Sylhet Today 24 PRINT

বুধবার থেকে খুলছে দেশের সব নিম্ন-আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক  |  ০৪ আগস্ট, ২০২০

করোনা সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বুধবার (৫ আগস্ট) থেকে খুলছে দেশের সব নিম্ন আদালত। চার মাসেরও অধিক সময় নিম্ম আদালতের নিয়মিত কার্যক্রম বন্ধ ছিলো। এসময় ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিচার কার্যক্রম চালানো হয়েছে। তবে বুধবার থেকে  শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে বিচার কাজ শুরু হবে।

গত ৩০ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এর আগে গত ২৫ মার্চের পর থেকে করোনা বিবেচনায় দেশের নিম্ন আদালতে শারীরিক উপস্থিতিতে মামলা, আবেদন দায়ের ও শুনানির সুযোগ বন্ধ রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

৩০ জুলাইয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে এই মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে- অধস্তন সব দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত এবং ট্রাইব্যুনালগুলোতে ৫ আগস্ট থেকে শারীরিক উপস্থিতিতে স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, অধস্তন দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত এবং ট্রাইব্যুনালগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে সবাইকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ৩০ জুলাইয়ের জারিকৃত বিজ্ঞপ্তিতে বর্ণিত আদালত প্রাঙ্গণ এবং এজলাস কক্ষে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত নির্দেশনা প্রতিপালনের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।

নিম্ন আদালতে কার্যক্রম চলাকালীন সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে কয়েকটি জরুরি নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।  
অত্যন্ত জরুরি কারণ ছাড়া সবাইকে আদালত প্রাঙ্গণে আসা থেকে বিরত থাকতে হবে। আদালত প্রাঙ্গণ, আদালত ভবনে প্রবেশ করার সময় প্রত্যেকের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষার ব্যবস্থা নিতে হবে। আদালতে প্রবেশের মুহূর্তে কেউ শরীরে জ্বর বোধ করলে শরীরের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার চেয়ে বেশি বা কোভিড-১৯ এর লক্ষণ যেমন কাশি, শ্বাসকষ্ট, সর্দি, ঠাণ্ডাজনিত ঘন ঘন কাঁপুনি, পেশী ব্যথা, মাথা ব্যথা, গলা ব্যথা, স্বাদ বা গন্ধের অনুভূতি নষ্ট হওয়া, ডায়রিয়া ইত্যাদিতে আক্রান্ত বা কোভিড-১৯ আক্রান্ত কারো সংস্পর্শে এসেছেন এমন কাউকে আদালত ভবনে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। এজলাসকক্ষে প্রবেশের সময় আদালতের কর্মচারী দ্বারা প্রত্যেক ব্যক্তির শারীরিক তাপমাত্রা থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।

ঝুঁকিপূর্ণ জনসমাগম নয় : ‘আদালতের সংশ্লিষ্ট বিচারক শুনানি কার্যক্রমের সময়সূচি এবং পদ্ধতি এমনভাবে নির্ধারণ করবেন যাতে আদালত ভবনে ও এজলাসকক্ষে কোনোরূপ ঝুঁকিপূর্ণ জনসমাগম না ঘটে। একটি মামলায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি/ব্যক্তিরা এজলাসকক্ষ ত্যাগ করার পর পরবর্তী মামলা শুনানির জন্য গ্রহণ করবেন। ’

এজলাসে ৬ জনের বেশি নিষিদ্ধ : ‘একটি মামলার শুনানিতে প্রত্যেক পক্ষে সর্বোচ্চ দু’জন আইনজীবী অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এজলাসকক্ষে ছয়জনের অধিক লোকের সমাগম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। প্রত্যেকে পরস্পরের মধ্যে কমপক্ষে ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখবেন। কোনো মামলার শুনানিতে পক্ষগণের উপস্থিতি আইনগতভাবে আবশ্যক না হলে এজলাসকক্ষে শুধু সংশ্লিষ্ট মামলার নিযুক্ত আইনজীবী উপস্থিত থাকবেন। আদালতের বিভিন্ন শাখায় এবং অফিসকক্ষে কমপক্ষে ছয় ফুট দূরত্ব বজায় রেখে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বসার আসন বিন্যাস করতে হবে। ’

কারাগার থেকে আসামি হাজির নয় : জামিন শুনানি এবং আমলি আদালতে ধার্য তারিখের হাজিরার জন্য কারাগারে থাকা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে কারাগার থেকে প্রিজনভ্যান বা অন্য কোনোভাবে আদালত প্রাঙ্গণে বা এজলাসকক্ষে হাজির করার আবশ্যকতা নেই।

‘কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষার লক্ষ্যে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনসহ শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব কঠোরভাবে বজায় নিশ্চিতকরণে তাৎক্ষণিক যেকোনো পরিস্থিতি বিবেচনায় বিচারক প্রয়োজনবোধে আনুষঙ্গিক যেকোনো সুরক্ষা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। ’

‘সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপার/ উপ-পুলিশ কমিশনার কোর্ট পুলিশ পদায়ন/বদলি করার ক্ষেত্রে জেলা জজ/মহানগর দায়রা জজ/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন ও স্বাস্থ্যবিধিসহ অন্য সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবেন। ’

জীবাণুনাশক স্প্রে ব্যবহার : ‘আদালত প্রাঙ্গণে জনসাধারণের ব্যবহার্য স্থান, সরঞ্জামাদি ও আসবাবপত্র যথাযথভাবে জীবাণুনাশক স্প্রে করে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে অ্যালকোহল ও ক্লোরহেডিক্সডিন ডিসপোজেবল অ্যান্টিসেপটিক ওয়াইপ ব্যবহার করতে হবে। আদালতের নথিপত্র যথাযথভাবে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। আদালতে জনসমাগমের সাধারণ স্থান যেমন, এজলাসকক্ষ, করিডোর, বারান্দা, হলওয়ে, সিঁড়ি, লিফট, বিশ্রামাগার বা জনসাধারণ সমবেত হতে পারে এমন অন্যান্য জায়গায় সামাজিক দূরত্ব যথাযথভাবে নিশ্চিত করতে হবে। ’

‘আদালত প্রাঙ্গণ ও এজলাসকক্ষে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে এবং সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে বিচারকরা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা নেবেন। আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে তাদের কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করতে অনুপ্রাণিত করতে হবে। ’

দোকানপাট বন্ধ রাখতে হবে : ‘আদালতে আগত ও অবস্থানরত প্রত্যেককে এই সুরক্ষামূলক নির্দেশনা আবশ্যিকভাবে প্রতিপালনে সহযোগিতা করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতের এক বা একাধিক কর্মচারীকে সাহায্যকারী হিসেবে দায়িত্বে নিয়োজিত করবেন এবং মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা নেবেন। আদালত প্রাঙ্গণে সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ রাখতে হবে এবং কোনো ভ্রাম্যমাণ দোকান বসতে দেওয়া যাবে না।

আদালত প্রাঙ্গণে সহজে চোখে পড়ে এমন স্থানে সুরক্ষামূলক নির্দেশনা সমূহ এবং স্বাস্থ্যবিধি প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.