Sylhet Today 24 PRINT

সাকা’র সাক্ষী পাকিস্তানি : রিভিউয়ে সাক্ষ্য’র সুযোগ নাই

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২৪ অক্টোবর, ২০১৫

মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত সালাউদিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে পাঁচ পাকিস্তানি নাগরিকের সাক্ষ্য দেওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশের আইনে গ্রহণযোগ্য নয় এবং রিভিউয়ের সময় সাক্ষী দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন দেশের আইন বিশেষজ্ঞরা।

এছাড়া সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান কোনো উদ্দেশ্যমূলক এজেন্ডা বাস্তবায়নে বিদেশী গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন বলেও জানান তারা।

আল জাজিরায় প্রকাশিত সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান'র প্রতিবেদনের বিষয়ে ইতিহাসবিদ ও দেশের সিনিয়র আইনজীবীগণ বলছেন, ট্রাইব্যুনালের বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য জামায়াতে ইসলামী এবং সাকা চৌধুরীর পরিবার অর্থের বিনিময়ে এসব করাচ্ছেন। বার্গম্যান কীভাবে এমন দুঃসাহস দেখাচ্ছেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা। ট্রাইব্যুনালের বিচার ব্যবস্থা সারা পৃথিবীতে প্রশংসা পাচ্ছে বলেও দাবি করেন তারা।

ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসির মামুন বলেন, আসলে চুড়ান্ত রায়ের আগে এমন কথা বলে তারা সময় নষ্ট করতে চাইছে। কারণ আইনে রিভিওয়ের সময় সাক্ষী গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই।

বিষয়টি নিয়ে আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জিয়াদ আল মালুম বলেন, এটা অপপ্রচার এবং তারা আইনগতভাবে মিথ্যা বলেছে। বিচারিক কার্যক্রমের এই পর্যায়ে এসে আসামী বা বাদি পক্ষের কোনো কিছু নেওয়া-দেওয়ার সুযোগ নেই। পৃথিবীর কোনো আদালতেই সবোচ্চ আদালতের রায় দেওয়ার পর রিভিউয়ে কোনো সাক্ষী দেওয়ার সুযোগ নেই। তারা শিক্ষিত লোক তাদের এ বিষয়টি তাদের অজানা থাকার কথা নয়।

আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অপর প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ বলেন, ট্রায়াল শুরু হলে নিয়ম অনুযায়ী অভিযোগ গঠনের সময় তালিকা অনুযায়ী সাক্ষী আনার সুযোগ থাকে। ওনারা ৫ জন সাক্ষী আনার কথা থাকলেও তারা দিয়েছে ৪ জন। এখন হঠাৎ করে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করে নতুন এজেন্ডা দাঁড় করার চেষ্টা করছে তারা।

এর আগে সাকা চৌধুরীর পক্ষে এক হাজার ১৫৩ জন সাক্ষীর তালিকা দেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে পাঁচজনকে বাছাই করা হয়। এর মধ্যে একজন সাকা চৌধুরী নিজে। তবে ওই এক হাজার ১৫৩ জনের মধ্যে পাকিস্তানি ৪ সাক্ষির নাম প্রস্তাব করা হয়েছিলো বলে জানিয়েছেন সাকা চৌধুরীর আইনজীবী হুজ্জাতুল ইসলাম খান।

ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশের কারণে আদালত আবমাননার দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত ডেভিড বার্গম্যানের আরেকটি প্রতিবেদন নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এ বিষয়ে অধ্যাপক মুনতাসির মামুন বলেন, ডেভিড বার্গম্যান একটু বেশি বাড়াবাড়ি করছেন, আমার মনেহয় এখন সময় এসেছে তাকে নিয়ে কথা বলার।

জিয়াদ আল মালুম বলেন, সাকার রায় কার্যকরের আগে এসব আসলে ডেভিড বার্গম্যানের প্রপোগান্ডা। যুদ্ধাপরাধীদের টাকা পকেটে পুরে তিনি এ কাজ করেছেন।

বার্গম্যানের কর্মকান্ডের বিষয়ে প্রশ্ন তুলে তুরিন আফরোজ বলেন, শুধুমাত্র ডেভিড বার্গম্যান ছাড়া এ বিচার নিয়ে এমন কথাও কেউ বলেনি। একজন স্বনামধন্য আইনজীবীর মেয়ের জামাই ও বাংলাদেশের একজন মানবধিকার কর্মীর স্বামী বার্গম্যান কী করে এ ধরণের ধৃষ্টতা দেখান? তার এধরণের কর্মকান্ড গ্রহণযোগ্য নয়।

তুরিন আফরোজ আরো বলেন, বার্গম্যানকে মনে হয়ে এই এজেন্ডা দেওয়া হয়েছে। উনি রিভিউতে এসে হয়তো আশা করছেন, 'শেষ ছক্কা মারবো'। আমাদের বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে তার কর্মকান্ড মেনে নেওয়া যায় না।

কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা অনলাইনে প্রকাশিত সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিলো, মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে চান পাকিস্তানের পাঁচ নাগরিক।

পাঁচ পাকিস্তানীর দাবি, ১৯৭১ সালের যে সময়ে সংঘটিত অপরাধে সাকার মৃত্যুদণ্ড হয়েছে সেসময় বাংলাদেশেই ছিলেন না তিনি। সাকা সেসময় অর্থাৎ ৭১’র এপ্রিলে পাকিস্তানের করাচিতে ছিলেন দাবি করে আদালত চাইলে সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন ওই পাঁচ পাকিস্তানি। সূত্র : চ্যানেল আই অনলাইন

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.