Sylhet Today 24 PRINT

ক্যান্সার বিনাশে সহায়ক হবে ব্যাকটেরিয়া

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ০৫ অক্টোবর, ২০১৮

বিষে বিষক্ষয় বা কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার প্রবচনটির ব্যবহারিক প্রয়োগ চিকিৎসাশাস্ত্রে প্রচুর। সাধারণ টিকা থেকে শুরু করে এমন অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে, যেখানে চিকিৎসকরা মারাত্মক কোনো ব্যাধি নিরাময়ের জন্য আশ্রয় নিয়েছেন অন্য কোনো মারাত্মক উপায়ের। মরণঘাতী ক্যান্সারবিরোধী লড়াইয়েও ঠিক এ রকমই কিছু একটা করতে চাইছেন চিকিৎসকরা। ক্যান্সার কোষ ধ্বংসে অত্যন্ত ভয়ঙ্কর এক ব্যাকটেরিয়ার সহায়তা গ্রহণের উপযোগিতা খতিয়ে দেখছেন তারা। খবর কনজিউমার হেলথ ডে।

ক্যান্সার বিনাশে উল্লিখিত ব্যাকটেরিয়াটির সম্ভাবনাকে খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি ছোট আকারের প্রাথমিক পর্যায়ের এক গবেষণা পরিচালিত হয়। ক্লস্ট্রিডিয়াম নোভি-এনটি নামে পরিচিত এ ব্যাকটেরিয়া বেশ ভয়ঙ্কর। কোনো ক্ষতে সংক্রমণের সুযোগ পেলে এটি হয়ে উঠতে পারে গ্যাস গ্যাংগ্রিন ও সেপসিসের কারণ।

গবেষক দলের প্রধান যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনভিত্তিক ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের এমডি এন্ডারসন ক্যান্সার সেন্টারের ইনভেস্টিগেশনাল ক্যান্সার থেরাপিউটিকস বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডা. ফিলিপ জাঙ্কু জানান, টিউমারের মধ্যে প্রবেশ করানো হলে, ক্লস্ট্রিডিয়াম নোভি-এনটি ব্যাকটেরিয়াটি একদিক থেকে যেমন নিজে ক্যান্সার কোষের ওপর সরাসরি আক্রমণ চালাতে পারে, অন্যদিকে একই সঙ্গে তা হয়ে উঠতে পারে দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার ক্যান্সার কোষে আক্রমণ চালানোর কারণ।

ডা. ফিলিপ জাঙ্কু জানান, প্রায়োগিক এ গবেষণা শুরুর আগে ব্যাকটেরিয়াটিকে দুর্বল করে নেয়া হয়, যাতে দেহে এর বিষক্রিয়ার প্রভাব না পড়ে। এখানে দুর্বল করে নেয়া ব্যাকটেরিয়াটির নামের শেষে ‘এনটি’ জুড়ে দেয়ার অর্থ হলো, এটি ‘নন টক্সিক’ বা বিষক্রিয়ামুক্ত। ক্লস্ট্রিডিয়াম নোভির বিকাশ সাধারণত নিম্নমাত্রার অক্সিজেনসম্পন্ন পরিবেশেই ঘটে বেশি। এ কারণেই দেহের টিউমার সংক্রমিত এলাকায় প্রয়োগের জন্য ব্যাকটেরিয়াটিকে বেছে নেন বিশেষজ্ঞরা। ডা. ফিলিপ জাঙ্কু বলেন, দেহের সাধারণ টিস্যুগুলোয় অক্সিজেনের মাত্রা যদি কখনো কমও হয়, তার পরও ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার ব্যাহত করার মতো যথেষ্ট অক্সিজেন থাকে। অন্যদিকে ক্যান্সার সংক্রমিত টিস্যুগুলোয় অক্সিজেনের মাত্রা বেশ কম থাকে, বিশেষ করে ক্যান্সারের ঠিক কেন্দ্রবিন্দুতে।

২৪ জন ক্যান্সার আক্রান্তের ওপর এ ব্যাকটেরিয়া প্রয়োগ করেন বিশেষজ্ঞরা। এর এক সপ্তাহ পর তাদের ওপর এর প্রতিষেধক টিকাও প্রয়োগ করা হয়, যাতে ব্যাকটেরিয়াটি দেহে নতুন কোনো রোগের সংক্রমণ ঘটাতে না পারে। দেখা গেছে, আক্রান্ত ২৪ জনের মধ্যে ১০ জনের দেহের টিউমার কোষকে পুরোপুরি মেরে ফেলতে সক্ষম হয়েছে ব্যাকটেরিয়াটি। অন্য অনেকের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে আশ্চর্যজনক অগ্রগতি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.