Sylhet Today 24 PRINT

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হওয়ায় পেঁয়াজ আমদানি অনিশ্চিত

বেনাপোল প্রতিনিধি  |  ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হওয়ায় টানা ১১ দিন ধরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। ফলে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় বিভিন্ন বেসরকারী পার্কিং ও সড়কে প্রায় শতাধিক পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক এখনও দাঁড়িয়ে আছে। দ্রুত এসব ট্রাক ছাড় করাতে না পারলে আবারও নতুন করে ক্ষতির শিকার হবেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে বাংলাদেশি আমদানি কারকেরা তাদের ভারতীয় রফতানিকারক প্রতিনিধিদের মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ে পুরানো এলসির আটকে পড়া পেঁয়াজ ছাড় করাতে বার বার আবেদন জানালেও এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া মেলেনি। ফলে দেশে পেঁয়াজ আমদানি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

বেনাপোল বন্দরের স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজ সংকট দেখা দেওয়ায় দাম আবারও বেড়ে চলেছে। বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে পাইকারী বাজারে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা আর খুচরা বাজারে তা ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভারত থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ অর্ধেক নষ্ট হওয়ায় বাজারে দাম বেড়েছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা।

পেঁয়াজ আমদানি কারক শেখ ট্রেডার্সের শেখ মাহাবুব বলেন, ‘প্রতিবছর পেঁয়াজ নিয়ে লংঙ্কা কান্ড হয়। ভারত কখনো উৎপাদন সংকট আবার কখনো রফতানি মুল্য তিন গুন বাড়িয়ে আমদানি বন্ধ করতে বাধ্য করে।’ এক্ষেত্রে সংকট মোকাবেলায় ভারত ছাড়াও বাইরের কিছু দেশের সাথে বাণিজ্যিক সর্ম্পক জোরদার করতে তিনি সরকারের প্রতি আহবান জানান।

বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সভাপতি মহাসিন মিলন বলেন, ‘ভারতীয় ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ে পেঁয়াজ রফতানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে এপথে আমদানি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।’

পেঁয়াজ আমদানি কারক রফিকুল ইসলাম রয়েল, ‘বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের ওপারের বিভিন্ন পার্কিংয়ে হেফাজতে তাদের প্রায় শতাধিক ট্রাক পেঁয়াজ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক ট্রাকের পেয়াঁজে পচন ধরেছে। নিষেধাজ্ঞার আগেই এসব ট্রাক বন্দর এলাকায় পৌঁছেছিল। দ্রুত এসব ট্রাক না ছাড়লে নতুন করে আবারো লোকশানে পড়তে হবে।’

বেনাপোল বন্দরের পাইকারী পেঁয়াজ বিক্রেতা শুকর আলী বলেন, ‘ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি কম। আর যা আসছে তা অর্ধেক বস্তা পচা পাওয়া যাচ্ছে। এতে বাজারে দাম কমছে না। বাইরে থেকে আমদানি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত বাজার অস্থিতিশীল থাকবে বলে মনে হচ্ছে।’

বেনাপোল বন্দরের উপ পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বলেন, ‘কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়া সংকট দেখিয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এপর্যন্ত কোনো পেঁয়াজের ট্রাক আসার অনুমতি দেয়নি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। দিবে কিনা তাও নিশ্চিত জানাতে পারেনি। তবে এই পথে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে অনান্য পণ্যের আমদানি ও রফতানি বাণিজ্য স্বাভাবিক আছে।

উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১০ দিনে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ২৫৪৪ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য। তবে এসব পণ্যের মধ্যে কোনো পেঁয়াজের ট্রাক ছিল না। একই সময়ে ভারতে বাংলাদেশি পণ্য রফতানি হয়েছে ১০২৭ ট্রাক। তবে এসব রফতানি পণ্যের মধ্যে ৬৭ ট্রাক ছিল পদ্মার ইলিশ।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.