Sylhet Today 24 PRINT

গুলির শব্দকে প্রথমে বৈদ্যুতিক শক ভেবেছিলেন মসজিদে অবস্থানকারীরা

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১৫ মার্চ, ২০১৯

নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুইটি মসজিদে হামলার ভয়াবহতা উঠে এসেছে প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায়। শুক্রবার ডিনস এভিনিউয়ের আল নুর মসজিদে কয়েক শো মানুষ সমবেত হয়েছিলেন জুমার নামাদ আদায়ে। একইভাবে লিনউড মসজিদেও সমবেত হয়েছিল মুসল্লীরা। আল নুর ও লিনউড মসজিদের ভেতরে ও বাইরে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীরা সেখানকার ভয়াবহ পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছেন।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৫ মার্চ) দুপুরে নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুইটি মসজিদে বন্দুকধারীর হামলা হয়। শহরের হাগলি পার্কমুখী সড়ক ডিনস এভিনিউতে আল নুর মসজিদ এবং লিনউডের আরেকটি মসজিদের কাছ থেকে গুলির শব্দ শোনা যায়। হামলায় ৪০ জনের প্রাণহানির কথা নিশ্চিত করেছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন।

হামলার সময় আল নুর মসজিদ থেকে পালিয়ে আসা এক প্রত্যক্ষদর্শী সেখানকার সংবাদপত্র ক্রাইস্টচার্চ প্রেসকে বলেছেন, তার স্ত্রী মারা গেছেন। আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, তার ওপরেও মৃতদেহ এসে পড়ে। নিউ জিল্যান্ডের ফেডারেশন অব ইসলামিক ফেডারেশনের প্রধান ড. মুস্তফা ফারুক রেডিও নিউ জিল্যান্ডকে জানিয়েছেন, শুক্রবার আল নুর মসজিদের ভেতরে বাইরে নামাজের জন্য ৩০০ থেকে ৫০০ মানুষ জড়ো হতেন।

এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, সামরিক কায়দার জ্যাকেট ও হেলমেট পরিহিত হামলাকারী বন্দুক নিয়ে হামলা চালায়। তিনি বলেন, হামলাকারীর কাছে বড় একটি বন্দুক ও প্রচুর গুলি ছিলো। সে ঢুকে পড়ে আর মসজিদের ভিতরে থাকা প্রত্যেককে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে শুরু করে। যেদিকে ইচ্ছা সেদিকেই গুলি ছুড়ছিলো সে। আর তারা দরজা ও জানালার কাঁচ ভেঙে ফেলে বাইরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন।

মোহাম্মদ ইব্রাহিম নামে এক ব্যক্তি নিউ জিল্যান্ড হেরাল্ডকে জানান, গুলি শুরুর সময়ে তিনি আল নুর মসজিদের ভেতরেই ছিলেন। তিনি জানান, প্রথমে তারা ভেবেছিলেন বৈদ্যুতিক শক লেগেছে কিন্তু তারপরই মানুষ দৌড়াতে শুরু করে। তিনি বলেন, ভেতরে এখনও আমার বন্ধুরা রয়ে গেছে। আমি তাদেরকে ডেকে যাচ্ছি কিন্তু তারা আমার কথা শুনতে পারছে না। তাদের জীবন নিয়ে আমি শঙ্কায় রয়েছি।

বেঞ্জামিন জেলি সংবাদপত্রটিকে বলেছেন, অন্তত তিন দফায় গুলি ছোড়ার শব্দ শুনেছেন তিনি। আর তারপরই মসজিদের পেছনের দেয়াল দিয়ে মানুষ লাফিয়ে পড়তে দেখেছেন। তিনি বলেন, দেয়াল থেকে লাফিয়ে পড়া সবাই প্রাপ্ত বয়স্ক ছিলেন আর তাদের মধ্যে অন্তত তিন জন কাঁদছিলো আর চিৎকার করছিলো।

লেন পানাহ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানকে বলেছিলেন, কালো কাপড় পরা এক ব্যক্তিকে মসজিদে ঢুকে অসংখ্য গুলি ছুঁড়তে দেখেছেন। এরপরই সেখান থেকে মানুষ পালাতে শুরু করে। পরে তিনি ঘটনাস্থলে ঢুকে সর্বত্র মানুষের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন বলে জানান।

দ্বিতীয় গোলাগুলির ঘটনা ঘটে লিনউড মসজিদে। ওই ঘটনা প্রসঙ্গে সায়িদ আহমেদ ক্রাইস্টার্চ প্রেসকে জানান, ছদ্মবেশ ধারণকারী এক হামলাকারী মোটরসাইকেল হেলমেট পরে মসজিদে ঢুকে হামলা শুরু করে। তিনি হামলাকারীকে চিৎকার করতে শুনেছেন  তবে তিনি কি বলেছেন তার অর্থ বুঝতে পারেননি বলে জানান। তিনি জানান প্রথমেই তেনি চেয়ারে বষে থাকা বয়স্কদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। পরে সবাইকেই লক্ষ্যবস্তু বানান বলে জানান তিনি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.