যক্ষদর্শী নরওয়ের আগ্নেয়গিরিবিষয়ক আলোকচিত্রী ওয়েস্টিন লান্ড অ্যান্ডারসন বিবিসি ওয়ার্ল্ডকে জানান, সুনামির সময় পশ্চিম জাভার আনিয়ার সৈকতে ছিলেন তিনি।

ওয়েস্টিন বলেন, ‘আমি সৈকতে একা ছিলাম। আমার পরিবারের লোকজন হোটেলের কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। আমি ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের দৃশ্য তোলার চেষ্টা করছিলাম। এর আগের দিন সন্ধ্যায় ভারী অগ্ন্যুৎপাত হচ্ছিল।’

তিনি জানান, ঘটনার সময় বড় ঢেউয়ের আঘাতে অগ্ন্যুৎপাত বন্ধ হয়ে যায়, চারপাশ অন্ধকার হয়ে যায়। হঠাৎ তিনি দেখতে পান বড় ঢেউ তেড়ে আসছে। তিনি দৌড়ে পালান। শুধু দুটো ঢেউ আসে। প্রথম ঢেউটি শক্তিশালী না হওয়ায় তিনি পালিয়ে হোটেল কক্ষে চলে আসতে পারেন। শক্তিশালী দ্বিতীয় ঢেউটি হোটেলের ওপর দিয়ে উঠে যায়। রাস্তায় থাকা গাড়িগুলোকে ভাসিয়ে নেয়। তিনি আরও জানান, হোটেলের সবাই পাশের বনে আশ্রয় নেন। এখনো তারা সেখানে পাহাড়ের ওপরে অবস্থান করছেন।

এর আগে সেপ্টেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে শক্তিশালী ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে দুই হাজারের বেশি মানুষ মারা যান।

আগ্নেয়দ্বীপ ক্রাকাতোয়ায় ১৮৮৩ সালে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাতে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। ওই সময়ও ১৩৫ ফুট উঁচু ঢেউ নিয়ে সৈকতে আঘাত হানে সুনামি, প্রায় ৩০ হাজার মানুষ সে সময় সাগরে ভেসে যায়।

দীর্ঘদিন সুপ্ত থাকার পর সাম্প্রতিক সময়ে ক্রাকাতোয়া আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে। গত শুক্রবার ওই আগ্নেয়গিরি থেকে প্রায় সোয়া দুই মিনিট উদগীরণ হয়। এর ফলে পর্বতের ১৩০০ ফুট উঁচু পর্যন্ত ছাইয়ের মেঘ ছড়িয়ে পড়ে।

২০০৪ সালে সুমাত্রা দ্বীপে শক্তিশালী ভূমিকম্প ও সুনামিতে ভারত মহাসাগরের উপকূলজুড়ে ১৪টি দেশের দুই লাখ ২৬ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.