Sylhet Today 24 PRINT

মানবতাবিরোধী অপরাধ: হুসাইন ও মোসলেমের মৃত্যুদণ্ডের রায়

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১৯ এপ্রিল, ২০১৭

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে কিশোরগঞ্জের দুই রাজাকারের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১৯ এপ্রিল) বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মো. মোসলেম প্রধান (৬৬) ও সৈয়দ মো. হুসাইন ওরফে হোসেন (৫৪)।

মোসলেম প্রধান কারাগারে থাকলেও মো. হুসাইন ওরফে হোসেন পলাতক রয়েছেন।

গত ৭ মার্চ এ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। পরে মঙ্গলবার এ মামলাটি কার্যতালিকায় আসলে আদালত বুধবার রায়ের দিন নির্ধারণ করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান। বিচারিক প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দী।

দুই আসামির বিরুদ্ধে থাকা ছয়টি অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে। এরমধ্যে ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড, ৫ নম্বর অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও বাকি অভিযোগগুলোতে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। ৪ নং অভিযোগে দুজনই এবং ৩ নং অভিযোগে মো. হুসাইন ওরফে হোসেন এককভাবে পেয়েছেন মৃত্যুদণ্ড।

এছাড়াও ইন্টারপোলের সহায়তা নিয়ে পলাতক আসামির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইজিপি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আসামি মোসলেম প্রধানকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় আনা হয়। মোসলেম প্রধান কারাগারে থাকলেও মো. হোসেন পলাতক। হোসেন ট্রাইব্যুনালের রায়ে মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক সৈয়দ মো. হাসান ওরফে হাছেন আলীর ছোট ভাই

এ দুজনের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ৯ মে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয় ট্রাইব্যুনালে। এক বছরের কম সময়ের মধ্যেই এই বিচার শেষে মামলাটি সিএভি রাখেন আদালত।

২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর থেকে তাদের অপরাধের তদন্ত কাজ শুরু করেন তদন্ত কর্মকর্তা হরি দেবনাথ। যা শেষ হয় ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে।

আসামিদের বিরুদ্ধে আনা ছয় অভিযোগ:

প্রথম অভিযোগ, একাত্তর সালের আগস্টের মাঝামাঝি  থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিকলীর দামপাড়া গ্রাম ও নিকলী থানা ভবন, সদরের মহাশশ্মান এলাকায় আসামি হোসেন ছয় নারীকে ধর্ষণ, সুধীর সূত্রধরসহ ৩৫ জনকে হত্যা ও বাদল বর্মনসহ চার জনকে নির্যাতন করে।

দ্বিতীয় অভিযোগহোসেন ও মোসলেম দুজনের বিরুদ্ধেই একাত্তরের ২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে সৈয়দ হোসেন ও মোসলেম প্রধানের নেতৃত্বে নিকলী বাজার ও থানা কম্পাউন্ড এলাকায় কাশেম আলীসহ চারজনকে আটক ও নির্যাতন করা হয়।

তৃতীয় অভিযোগ, নিকলীর গুরুই গ্রামের পূর্বপাড়ায় ১৯৭১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ফুল মিয়াসহ ২৬ জনকে হত্যা এবং আড়াইশ বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগের উল্লেখ আছে।

চতুর্থ অভিযোগ, হোসেনের বিরুদ্ধে এতে বলা হয়েছে, একাত্তর সালের ২১ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিকলীর নানশ্রী গ্রামে তোফাজ্জল খান জিতুসহ সাতজনকে অপহরণ ও নির্যাতন করা হয়।

পঞ্চম অভিযোগ, হোসেন ও মোসলেম দুজনের বিরুদ্ধেই। একাত্তর সালের ১০ অক্টোবর নিকলী সদরের পূর্বগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল মালেককে তার নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়।

ষষ্ঠ অভিযোগ অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টা থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা খায়রুল জাহান ও মো. সেলিমকে হত্যা করে তাদের মৃতদেহ রাজাকার হোসেন কিশোরগঞ্জ পৌরসদর, প্যারাভাঙা ও শোলাকিয়ায় রিকশা দিয়ে ঘুরানো ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা খায়রুল জাহানের মাকে তার ছেলের রক্ত দেখিয়ে বীভৎসতার প্রমাণ রেখেছিলেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.