Sylhet Today 24 PRINT

সিলেট-লন্ডন ফ্লাইট বন্ধের সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক |  ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০

যুক্তরাজ্যে নতুন ধরনের করোনাভাইরাস ছড়ানোর প্রেক্ষাপটে দেশটির সঙ্গে আকাশপথে বাংলাদেশের যোগাযোগ সাময়িকভাবে বন্ধের সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

বুধবার সংসদ ভবনে কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়।

যুক্তরাজ্যের সাথে ফ্লাইট চালু থাকায় সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে সিলেট। সিলেট-লন্ডন ফ্লাইটে গত একমাসে প্রায় ১২শ' যাত্রী সিলেট এসেছেন।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে করোনার যে নতুন ধরন পাওয়া গেছে, তা বাংলাদেশে আছে কি না এখনও কনফার্ম নয়। কিন্তু ফ্লাইট যেহেতু চলছে, আসার আশঙ্কাও থেকে যায়। এ কারণে আমরা বিমান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে সাময়িকভাবে ফ্লাইট বন্ধ করতে বলেছি।’

তিনি বলেন, ‘কোয়ারেন্টিন যাতে কঠোরভাবে মানা হয়, সেদিকেও লক্ষ রাখতে বলেছি আমরা। প্রথম যখন দেশে সংক্রমণ হলো তখন কোয়ারেন্টিন নিয়ে কিছু গাফিলতি ছিল।’

সিলেটটুডে ডেস্ক

যুক্তরাজ্যে সম্প্রতি করোনাভাইরাসের নতুন ধরন (স্ট্রেইন) শনাক্ত হয়। ভাইরাসটি আগের চেয়ে ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রামক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। তবে এটি আগের চেয়ে প্রাণঘাতী কিনা তা জানা যায়নি।

এমন প্রেক্ষাপটে ভারত-পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। যদিও করোনার ওই নতুন বেশ কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

এ অবস্থায় গত ২৮ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে যুক্তরাজ্য থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখার সিদ্ধান্ত হয়। পরদিন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, ১ জানুয়ারি থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

শেখ সেলিম জানান, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে মাস্ক, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) বিতরণ ও নমুনা পরীক্ষায় অনিয়মের কথা তুলে ধরে টিকা ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সতর্ক থাকতে বলেছে সংসদীয় কমিটি। কমিটি বলেছে, করোনাভাইরাসের টিকা সরকারের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রেখে জেলা সরকারি হাসপাতাল এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে প্রদান করতে হবে।

কমিটির সভাপতি বলেন, ‘গত ২৪ মার্চ আমরা যে বৈঠক করেছিলাম সেখানে করোনাভাইরাসের প্রস্তুতি নিয়ে অনেক কিছুই বলা হয়েছিল। কিন্তু সংক্রমণ শুরুর পর আমরা দেখলাম আমাদের প্রাথমিক প্রস্তুতিতে ঘাটতি ছিল। মাস্ক আর করোনা পরীক্ষা নিয়েও কেলেঙ্কারি হয়েছে।

‘ভ্যাকসিন নিয়ে আমরা এ রকম পরিস্থিতি দেখতে চাই না। টিকা সংরক্ষণের ব্যবস্থা আগে থেকে নিতে হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি ডাক্তারদের টিকা দেয়ার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বেসরকারি খাতে এই টিকা দেয়া যাবে না। যদি কেউ বিদেশ থেকে টিকা আমদানি করতে চায় তবে সরকারের অনুমতি নিতে হবে।’

সংসদীয় কমিটির সভাপতি জানান, শিশুদের উপযোগী কোভিড-১৯ টিকা যাতে বাংলাদেশ প্রথম থেকেই পায় সেজন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন টিকা উৎপাদকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

যে টিকা বেরিয়েছে তা ১৮ বছরের কম বয়সীদের দেয়া যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেজন্য আমরা টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছি, যাতে বাংলাদেশ শুরু থেকে পায়।’

সংসদ সচিবালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বৈঠকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যাল্স এবং কোভ্যাক্সের আওতায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে ২০২১ সালের জুন মাসের মধ্যে চার কোটি ৯০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়া যাবে বলে কমিটিকে জানানো হয়।

শেখ সেলিমের সভাপতিত্বে বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, কমিটির সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, মো. আব্দুল আজিজ, সৈয়দা জাকিয়া নুর, রাহগির আল মাহি এরশাদ (শাদ এরশাদ) ও মো. আমিরুল আলম মিলন অংশ নেন।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.