Sylhet Today 24 PRINT

মায়ের করোনা পরীক্ষা করাতে গিয়ে মারধরের শিকার যুবক

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ০৪ জুলাই, ২০২০

করোনা পরীক্ষা করাতে মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া এক যুবককে কলার ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন আনসার সদস্যরা। এ দৃশ্য দেখে উপস্থিত ফটোসাংবাদিক ছবি তোলার চেষ্টা করেন। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা। তারা ওই সাংবাদিকের ওপর হামলা চালান। এক সহকর্মী তাকে বাঁচাতে গেলে আনসার সদস্যের আঘাতে তার ক্যামেরা ভেঙে যায়। শুক্রবার সকালে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ঘটে এ ঘটনা।

মুগদা থানার ওসি প্রলয় কুমার সাহা বলেন, ভুক্তভোগী ফটোসাংবাদিক রুবেল রশীদ এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। প্রকৃতপক্ষে সেখানে কী ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এজন্য সেখানকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ ও ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা যায়, মুগদার দক্ষিণ মান্ডা এলাকার বাসিন্দা শাওন হোসেনের মা ক্যানসার আক্রান্ত। নিয়মিত বিরতিতে তাকে কেমোথেরাপি দিতে হয়। আর থেরাপি দিতে হলে আগে করোনা নেগেটিভ সনদ দেখানোর দরকার পড়ে। এ কারণে শুক্রবার ভোর ৫টায় অসুস্থ মাকে নিয়ে তিনি মুগদা হাসপাতালে গিয়ে লাইনে দাঁড়ান। প্রতিদিন ৪০ জনের পরীক্ষা হয়। তারা ছিলেন ৩৬ নম্বরে। অপেক্ষার একপর্যায়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ৩৩তম ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহের পর বাকিদের ফিরে যেতে বলা হয়। এতে অপেক্ষমাণদের মধ্যে সৃষ্টি হয় অসন্তোষ।

ভুক্তভোগী শাওন হোসেন সাংবাদিকদের জানান, অপেক্ষমাণদের কেন পরীক্ষার টোকেন দেওয়া হচ্ছে না জানতে চাইলে আনসার সদস্যদের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তার কলার ধরে টেনে আনসার ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তাকে লাঠি দিয়ে দুবার আঘাত করেন এক আনসার সদস্য। আরেকজন তাকে বাঁধার জন্য রশি নিয়ে আসেন। পরে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। তবে তারাও ঘটনার জন্য শাওনকে অভিযুক্ত করেন ও নাম-ঠিকানা লিখে নেন।

শাওন জানান, এর আগেও দুইবার মুগদা হাসপাতাল থেকে করোনা পরীক্ষা করিয়ে মাকে কেমোথেরাপি দিয়েছেন। তবে ২০ জুন তৃতীয়বার পরীক্ষা করাতে এসেই ঝামেলায় পড়তে হয়। সেবার তিনদিনেও পরীক্ষার ফল না পেয়ে তিনি লিখিতভাবে অভিযোগ করেন। তাতে সাড়া না পেয়ে ২৬ জুন তিনি নিয়ম অনুযায়ী নোটিশ দেন। পরদিন আবারও নোটিশ দেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে আবারও পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।

দেশ রূপান্তর পত্রিকার ফটোসাংবাদিক রুবেল রশীদ জানান, করোনা পরীক্ষা করাতে আসা রোগীর স্বজনের সঙ্গে আনসার সদস্যদের মারমুখী আচরণের ছবি তোলার চেষ্টা করছিলেন আরেক ফটোসাংবাদিক জয়ীতা রায়। এতে জয়ীতাকে চড় মারতে উদ্যত হন এক আনসার সদস্য। এটা দেখে তিনি বাধা দিতে গেলে তার ক্যামেরায় আঘাত করেন ওই আনসার সদস্য। এতে তার ক্যামেরার লেন্স প্রটেক্টর ভেঙে যায়।

ফটো সাংবাদিক জয়ীতা রায় জানান, আনসার সদস্যরা খুবই বাজে আচরণ করেছেন। তারা মারতে উদ্যত হলে তিনি সরে যাওয়ায় আঘাত থেকে রক্ষা পান। তবে করোনা পরীক্ষা করাতে আসা ছেলেটিকে তারা নির্যাতন করেছে।

দুই ফটোসাংবাদিক আরও জানান, আফসারুল আমিন নামে এক আনসার সদস্য ছবি তুলতে বাধা দিচ্ছিলেন। অন্য সহকর্মীরাও তাকে সহযোগিতা করেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মুগদা হাসপাতাল আনসার ক্যাম্পের সহকারী কমান্ডার রফিকুল ইসলাম দাবি করেন, শাওন হোসেন আনসার সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছেন। তবে তাকে মারধর করা হয়নি। বরং সেখানে উপস্থিত একটি সংস্থার সাদা পোশাকের এক সদস্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ক্যাম্পে নিয়ে যেতে বলেন। তার নির্দেশই পালন করেছে আনসার।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.