Sylhet Today 24 PRINT

শফীর মৃত্যু আল্লাহর নির্দেশে, পিবিআইর তদন্ত ডাহা মিথ্যা: বাবুনগরী

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১৩ এপ্রিল, ২০২১

হেফাজত ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমির আল্লামা শাহ আহমেদ শফীর মত্যুকে অবহেলাজনিত হত্যা উল্লেখ করে তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের প্রতিবেদনকে ‘ডাহা মিথ্যা বলেছেন’ সংগঠনের বর্তমান আমির জুনায়েদ বাবুনগরী।

হাটহাজারী মাদ্রাসায় হাঙ্গামার মধ্যে শফীর মৃত্যুর পর হেফাজতের নেতৃত্বে আসা বাবুনগরীকেও পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে আসামি করা হয়েছে।

বাবুনগরীকে শফী সংগঠন থেকে বহিষ্কার করলেও, পরে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হন তার সমর্থকদের চাপের কারণে।

গত ১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসায় হাঙ্গামার পরদিন শফী একটি হাসপাতালে মারা যান। হাসপাতালে নেয়ার আগে দুই দিন বাবুনগরীপন্থিরা হামলা চালিয়েছিল। শফীর ছেলে আনাস মাদানীকে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কারের আদেশে সই করতে বাধ্য করার অভিযোগ রয়েছে।

শফীর অনুসারীরা বলছেন, হেফাজতের প্রয়াত আমিরের চিকিৎসায় বাধা দেয়া হয়েছে, তার অক্সিজেন সিলিন্ডারের নল টেনে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে, মাদ্রাসায় অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে বাধা দেয়া হয়েছে, হাসপাতালে নিতেও দেরি করতে বাধ্য করা হয়েছে।

এসব ঘটনায় শফীর শ্যালক মাঈনুদ্দীন গত ডিসেম্বর চট্টগ্রামের একটি আদালতে ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৭০ থেকে ৮০ জনকে আসামি করে চট্টগ্রামের একটি আদালতে মামলার আবেদন করেন।

বিচারক সেই আবেদন গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। সোমবার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়া হয়।

এই প্রতিবেদনে বাবুনগরীসহ মোট ৪৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। যদিও তাদের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ আনা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়নি।

তবে পিবিআইয়ের ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘নরহত্যাজনিত অপরাধ।’

এই প্রতিবেদন নিয়ে তোলপাড়ের মধ্যে মঙ্গলবার গণমাধ্যমে প্রতিবাদ পাঠান বাবুনগরী।

এতে তিনি বলেন, আল্লামা শফীর মৃত্যু নিয়ে পিবিআই যে রিপোর্ট দিয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বাস্তবতাবিবর্জিত। আমরা মনে করি এ প্রতিবেদন একটি চিহ্নিত চক্রের শেখানো বুলি। আমরা আমাদের আইনজীবীদের মাধ্যমে আদালতে এ প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি পেশ করব। এ মিথ্যা রিপোর্টের ভিত্তিতে যাদের নামে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে তা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’

তাকে আসামি করার প্রসঙ্গ টেনে আগে থেকে ১৭ মামলা আসামি বাবুনগরী বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম না এরপরও নতুন করে আমাকেসহ আরো বারোজনকে হয়রানিমূলক অন্তর্ভুক্ত করে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। এই মামলা ডাহা মিথ্যে ও হয়রানিমূলক। এর কোনো বাস্তবতা নেই।’

১০৪ বছর বয়সী শাহ আহমদ শফী গত ১৮ সেপ্টেম্বর মারা যাওয়ার দুই দিন আগে তার হাটহাজারী মাদ্রাসায় ব্যাপক হাঙ্গামা হয়।

মাদ্রাসা প্রধানের পদ থেকে সরে যাওয়া, তার ছেলে আনাস মাদানীকে চাকরিচ্যুত করাসহ হেফাজতের একাংশের ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয় ১৬ সেপ্টেম্বর। তখন শফীর খাস কামরায় হামলা হয়, ব্যাপক ভাঙচুর চলে।

শফীর খাদেম হোজাইফা আহমদের এবং তার নাতি মাওলানা আরশাদের পুস্তিকা ‘হাটহাজারীতে জীবনের শেষ তিন দিন’ এ হাটহাজারী মাদ্রাসায় হাঙ্গামা শুরু থেকে হেফাজত আমিরের মৃত্যুর বিষয়টি বিবৃত করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, ‘রাত দেড়টায় আল্লামা শফীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা বলেন দেরি হয়ে গেছে। অক্সিজেন না থাকার কারণে হুজুরের যে ক্ষতি হয়েছে, তা তাদের পক্ষে চিকিৎসা দ্বারা পূরণ করা সম্ভব নয়। পরদিন শুক্রবার দুপুর ১২টায় ডাক্তাররা বোর্ড মিটিংয়ে বসেন। তারা নাতি আরশাদকে জানান, তাদের চেষ্টা ব্যর্থ।’

বাবুনগরী তার বিবৃতিতে বলেন, ‘চট্টগ্রাম মেডিকেলের ছাড়পত্র ও ঢাকা আজগর আলী হসপাতালের ডেথ সার্টিফিকেটসহ নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণের আলোকে দেশবিদেশের সকলের নিকট প্রমাণিত হয়েছে, আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.) এর মৃত্যু আল্লাহ তায়া’লার হুকুমে স্বাভাবিক ছিল।

‘তিনি অনেকদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। রোগ বেড়ে যাওয়ায় একাধিকবার তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। সর্বশেষ আল্লাহ ইচ্ছায় তিনি মহান রবের ডাকে সাড়া দিয়ে ইন্তেকাল করেছেন।’

বাবুনগরী বলেন, ‘আল্লামা আহমদ শফী এর মৃত্যুর পর তার জ্যেষ্ঠপুত্র মাওলানা ইউসুফ ব্যাখ্যামূলক বিবৃতির মাধ্যমে বাস্তব সত্য মিডিয়ার সামনে তুলে ধরেছেন। তার বাবার মৃত্যু স্বাভাবিক হয়েছিল বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এরপরও আল্লামা আহমদ শফীর মৃত্যুর প্রায় দুই মাস পর দেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের নামে মামলা দায়ের হওয়ায় বুঝা যায় এই মামলা কতটা হাস্যকর ও ভিত্তিহীন।’

যা হয়েছিল হাটহাজারী মাদ্রাসায়

হাটহাজারী মাদ্রাসায় হাঙ্গামা বিবৃত করে ‘হাটহাজারীতে জীবনের শেষ তিন দিন’ পুস্তিকায় লেখা হয়, সেদিন শফীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করা হয়েছে, আল্লামা শফীকে ওষুধ খেতে দেয়া হয়নি, তার চিকিৎসায় বাধা দেয়া হয়েছে, হাসপাতালে নিতে অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে দেয়া হয়নি, পরে অক্সিজেনের নল ছিড়ে ফেলা হয়েছে।

আর ১৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা বলেছেন, দেরি হয়ে গেছে। পরদিন ঢাকার একটি হাসপাতালে আনার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

পুস্তিকায় আল্লামা শফীকে ‘শহীদ শাইখুল ইসলাম’ বলা হয়েছে।

হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে শফীপুত্র আনাস মাদানীকে বহিষ্কার, হেফাজতের বর্তমান আমির জুনাইদ বাবুনগরী ও অব্যাহতি দেয়া তিন শিক্ষককে ফিরিয়ে আনাসহ ছয় দফা দাবিতে ১৬ সেপ্টেম্বর জোহরের নামাজের পর বিক্ষোভ শুরু হয়।

কিছুক্ষণের মধ্যে আনাস মাদানীর কক্ষ ভাঙচুর করা হয়।

পুস্তিকা অনুযায়ী, আন্দোলনকারীদের পাঁচ জন সে সময় শফীর কার্যালয়ে যান এবং আনাসকে বহিষ্কারের জন্য চাপ দিতে থাকেন।

শফী বারবার বলছিলেন, ‘অভিযোগ লিখিত আকারে উপস্থাপন করো, আমি দস্তখত করব। কিন্তু বাবারা তোমরা এইভাবে আমার সাথে দুর্ব্যবহার করো না।’

পুস্তিকায় উল্লেখ করা হয়, কয়েকজন তখন তুই-তুকারি করে খাদেমদের গালিগালাজ করতে থাকে। আল্লামা শফীকে উদ্দেশ্য করেও অশালীন বাক্য ব্যবহার করে।

মাগরিবের নামাজের পর শফীর কক্ষের গ্লাস, ফুলের টব ভাঙচুর করা হয়।

পরে প্যাডে আনাস মাদানীর বহিষ্কারাদেশ লিখে তাতে সই দিতে শফীর নাতি দেওবন্দপড়ুয়া আসাদের গলায় গ্লাসের টুকরো ধরে বলা হয়, ‘এখন এটা দিয়ে টান মেরে ওর গলা কেটে ফেলব, জলদি দস্তখত কর এখানে।’

তখন আল্লামা শফীর চোখ দিয়ে পানি ঝরছিল।

এতেও কাজ না হওয়ায় আল্লামা শফীর ব্যক্তিগত সহকারী (খাদেম) মাওলানা শফিউল আলমকে রড দিয়ে আঘাত করা হয়, চড়-ঘুষি মারা হয়।

দ্বিতীয় দিন সকাল ১০টার দিকে মাদ্রাসার কয়েকজন শিক্ষক আহমদ শফীর সঙ্গে দেখা করতে আসেন।

এরপর ছড়ানো হয় গুজব। পাগলা ঘণ্টি বাজিয়ে ছাত্রদের জড়ো করা হয়। বলা হয়, ‘শফী সাহেব মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য মিটিং ডেকেছেন। তিনি গতকালকের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।’

মাওলানা আরশাদ জানান, আন্দোলনকারীরা শফীর কার্যালয়ে এসে শিক্ষকদের বের করে দেন। সেখানকার কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে শুরু হয় ভাঙচুর, লুটতরাজ। আহমদ শফীর সব টেবিলের গ্লাস, এসি, গ্লাসে বাঁধাই করা কাবা শরিফের গিলাফ একাধিক সম্মাননা পদক, কার্যালয়ের দরজা জানলাও ভাঙচুর করা হয়।

কার্যালয়ের বাইরে কামরার দুই দিকের গ্লাসের দরজা, নামফলক, বারান্দায় থাকা গ্লাসের সীমানা, প্রায় ১০টি জানালার গ্লাস, ৩০টির মতো ফুলের টব, বারান্দার সোফা, টেবিল, ফ্যানসহ ছোটবড় আরও অনেক আসবাবপত্রও ভাঙা হয়।

আহমদ শফীর সামনে তার খাদেমদের বেধড়ক মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে হেফাজত আমিরের অক্সিজেন সাপোর্ট খুলে নেয় আন্দোলনকারীরা।

খাদেম ও নাতিরা তাকে অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে গেলে তাদের বাধা দেয়া হয়।

সে সময় এসি বন্ধ এবং অক্সিজেন খুলে ফেলায় শফীর শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। নাতি ও খাদেমরা অনেক আকুতি-মিনতির পর বিদ্যুৎ সংযোগ ও অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে তারা রাজি হয়।

সন্ধ্যা সাতটার পর শুরা কমিটির বৈঠকে অসুস্থ হয়ে পড়েন আল্লামা শফী।

বারবার অনুরোধ করার পরও শুরা সদস্যরা বৈঠক চালিয়ে যান। আধা ঘণ্টা পর শফীর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে।তিনি বমি করেন। মুখ দিয়ে অনবরত ফেনা বের হচ্ছিল।

তখন নাতি আরশাদ ও খাদেম শফিউল আলম হামলাকারীদের পায়ে ধরেন হাসপাতালে নিতে। তারা প্রথমে বলে, চিকিৎসা করালে মাদ্রাসাতেই ব্যবস্থা করবে।

দুই নাতি ও খাদেম তখন বলেন, শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে।

পুস্তিকায় বলা হয়, ‘অ্যাম্বুলেন্সে করে আল্লামা শফীকে হাসপাতালে নেয়ার অনুরোধ করলে হামলাকারীরা বলে, তাদের আমিরের নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এখান থেকে বের করার কোনো অনুমতি নেই।

কিছুক্ষণ পর হামলাকারীরা বলে, আমিরের নির্দেশ এসেছে। তবে অ্যাম্বুলেন্স আসার আগে শফী সুস্থ আছেন বলে মিডিয়ায় ভিডিও প্রচার করতে হবে।

‘অ্যাম্বুলেন্স আসার পর আন্দোলনকারীদের একজন এসে বলে, হুজুরের সঙ্গে শুধুমাত্র একজন যেতে পারবে। তখন নাতি ও খাদেম শফিউল বলে, হজরতের সার্বিক দেখভাল একজন দ্বারা সম্ভব নয়। কমপক্ষে তিন জনকে যেতে দিন। আন্দোলনকারীরা বলে, আমরা আমাদের আমিরের সাথে কথা বলে জানাচ্ছি।’

পরে সেই আমিরের সঙ্গে ফোনে কথা বলে শফীর সঙ্গে দুই জনকে যেতে দেন হামলাকারীরা। পরে অবশ্য তিন জনকেই যেতে দেয়া হয়।

এই আমির কে, সেই বিষয়টি এখনও জানেন না মাওলানা আরশাদ।

পুস্তিকায় বলা হয়, অ্যাম্বুলেন্সটি মাদরাসার শাহী গেট দিয়ে ঢুকতে বাধা দিয়ে কবরস্থানের গেট সংলগ্ন বাইতুল আতিক মসজিদের সামনে রেখে দেয়া হয়। ফলে আল্লামা শফীকে অ্যাম্বুলেন্সে উঠাতে আরও দেরি হয়।

স্ট্রেচারে নিয়ে যাওয়ার সময় শফীর মুখে অক্সিজেন লাগানো ছিল। সেটি টান দিয়ে বারবার খুলে ফেলা হচ্ছিল। একপর্যায়ে ছিড়ে ফেলা হয়। পরে অক্সিজেন ছাড়াই তাকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়।

অ্যাম্বুলেন্স ছাড়ার সময় শফীর খাদেম হোজাইফাকে টেনেহিঁচড়ে মারধর করে নামিয়ে দেযা হয়। তখন নাতি আরশাদ একাকী রওনা হন। তখন হামলাকারীরা নতুন দাবি নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখে।

তারা বলতে থাকে, স্থানীয় এমপি ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে এসে সই দিতে হবে যে, ভবিষ্যতে আন্দোলনকারীদের কোনো ক্ষতি হবে না। তা না হলে অ্যাম্বুলেন্স যেতে দেয়া হবে না।

পুস্তিকায় বলা হয়, ‘এভাবে আরও ৪৫ মিনিট সময় অতিবাহিত হয়। তখনই অক্সিজেন না পাওয়ায় হুজুর একেবারে নিস্তেজ হয়ে পড়েন। সেখানে দায়িত্ব পালনরত ওসি সাহেবের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের মিটিং হয়। মিটিংয়ের আলোচনা অজানা। মিটিং শেষ হলে হজরতের অ্যাম্বুলেন্স ছেড়ে দিতে মসজিদের মাইকে কয়েকবার ঘোষণা দেয়া হয়। এরপর অ্যাম্বুলেন্স ছেড়ে দেয়া হয়। পুলিশি পাহারায় অ্যাম্বুলেন্স চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছে।’

পরদিন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল থেকে আল্লামা শফীকে ঢাকার আসগর আলী হাসপাতালে আনা হলে সেখানেই মারা যান হেফাজতের আমির।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.