Sylhet Today 24 PRINT

বাজারের পাস্তুরিত দুধে জীবাণু, ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১৬ মে, ২০১৮

বাজারের পাস্তুরিত কাঁচা দুধে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু পাওয়া গেছে। বাজারে পাওয়া এসব দুধের ৭৫ শতাংশই সরাসরি পানের জন্য নিরাপদ নয়। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) গবেষকরা এ তথ্য দিয়েছেন।

আইসিডিডিআরবির সহযোগী বিজ্ঞানী ও ফুড মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবরেটরির প্রধান ড. মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘শিশুদের পুষ্টির প্রাথমিক উৎস দুধ। বাজারের পাস্তুরিত কাঁচা দুধে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুর উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। তাই, ভালোভাবে না ফুটিয়ে এসব দুধ কোনো অবস্থাতেই পান করা উচিত নয়। তবে, ইউএইচটি দুধ থেকে সংগৃহীত নমুনায় জীবাণুর সংক্রমণ দেখা যায়নি। কাজেই সেগুলো পানের জন্য নিরাপদ।’

আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সবার জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর দুধ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের দুগ্ধ শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে স্বাস্থ্যকরভাবে গরুর দুধ দোয়ানো, সংগ্রহ ও সরবরাহ, সংরক্ষণ এবং পাস্তুরিত করার বিষয়ে যত্নবান হতে হবে। এ ছাড়া পানের জন্য দুধকে নিরাপদ রাখতে দুধ উৎপাদনের স্থান থেকে ভোক্তার টেবিল পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে পাস্তুরিত দুধকে নিরবচ্ছিন্নভাবে শীতল রাখার পদ্ধতি অনুসরণ করা জরুরি।’

আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণের বিভিন্ন পর্যায়ে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি দেখে বোঝা যায় , দুধের পুষ্টিগত গুণাগুণ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। প্রাথমিক উৎপদানকারী পর্যায়ে দুধ দূষণের সাথে গরুর প্রজনন প্রক্রিয়া, উৎপাদিত দুধের পরিমাণ, দুধ দোয়ানোর সময়, এবং যিনি দোয়ান তার হাত ধোয়ার অভ্যাসের মতো বিষয়ও জড়িত।’

আমিনুল ইসলাম আরো বলেন, ‘দুগ্ধ খামার থেকে শুরু করে বিক্রয়ের দোকান পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে দুধ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা দূষিত, যা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য নয়।

দুগ্ধ শিল্পের বিভিন্ন পর্যায়ে দুধের অণুজীবিজ্ঞানগত মান যাচাই করার উদ্দেশে দেশের উত্তরাঞ্চলের দুধ উৎপাদকারী, হিমাগার এবং স্থানীয় রেস্তোরাঁ থেকে কাঁচা দুধের ৪৩৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এ ছাড়া, ঢাকা এবং বগুড়ার বিভিন্ন দোকান থেকে বাণিজ্যিকভাবে প্রক্রিয়াজাতকৃত দুধের ৯৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। কেয়ার বাংলাদেশের আর্থিক সহায়তায় ‘স্ট্রেনদেনিং দ্য ডেইরি ভ্যালু চেইন (এসডিভিসি)’ প্রকল্পের আওতায় বগুড়া, গাইবান্ধা, নীলফামারী, দিনাজপুর, জয়পুরহাট, রংপুর এবং সিরাজগঞ্জ জেলার মোট ১৮টি উপজেলায় এই গবেষণা পরিচালিত হয়।’

জানা যায়, হিমাগারে সংগৃহীত নমুনাগুলোতে দুধ সংগ্রহের স্থানের নমুনাগুলোর চেয়েও দূষণের হার বেশি দেখতে পাওয়া যায়। পাঁচটি জেলার ১৫টি হিমাগারে সংগৃহীত নমুনা উচ্চসংখ্যক কলিফর্ম ও মলবাহিত কলিফর্ম পাওয়া যায়। সব হিমাগার থেকে সংগৃহীত নমুনায় ই কোলাই পাওয়া যায়, কিন্তু দেখা যায় ৬৭ শতাংশ নমুনা ই কোলাই দ্বারা উচ্চমাত্রায় দূষিত। এ ছাড়া, বি সেরেয়াস এবং স্ট্যাফাইলোকক্কির মতো আরো কিছু ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়, তবে এগুলোর মাত্রা ছিল স্বাভাবিক। দেখা গেছে দুধ উৎপাদনকারীর থেকে শুরু করে, হিমাগার এবং সবশেষে ভোক্তা অর্থাৎ স্থানীয় রেস্তোরাঁ পর্যায় পর্যন্ত দুধে ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.