Sylhet Today 24 PRINT

চার লেনে উন্নীতের পর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চলাচলে লাগবে টোল

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেইনে উন্নীত হওয়ার পর তা ব্যবহারে টোল দিতে হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

মঙ্গলবার একনেকে ‘সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পটি অনুমোদনের পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।

অন্যগুলোর তুলনায় এই মহাসড়ক চার লেইনে উন্নীত করার ক্ষেত্রে ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

একনেক সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভার পর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে আসের পরিকল্পনামন্ত্রী।

মান্নান বলেন, সভায় ঢাকা-সিলেট চার লেইন প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই সড়ক নির্মাণ শেষ হলে টোল আদায় করতে হবে।

“প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিনা পয়সায় সেবা পাওয়ার দিন শেষ। আমরা সেবা পেতে চাই, কিন্তু পয়সা দিতে রাজি না। এটা আমাদের কালচার। এই কালচার থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।”

দেশের সব বড় বড় সড়কে টোল আদায়ের ব্যবস্থা করতেও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন বলে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ওই অর্থ একটা ইয়ার মার্ক অ্যাকাউন্ট করে জমা রাখতে হবে। যেন ওই সড়কগুলো মেরামত করতে হলে ওই অ্যাকাউন্টের অর্থ দিয়ে করা যায়।”

ব্যয় বাড়ার ব্যাখ্যা

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে এডিবির অর্থায়নে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেইনে উন্নীত করা হচ্ছে।

এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ১৬ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দেবে ৩ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা ৯০ লাখ টাকা, বাকি ১৩ হাজার ২৪৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অর্থায়ন করবে এডিবি।

দেশে এর আগের বিভিন্ন মহাসড়ক চার লেইনের করতে যে ব্যয় হয়েছিল, তার চেয়ে অনেক বেশি ব্যয় হতে যাচ্ছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেইনে উন্নীত করতে।

প্রায় ২১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক চার লেইনের করতে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় হচ্ছে ৮০ কোটি টাকার বেশি।

যেখানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেইনে উন্নীত করতে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় হয়েছিল ২১ কোটি টাকা। ময়মনসিংহ-জয়দেবপুর মহাসড়কে এই ব্যয় ছিল ২১ কোটি টাকা। হাটিকুমরুল থেকে রংপুর পর্যন্ত চার লেইন সড়ক নির্মাণে ছিল ৫৫ কোটি টাকা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নে ব্যয় বাড়ার কারণ দেখিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যা ব্যয় হবার তাই হবে। কস্ট কম্প্রোমাইজ করে কোয়ালিটি কম্প্রোমাইজ করা যাবে না।”

তিনি বলেন, “এটা একটা হিউজ প্রজেক্ট। এই প্রকল্পে ৫ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আছে। এই কস্টও তো আমাকে ধরতে হবে। এছাড়া দুই পাশে সার্ভিস লেন রয়েছে।”

সিলেট মহাসড়ক ৪ লেইন করতে ব্যয় হচ্ছে বেশি  

বৃহত্তর সিলেটের বাসিন্দা মান্নান বলেন, এই মহাসড়কে যাত্রী ও গাড়িচালকদের নানা সুবিধাও নিশ্চিত করা হবে।

“প্রকল্পটি নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই যে সড়কে যাওয়ার পথে যেন বিশ্রামের জায়গা থাকে, কফি খাওয়ার জায়গা থাকে। একটু বসে হাল্কা হওয়ার জায়গা থাকে। একটা সুন্দর ওয়াশরুম যেন থাকে। নারীদের চেঞ্জিং রুম ও বসার জায়গা যেন থাকে।”

ঢাকা-চট্টগ্রামসহ অন্যান্য মহাসড়কেও এই সব ব্যবস্থা রাখতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে শুরু করে আগামী ২০২৬ সালে ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পটির মাধ্যমে ভারত, চীন,মিয়ানমার, ভুটান ও নেপালসহ ছয় দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য এই টেকসই সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে বলে সরকার জানিয়েছে।

মন্ত্রী মান্নান এই প্রসঙ্গে বলেন, “অতীতে আমরা পশ্চিমের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। এখন সময় এসেছে পূর্ব দিকে তাকানোর।”

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.