Sylhet Today 24 PRINT

কক্সবাজারের নতুন এসপি হাসানুজ্জামান, মাসুদকে বদলি

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০

মেজর সিনহা হত্যার বিষয় নিয়ে বিতর্কিত কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেনকে অবশেষে বদলি করা হয়েছে। তার নতুন কর্মস্থল রাজশাহী জেলা। তবে তার স্থলে কক্সবাজারে নতুন এসপি হয়ে আসছেন ঝিনাইদহ জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান।

বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপ-সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ বদলির আদেশ দেওয়া হয়।

আদেশে পুলিশের উচ্চপদস্থ ৬ কর্মকর্তাকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বদলি করা হয়েছে। বদলি হলেও সিনহা হত্যা মামলার ন্যায় বিচারের লক্ষ্যে এসপি মাসুদকে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানান মামলার বাদী শারমিন ফেরদৌস।

তথ্য মতে, গত ৩১ জুলাই রাতে অবসরপ্রাপ্ত সেনা মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার পর ওসি প্রদীপ ও এসপি মাসুদের মধ্যে একটি ফোনালাপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে এসপি এবিএম মাসুদ হোসেন আলোচনায় আসেন।

পরে ১০ সেপ্টেম্বর সিনহা হত্যা মামলার আইনজীবী মো. মোস্তফা এক প্রেস ব্রিফিংয়ে অভিযোগ করেন, কক্সবাজারের এসপি সিনহা হত্যা মামলার তদন্তে বাধা দিচ্ছেন। এসপি মাসুদ কক্সবাজার জেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছিলেন প্রধান আসামি ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং ইন্সপেক্টর লিয়াকতকে কারাগারে বিভাগের ব্যবস্থা করার জন্য। অভিযুক্তের পক্ষে এসপি মাসুদ হোসেন তার সরকারি ক্ষমতা অপব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ করেন এ আইনজীবী।

এদিন এসপি মাসুদ তার চেয়ারের সরকারি ক্ষমতা অপব্যবহার করার সুনির্দিষ্ট ১০টি পয়েন্ট উল্লেখ করে তাকে মেজর সিনহা হত্যা মামলায় আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করেছিলেন মামলার বাদী সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। বেলা ১২টার দিকে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম (কক্সবাজার সদর-৪) তামান্না ফারাহর আদালতে করা এ আবেদন শুনানি শেষে বিকাল ৫টায় তদন্তকাজে বাধা দিলে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মতে যে কারো বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তার ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার রয়েছে উল্লেখ করে একটি নির্দেশনা দিয়ে বাদীর আবেদন ফিরিয়ে দেন আদালত।

এরপর বিতর্কে পড়া কক্সবাজারের এসপি মাসুদকেও বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) অন্য কর্মকর্তাদের সাথে রাজশাহীতে বদলির আদেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফের কাছে বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা। ওই ঘটনায় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস গত ৫ অগাস্ট কক্সবাজারের হাকিম আদালতে নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেখানে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে ১ নম্বর এবং টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে ২ নম্বর আসামি করা হয়।

মামলার পর ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য ৬ আগস্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। অন্য দুই আসামি পলাতক। মামলায় সহযোগী আসামিসহ বর্তমানে কারান্তরিণ রয়েছেন ১৪ জন। মামলাটি র‌্যাব তদন্ত করছে। তারা মামলার ১৩ আসামিকে নানা মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এ পর্যন্ত মামলায় ১২ আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে অন্যতম অভিযুক্ত ওসি প্রদীপ সর্বোচ্চ ১৫ দিন রিমান্ডে থাকলেও তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। আর নতুন যুক্ত হওয়া আসামি কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে এখনো রিমান্ডে নেওয়া হয়নি।

পুলিশ সুপারকে বদলির বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় সিনহা হত্যা মামলা বাদী শারমিন ফেরদৌস বলেন, ‘আমার বাবাও সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। সরকারি চাকরি ট্রান্সফারেবল। তারও (এসপি মাসুদের) বদলি হতেই পারে। কিন্তু আমাদের দাবি ছিল তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগগুলো উত্থাপন করা হয়েছে তা যাচাই করতে তাকে আসামির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে জিজ্ঞাসাবাদ করা। তিনি যেখানেই যাক, ন্যায় বিচারের লক্ষ্যে আমাদের সেই দাবি বহমান থাকবে।

এদিকে সিনহা হত্যায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তবে সেই প্রতিবেদনে কী আছে তা এখনও খোলাসা করেনি মন্ত্রণালয়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.