Sylhet Today 24 PRINT

আওয়ামী লীগ সাংসদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলা করলেন মুক্তিযোদ্ধা

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২৩ জানুয়ারী, ২০১৭

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন

ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়ীয়া) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিনসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা হয়েছে।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে ময়মনসিংহের ২ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি করেন ফুলবাড়ীয়া উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন।

বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক মামলাটি আমলে নিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট একেএম ফজলুল হক (দুলাল) জানান, ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ও সাবেক এমপি খন্দকার আব্দুল মালেক শহীদুল্লাহ এ মামলার অন্যতম সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন। মামলায় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে মোসলেম উদ্দিনসহ আসামিদের জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।

এমপি মোসলেম ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন— ফুলবাড়ীয়া সদরের ফয়জুল বারী (৬৫), চৌদার গ্রামের আব্দুস ছামাদ মাস্টার ওরফে টিক্কা খান (৭৮), আব্দুল মণ্ডল (৮২), কুশমাইল গ্রামের মফিজ উদ্দিন ওরফে মফে (৮২), মোকছেদ আলী (৮০), ওয়াহেদ আলী মুন্সী (৮০) ও ছুরহাব আলী (৮০), ভালুকজান গ্রামের রিয়াজ উদ্দিন ফকির (৭৪), পুটিজানা গ্রামের মোকছেদ আলী (৭০), ফুলবাড়ীয়ার এবাদুল্লাহ (৭২), কালাদহের আবুল হোসেন (৭৮) ও মুছা (৭৫), পাটুলি গ্রামের আব্দুল হালিম (৬৫), আছিম তিতারচালা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস (৬৫) এবং আছিম টানপাড়া গ্রামের গিয়াস উদ্দিন (৬২)।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, আসামিগণ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতাকারী রাজাকার, আলবদর, আলশামস, দালাল, জঙ্গি, দেশদ্রোহী ও আইন অমান্যকারী হিসেবে চিহ্নিত। বর্তমান সাংসদ অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন ১৯৭০ সালে এমপি নির্বাচিত হন। এমপি হয়েও অ্যাডভোকেট মোসলেম পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে হাত মিলিয়ে রাজাকার কমান্ডে যোগ দেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জেলা রাজাকার প্রধান আব্দুল হান্নানের সাথে বৃহত্তর ময়মনসিংহের শান্তি কমিটির কোষাধ্যক্ষ নিয়োজিত ছিলেন। এসময় তিনি ফুলবাড়ীয়ার বিভিন্ন এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ, লুন্ঠন এবং অগ্নিসংযোগসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন।

এতে আরও বলা হয়, অ্যাডোভোকেট মোসলেম একাত্তর সালের ২৭ জুন উপজেলার জোড়বাড়ীয়া গ্রামে বাদীর বাড়িসহ আবু বক্র সিদ্দিক, আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুস সালামসহ ভালুকজানের পাল বাড়ি ও ঋষিবাড়ি লুণ্ঠন করে পুড়িয়ে দেন। পরে ৩৩ পাঞ্জাব রেজিমেন্ট অফিসার ও রাজাকাররা মোসলেম এমপিসহ অন্যান্য বিবাদীগণের সক্রিয় সহযোগিতায় সংশ্লিষ্ট গ্রামের নিরীহ জনগণের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, খুন-জখম এবং কৈয়ারচালা গ্রামের মালেকা খাতুনকে ধর্ষণের পর হত্যা করে। একাত্তরের ২০ জুন কুশমাইলের বসু চৌধুরীকে, ১২ জুন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদকে ও ফুলবাড়ীয়া বাজারে ৮ জন ঋষিকে হত্যা করা হয়। ২৯ নভেম্বর তালেব আলী, সেকান্দর আলী, আলতাব আলীকে হত্যার পর লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে সাধারণ মানুষকে হত্যার পর লাশ বধ্যভূমিতে ফেলে দেয়া হয়। এসব কর্মকাণ্ডে অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিনসহ উল্লেখিত আসামিরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.