Sylhet Today 24 PRINT

কোর্টের অবকাশকালীন ছুটির আগেই নিজামীর আপিল নিষ্পত্তি

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২২ নভেম্বর, ২০১৫

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর আপিল মামলাও শিগগির নিষ্পত্তি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এ

মামলার শুনানি ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলেও এসময় তিনি আশা প্রকাশ করেন।

রোববার (২২ নভেম্বর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মাহবুবে আলম বলেন, মতিউর রহমান নিজামীর আপিল মামলার শুনানি চলছে। এরইমধ্যে বেশ কয়েকদিনের শুনানি হয়েছে। চলতি সপ্তাহেও হবে। আশা করছি, সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ শুরু হওয়ার আগে অর্থাৎ ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এ শুনানি শেষ হবে। আসামিপক্ষের পর আমি শুনানি করবো। তবে আমি বেশি সময় নেব না।

তিনি বলেন, এটা আমার প্রত্যাশা। যদি এর মধ্যে অন্য কোনো মামলা এসে যায় তাহলে ভিন্ন কথা।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এ সরকার ক্ষমতায় না থাকলে এ বিচার হতো না। যারা ক্ষমতায় থাকেন তাদের চরিত্র কি, সেটা দেখতে হবে। দু’জনের দণ্ড কার্যকর হওয়ার পর পুরো জাতি যেখানে স্বস্তিবোধ করছে, সেখানে একটি রাজনৈতিক দলের বক্তব্যে আমি খুব ব্যথিত হয়েছি।

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত বছরের ২৯ অক্টোবর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি আনোয়ারুল হক ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন নিজামীকে।

এ রায়ের বিরুদ্ধে ২৩ নভেম্বর আপিল করেন মতিউর রহমান নিজামী। ছয় হাজার ২৫২ পৃষ্ঠার আপিলে মোট ১৬৮টি কারণ দেখিয়ে ফাঁসির আদেশ বাতিল করে খালাস চেয়েছেন তিনি। তবে সর্বোচ্চ সাজা হওয়ায় আপিল করেননি রাষ্ট্রপক্ষ।

আপিল শুনানিতে নিজামীর পক্ষে নেতৃত্বে রয়েছেন তার প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অন্য বিচারপতিরা হচ্ছেন, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

সর্বশেষ বুধবার (১৮ নভেম্বর) আসামিপক্ষে শুনানি করেন নিজামীর আইনজীবী এস এম শাহজাহান। এর আগে মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) ও গত ০৯ সেপ্টেম্বর আপিল আবেদনের শুনানি হয়। প্রথমদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এরপর নিজামীর পক্ষে এক নম্বর অভিযোগ উত্থাপন করেন অ্যাডভোকেট-অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন। দ্বিতীয় দিন থেকে শুনানি করছেন এস এম শাহজাহান।

নিজামীর বিরুদ্ধে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ও হত্যা-গণহত্যাসহ সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) মোট ১৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে ৮টি অর্থাৎ ১, ২, ৩, ৪, ৬, ৭, ৮ ও ১৬ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে দণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল।

প্রমাণিত চারটি অভিযোগ অর্থাৎ সাঁথিয়া উপজেলার বাউশগাড়িসহ দু’টি গ্রামে প্রায় সাড়ে চারশ মানুষকে হত্যা ও প্রায় ৩০-৪০ জন নারীকে ধর্ষণ (২ নম্বর অভিযোগ), করমজা গ্রামে ১০ জনকে হত্যা, একজনকে ধর্ষণসহ বাড়ি-ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ (৪ নম্বর অভিযোগ), ধুলাউড়ি গ্রামে ৫২ জনকে হত্যা (৬ নম্বর অভিযোগ) এবং বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ও সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটির (১৬ নম্বর অভিযোগ) দায়ে নিজামীকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

অন্য চারটি অর্থাৎ পাবনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাওলানা কছিমুদ্দিন হত্যা (১ নম্বর অভিযোগ), মোহাম্মদপুরের ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে পাকিস্তানি সেনা, রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর ক্যাম্পে নিয়মিত যাতায়াত ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র (৩ নম্বর অভিযোগ), বৃশালিখা গ্রামের সোহরাব আলী হত্যা (৭ নম্বর অভিযোগ) এবং রুমী, বদি, জালালসহ সাত গেরিলা যোদ্ধা হত্যার প্ররোচণার (৮ নম্বর অভিযোগ) দায়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল।

৫ এবং ৯ থেকে ১৫ নম্বর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এসব অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয় তাকে। এগুলোও ছিল হত্যা-গণহত্যা, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, বাড়ি-ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ এবং বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনে উসকানি ও প্ররোচণা দেওয়ার অভিযোগ।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.