Sylhet Today 24 PRINT

যুক্তরাষ্ট্রে দুর্বৃত্তের গুলিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক |  ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

যুক্তরাষ্ট্রে এক বাংলাদেশি মেধাবী শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

শনিবার স্থানীয় সময় সকালে লুইজিয়ানার ব্যাটন রাউজ এলাকায় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

নিহত মো. ফিরোজ-উল-আমিন (২৯) লুইজিয়ানা স্টেস্ট ইউনিভার্সিটিতে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পিএইচডি করছিলেন। তার বিশেষায়িত সাবজেক্ট ছিল সাইবার সিকিউরিটি। এ বিষয়ের খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তৃতীয় গোল্ডেন জি রিচার্ড-এর অধীনে পিএইচডি করছিলেন তিনি।

বাংলাদেশে থাকাকালে তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিএসইতে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

পুলিশ জানায়, স্থানীয় একটি গ্যাস স্টেশনে ক্লার্ক হিসেবে কাজ করতেন মো. ফিরোজ-উল-আমিন। শনিবার সকালে সেখানে এক ডাকাতি সংঘঠিত হয়। এ সময় গ্যাস স্টেশনটিতে কর্মরত ফিরোজকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

তার পিএইচডি অধ্যাপক তৃতীয় গোল্ডেন জি রিচার্ড জানান, সে খুবই ভালো ছাত্র ছিল। খুব বন্ধুত্বপূর্ণ এবং দুর্দান্ত মানুষ ছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, সকালে ডাকাতির উদ্দেশ্যে এক ব্যক্তি যখন গ্যাস স্টেশনটিতে প্রবেশ করে তখন সেখানে একমাত্র কর্মরত ব্যক্তি ছিলেন ফিরোজ-উল-আমিন। ডাকাতির আগে সে ফিরোজকে গুলি করে হত্যা করে।

অধ্যাপক তৃতীয় গোল্ডেন জি রিচার্ড বলেন, এটি খুবই বিপদজনক ঘটনা। সে এখানে কাজ করতো এটি আমার জানা ছিল না।

তিনি জানান, বিয়ের জন্য আসন্ন শীতে বাংলাদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল ফিরোজের। বিয়ের পর স্ত্রীকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ারও পরিকল্পনা ছিল তার।

ফিারোজের বন্ধুদের একজন মধুপর্ণা মান্না বলেন, গত বছরই বাবাকে হারিয়েছে ফিরোজ। একমাত্র পুত্রসন্তান হিসেবে পরিবারের দেখাশোনার দায়িত্ব ছিল তার ওপর। বুঝতেই পারছেন, তারা বিধ্বস্ত অবস্থায় রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের তার শিক্ষক ও বন্ধুরা ফিরোজকে প্রচণ্ড মেধাবী ও চমৎকার একজন মানুষ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অধ্যাপক তৃতীয় গোল্ডেন জি রিচার্ড বলেন, সে ছিল আমার সবচেয়ে ভালো ছাত্র। এমনকি অন্যান্য অনুষদের যেসব শিক্ষক তার সাথে কথা বলেছে, তারাও তার দ্বারা অত্যন্ত প্রভাবিত হয়েছিল।

ফিরোজের মর্মান্তিক মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন লুইজিয়ানা স্টেস্ট ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট এফ. কিং আলেক্সান্ডার। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, পিএইচডি শিক্ষার্থী মো. ফিরোজ-উল-আমিন-এর মর্মান্তিক মৃত্যুতে পুরো লুইজিয়ানা স্টেস্ট ইউনিভার্সিটি শোকাহত। সে ছিল অবিশ্বাস্য রকমের একজন মেধাবী ছাত্র ও গবেষক, যার একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ ছিল।

মো. ফিরোজকে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিচিং অ্যাসিট্যান্টশিপের জন্যও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। শিগগিরই তিনি এ দায়িত্ব নেবেন বলে প্রতীয়মান হচ্ছিল।

নিহতের বন্ধু মধুপর্ণা বলেন, কালও তার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। সে তার মাকেও যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ে আসার কথা বলছিল।

মধুপর্ণা বলেন, ফিরোজ ছিল একটা রত্ন। তার চলে যাওয়া আমাদের জন্য এক বিশাল আঘাত।

তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সোমবার নাগাদ মরদেহ হস্তান্তর করা হতে পারে। স্থানীয় মসজিদে জানাজা শেষ তার মরদেহ বাংলাদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে নিহতের বন্ধুরা। এজন্য তহবিল সংগ্রহে ‘গো ফান্ড মি’তে একটি পেজ খোলারও পরিকল্পনার করছেন তারা।

ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাস জানিয়েছে, তারা এ বিষয়ে অবগত রয়েছে। দূতাবাসের মুখপাত্র শামিম আহমেদ বলেন, আমরা তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.