Sylhet Today 24 PRINT

তারাপুর চা বাগান গণহত্যা দিবস পালিত

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১৮ এপ্রিল, ২০১৫


তারাপুর চা বাগান গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে শনিবার সিলেট শহরের তারাপুর চা বাগানে ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দ্বারা সংগঠিত গণহত্যার শহীদ স্মরণে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে পারমিতা সিলেট আয়োজন করে এক আলোচনা সভা ও গণসংগীত অনুষ্ঠান। সকাল ১০ টায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রথমেই শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে স্মৃতি সৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।

এরপরই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পারমিতা সিলেট, প্রারম্ভিকা প্রকাশ সিলেট, উদীচী সিলেট, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট, চারুবাক সিলেট, মোহনা সমাজ কল্যাণ সংস্থা, শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ও মন্দির, করের পাড়া সিলেট এবং চা বাগানের শ্রমিকবৃন্দ।

পারমিতার সভাপতি কবি ধ্রব গৌতমের সভাপতিত্বে উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট মহানগর ইউনিট কমান্ডের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ভবতোষ রায় বর্মণ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যচিত্র নির্মাতা নিরঞ্জন দে, স্থানীয় জন প্রতিনিধি কাউন্সিলর ইলিয়াছুর রহমান, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক ও পরিবেশ কর্মী আব্দুল করিম কীম, জেলা আওয়ামীলীগের অন্যতম সদস্য এম শাহরিয়ার কবির সেলিম।

এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তারাপুর চা বাগানের প্রাক্তন কর্মকর্তা কন্দর্পময় মজুমদার, শহীদ পরিবারের পক্ষে অসিত বরণ দে, টুকের বাজার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বীণা রানী রায়, মোহনা সমাজ কল্যাণ সংস্থার সভাপতি দেবজ্যোতি মজুমদার, করের পাড়া শ্রী শ্রী লোকনাথ আশ্রম ও মন্দিরের সভাপতি রিপন এষ চৌধুরী ও প্রারম্ভিক প্রকাশ সিলেটের বাপন তালুকদার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তারাপুর চা বাগান গণহত্যায় শহীদদের মধ্যে অন্যতম ডাঃ ক্ষিতীশ চন্দ্র দে’র সহধর্মিণী নিভা রানি দে ও অন্যান্য শহীদ পরিবার সমূহের সদস্যবৃন্দ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় সমগ্র বাংলাদেশটাই বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছিল। সারাদেশে ছড়িয়ে আছে এরকম বহু বধ্যভূমি। এসব গণহত্যায় শহীদদের স্মরণে প্রতিবছর বৃহৎ পরিসরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা উচিত। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে চায়। তাদের জানানো উচিত কি প্রতারণা আর কৌশলে পাকিস্তানি হানাদাররা রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর সহযোগিতায় এদেশের নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছে। গণকবর সমূহ সংরক্ষণ এবং গণহত্যায় নির্মিত স্মৃতিসৌধ গুলোকে দৃষ্টিনন্দন ভাবে নির্মাণ করে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে ধরে রাখতে হবে। তারাপুর চা বাগানের এই গণহত্যা প্রচারের বাইরেই রয়ে গেছে। এখনও সিলেটের অনেকেই জানেন না যে এখানে এত বড় একটি গণহত্যা চালিয়েছিল পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদররা। তারাপুর বাগান কতৃপক্ষের কাছে দাবি জানানো হয় ১৮ এপ্রিল তারাপুর চা বাগান গণহত্যা দিবসে শ্রমিকদের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার এবং শহীদ স্মৃতিসৌধটি আরও সুন্দর করে বৃহৎ পরিসরে নির্মাণ করার।

অনুষ্ঠানে বক্তারা দুইজন কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীর বিচার নিশ্চিত করায় সরকারকে সাধুবাদ জানান এবং বাকি যুদ্ধাপরাধিদের বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত নিষ্পত্তির জোর দাবি জানান।

অনুষ্ঠানের শেষপর্বে গণসংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী অংশুমান দত্ত, নিরঞ্জন দে। যন্ত্রানুসঙ্গে ছিলেন মৃত্যুঞ্জয় ঋষি ও অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন সংস্কৃতি কর্মী রাজিত দত্ত আবীর।

 

 

 

 

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.