Sylhet Today 24 PRINT

শীতে ঠাণ্ডাজনিত কয়েকটি স্বাস্থ্য সমস্যা

অনলাইন ডেস্ক |  ২৮ নভেম্বর, ২০১৮

শীতকালটা অনেকের কাছে খুবই আনন্দের একটা ঋতু। কিন্তু এই আনন্দের পাশাপাশি কফ, সর্দি-কাশি, জ্বর, হাঁপানি ও নিউমোনিয়ার মতো কিছু ঠাণ্ডাজনিত স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে শিশু থেকে বৃদ্ধ অনেকেই শীতকালের দিনগুলো খুবই কষ্টে অতিবাহিত করেন। তাই শীতকালীন রোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে নিন্মে কিছু নিয়ম উল্লেখ করা হল।

সর্দি-কাশি ও ইনফ্লুয়েঞ্জার লক্ষণ: শীতের অসুখের কথা বলতে গেলে প্রথমেই চলে আসে ঠাণ্ডাজনিত সর্দি-কাশির সমস্যা। এই সর্দি-কাশির শুরুতেই সাথে গলা ব্যথা, গলায় খুশখুশ ভাব, নাক বন্ধ, নাক দিয়ে পানি ঝরা এবং ঘন ঘন হাঁচি। এই সব উপসর্গের সাথে হালকা জ্বর, মাথাব্যথা, মাংসপেশিতে ব্যথা, মাথা ভার ভার লাগা, শরীর ম্যাজ ম্যাজ করা, দুর্বল লাগা ও ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়। এটা মূলত শীতকালের শরীরের সাধারণ সমস্যা যা কিনা ৭-১০ দিনের মধ্যে নিজ থেকেই ভালো হয়ে যায়।

তবে ইনফ্লুয়েঞ্জার ক্ষেত্রে জ্বর ও কাশিটা খুব বেশি হয় যা থেকে শ্বাসকষ্ট হতে পারে এবং এটা অনেক দিন ধরে স্থায়ী হয়। বলা যায় যে, শীতের অসুখের মূল অংশটাই জুড়ে থাকে শ্বাসতন্ত্রের ওপর, যা থেকে শ্বাসকষ্টের উৎপত্তি হয়ে থাকে। শীতে শ্বাসতন্ত্রজনিত ফুসফুসের প্রদাহ সংক্রান্ত অসুখ নিউমোনিয়া শিশুদের জন্য একটি প্রাণঘাতী রোগ। দ্রুত চিকিত্সা এবং সচেতনতার অভাবে প্রতি বছর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেক শিশু মারা যায়।

এছাড়া শীতকালে সাইনাস, কান ও টনসিলের ব্যাথাও বাড়ে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম বিশেষকরে নবজাতক, শিশু, বৃদ্ধ ও ধূমপায়ীরা শীতকালে এই সব রোগ দ্বারা খুব বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।

বিশেষজ্ঞরা মতে, তাপমাত্রার পরিবর্তন আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক শক্তি বা ইমিউন সিস্টেম আক্রান্ত করে এবং দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমিয়ে দেয়। শীতকালে বাতাস অত্যন্ত শুষ্ক থাকে, ফলে প্রশ্বাসের বায়ু প্রয়োজনীয় পরিমাণে আর্দ্র হতে পারে না। এর ফলে জীবাণু শ্বাসতন্ত্রের ভেতরে ঢোকে ও বিস্তার লাভ করে।

এ সময় পানি খাওয়া কম হয় বলে শরীরে পানিশূন্যতা থাকে এবং শ্বসনতন্ত্র থেকে যে প্রতিরোধক ব্রংকিয়াল নিঃসরণ হয়, যা শ্বাসনালির ভেতরের জীবাণুকে বের করে দেয়, তা শুকিয়ে যায়। ফলে জীবাণু বের হতে পারে না এবং সহজেই বিস্তার লাভ করে। শুষ্ক আবহাওয়া বাতাসে ভাইরাস ছড়াতে সাহায্য করে। এ ছাড়া শীতকালে ধুলাবালির পরিমাণ বেড়ে যায়। ঠান্ডা, শুষ্ক বাতাস হাঁপানি রোগীর শ্বাসনালিকে সরু করে দেয়, ফলে হাঁপানির টান বাড়ে।

শীতে ত্বকের রোগ:
শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি শীতের শুষ্কতায় অনেকের ত্বক ফেটে যায় এবং চর্মরোগ দেখা দেয়। বিশেষ করে শিশুদের ত্বকে চুলকানি, খোসপাঁচড়া, একজিমাসহ নানা ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। আর বড়দের সমস্যার মধ্যে হাত পা ফেটে যাওয়া, মুখ ও ঠোঁটের শুষ্কতা বেড়ে যায়। শীতে প্রতিদিন শিশুকে হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করানোর পর যেকোন ধরণের ময়েশ্চারাইজিং লোশন শরীরে ব্যবহার করতে পারেন।

তবে যাদের ময়েশ্চারাইজার লোশন ব্যবহার করতে পারবেন না তারা স্বাভাবিক যেকোনো তেল ব্যবহার করতে পারেন। পাশাপাশি মুখ ও ঠোটে ভ্যাসলিন ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে। ছোট-বড় যাদের ঠোঁট ফেটে যায় তারা যেকোনো ধরণের লিপজেল বা লিপবাম ব্যবহার করতে পারেন। বড়দেরও প্রতিদিন ময়েশ্চরাইজার লোশন ব্যবহার করা ভালো। এছাড়া অনেকের শীতকালে হাত-পা ফেটে যায়। সেক্ষেত্রে শুধু ভ্যাসলিন বা ময়েশ্চরাইজার লোশন ব্যবহার করলে চলবেনা। যেকোনো ডার্মাটোলজিষ্ট বা স্কিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হতে পারে।

শীতে করণীয় কিছু টিপস:

শীতের তীব্রতা অনুযায়ী গরম কাপড় ও কান-ঢাকা টুপি পরা এবং গলায় মাফলার ব্যবহার করা।

ভিটামিন সি-যুক্ত ফল যেমন লেবু, কমলা ইত্যাদি খেতে হবে।

তাজা, পুষ্টিকর খাদ্য এবং পর্যাপ্ত পানি পান করা

মাঝেমধ্যে হালকা গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করা।

হাত ভালোভাবে সাবান দিয়ে ধোয়ার অভ্যাস করা

হাঁচি-কাশির সময় রুমাল ব্যবহার করুন।

ধূমপান পরিহার করা।

মুক্ত ও নির্মল বাতাসে হাটার অভ্যাস করা।

প্রয়োজনে ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নেওয়া

অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট রোগীরা সব সময় ইনহেলার সঙ্গে রাখুন।

ধুলাবালি এড়িয়ে চলা। ধুলাতে সমস্যা হলে বাইরে যাওয়ার সময় মাস্ক বা স্কার্ফ ব্যবহার করুন

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.