Sylhet Today 24 PRINT

পঙ্গপাল মধ্যপ্রাচ্যের জনপ্রিয় খাবার, প্রতি ব্যাগের মূল্য ১৬ মার্কিন ডলার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক |  ০৩ মে, ২০২০

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর এই মুহূর্তে বিশ্বের অনেকে দেশে চলছে পঙ্গপাল আতঙ্ক। ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল এখন এসব দেশের কৃষকদের ঘুম হারাম করে ফেলেছে।

তবে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক বাসিন্দার কাছেই জিংক ও প্রোটিন সমৃদ্ধ পঙ্গপাল অত্যন্ত সুস্বাদু খাবার। অনেকে আবার সংকটের আশঙ্কায় পরবর্তী বছরের জন্য প্রক্রিয়াজাত করে মজুদও করে রাখেন ছোট শিংয়ের বিশেষ এই প্রজাতিটিকে।

স্থানীয়দের বিশ্বাস পঙ্গপালের কিছু ওষুধি গুণ আছে। কিছু রোগের চিকিৎসায় তারা পঙ্গপাল ব্যবহার করেন।

পঙ্গপালের একটি জনপ্রিয় ডিশ হচ্ছে বাদাম হিসেবে খাওয়া। প্রথমে এগুলো পানিতে সিদ্ধ করা হয়। পরে মচমচে হওয়ার আগ পর্যন্ত কয়েক দিন রোদে শুকানো হয়। এরপর পরিবেশন করা হয় লবণ দিয়ে। কেউ কেউ আগুনে পুড়িয়েও অনেকটা কাবাবের মতো করে খান পঙ্গপাল।

তবে কুয়েতে বাদামের মতো করে খাওয়ার ধরণটি বেশ জনপ্রিয়।

স্থানীয় সাংবাদিক মৌদি আল মিফতাহ বলেন, ‘এদের ঘ্রাণটা আমার পছন্দ। এটা আমার শৈশবের স্মৃতিগুলোর একটি এবং আমরা দাদা ও বাবার কথা মনে করিয়ে দেয়।’

প্রতি বছর শীতে মিফতাহ পঙ্গপালের জন্য অপেক্ষা করেন। নিজের হাতেই তিনি এটি রান্না করেন।

বিজ্ঞাপন



প্রতি বছর জানুয়ারিতে সৌদি আরব থেকে পঙ্গপালের প্রথম চালানটি আসে কুয়েতে। প্রতিটি লাল ব্যাগে ২৫০ গ্রাম করে পঙ্গপাল থাকে।

৬৩ বছরের আবু মোহাম্মদ কুয়েত সিটির আল-রাই বাজারে মাছ বিক্রি করেন। তবে শীত মৌসুমে তিনি বদলে ফেলেন পেশা। এ সময় তিনি পঙ্গপাল বিক্রি করেন।

আবু মোহাম্মদ বলেন, ‘শীতের রাতে পঙ্গপাল ধরা হয় (ওই সময় এরা উড়তে পারে না) এবং আমরা সৌদি আরব থেকে এগুলো আমদানি করি।’

তিনি জানান, এর স্বাদ অনেকটি চিংড়ির মতো। এর মাংস বেশ সুস্বাদু, বিশেষ করে ডিমওয়ালা পঙ্গপালের স্বাদ অসাধারণ।

কুয়েতে বড় আকারের নারী পঙ্গপালকে বলা হয় ‘আল-মিকন’। আর পুরুষগুলোকে বলা হয় ‘আসফুর’। মৌসুমে প্রতিদিন অন্তত ১২ ব্যাগ পঙ্গপাল বিক্রি করেন আবু মোহাম্মদ । আকার ও ওজন বুঝে প্রতি ব্যাগের দাম পড়ে ৮ ও ১৬  মার্কিন ডলার।

আবু মোহাম্মদ বলেন, ‘আমি জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৫০০ ব্যাগ পঙ্গপাল বিক্রি করি।’

সৌদি সংবাদমাধ্যম আল ওয়াতান জানিয়েছে, স্থানীয় বাজার আল-আহসাতে আকার ও ওজন বুঝে প্রতি ব্যাগ পঙ্গপাল বিক্রি হয় ২৫০ থেকে ৪০০ সৌদি রিয়ালে। বিক্রি নিষেধাজ্ঞার কারণে আল হফুফ এলাকায় গোপনে বিক্রি হয় এগুলো। বিক্রেতারা গাড়ির ভেতরে লাল ব্যাগে লুকিয়ে রাখেন পঙ্গপাল। আগ্রহী ক্রেতারাই খুঁজে বের করেন এর বিক্রেতাদের।

তারিজি নামে এক বিক্রেতা বলেন, ‘অনেকে পরবর্তী বছরের জন্য পঙ্গপাল কিনে মজুদ করে রাখেন। কারণ তাদের আশঙ্কা হয়তো পরবর্তী মৌসুমে মিলবে না এটি।’

ইয়েমেনেও বিক্রি হয় পঙ্গপাল। রাজধানী সানার পুরনো অংশে বৃদ্ধ পুরুষ ও নারীদের রাস্তার পাশে পঙ্গপাল বিক্রি করতে দেখা যায়। কেউ বোতলে ভরে নিয়ে আসেন, কেউ ব্যাগে করে।

৩৫ বছরের ওয়াদি আল নাওদাহ বলেন, ‘এটা সুস্বাদু। আপনি যদি একটি পঙ্গপাল খান, তাহলে পাঁচটি শেষ করার আগে থামমেন না। আমি প্রতিদিন নাস্তার পর রাতের খাবারের জন্য পঙ্গপাল খুঁজতে বের হই। আমি এতে আসক্ত হয়ে পড়েছি।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.