Sylhet Today 24 PRINT

রোজায় করোনা টিকা নেওয়া যাবে: মীরজাদী সেব্রিনা

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১৪ এপ্রিল, ২০২১

লকডাউন, রোজা, দ্বিতীয় ডোজ এবং করোনামুক্ত হওয়ার কত দিনের মাথায় টিকা নেওয়া যাবে—এ ধরনের নানা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বুধবার (১৪ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে রোজায় টিকা নেওয়া বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, রোজায় টিকা নেওয়া যাবে কি না, এ বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কাছে পরামর্শ চাওয়া হয়েছিল। তারা জানিয়েছে, রোজার মধ্যে টিকা নিতে কোনো বাধা নেই। সৌদি আরবসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশেও টিকা কার্যক্রম চলছে।

লকডাউন চলাকালে দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া নিশ্চিতে কি করতে হবে, তা জানিয়েছেন মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, সবাই টিকা পাবে। কোনো দ্বিধা নেই। লকডাউনে টিকা কার্যক্রম চলবে। টিকা কার্ড সঙ্গে থাকলে টিকা নিতে যাওয়া যাবে। যারা করোনা প্রতিরোধে টিকার প্রথম ডোজ যে কেন্দ্র থেকে নিয়েছিলেন, সেখান থেকেই দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ডোজের জন্য এসএমএস পাওয়ার পর সেন্টারে গিয়ে টিকা নিতে হবে।

তিনি বলেন, লকডাউনে যারা টিকাকেন্দ্র থেকে দূরে অন্য এলাকায় থাকছেন, তাদের দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া বিষয়ে মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ৮ সপ্তাহ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিতে হবে। ৮ সপ্তাহ যাদের হয়েছে, তাদের শঙ্কিত বা উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। ১২ সপ্তাহের মধ্যে নিলেই হবে। যদি লকডাউন দীর্ঘায়িত হয় তখন টিকা কীভাবে দেওয়া হবে, সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবে।

করোনামুক্ত হলে কত দিন পরে টিকা নেওয়া যাবে এ বিষয়ে মীরজাদী জানান, করোনা নেগেটিভ হওয়ার এক মাস পর টিকা নেওয়া যাবে। প্রথম ও দ্বিতীয়—দুই ডোজের ক্ষেত্রেই এই সময় প্রযোজ্য।

সবার টিকা পাওয়া নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করছে বলে জানান মীরজাদী সেব্রিনা। তিনি বলেন, কোভ্যাক্সের সঙ্গে ২০ শতাংশ মানুষের জন্য টিকা পাওয়ার একটি চুক্তি রয়েছে। যেকোনো সময়ে তা আসবে। রাজস্ব খাত থেকে যে তিন কোটি ডোজ কেনা হয়েছে, তা পর্যায়ক্রমে আসছে। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংকের একটি প্রকল্পে ৫০০ মিলিয়ন ডলার রাখা হয়েছে টিকা কার্যক্রমের জন্য। এডিবির সঙ্গেও আরেকটি ৯৪০ মিলিয়ন ডলারের কাজ হচ্ছে। সরকার শুধু অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ওপর নির্ভর না করে অন্যান্য দেশ যারা টিকা বানাচ্ছে, সেখান থেকে আনা যায় কি না, সেই চেষ্টাও করছে। এ ছাড়া দেশীয়ভাবে কোনো প্রতিষ্ঠান যদি টিকা প্রস্তুত করতে পারে, সে বিষয়েও ভাবা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনার প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে ৫৬ লাখ ৭৬ হাজার ৩১৩ জনকে। আর ৭ লাখ ৩৩ হাজার ১৭৫ জনকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। দুই ডোজের টিকা দেওয়া চলমান। এ ছাড়া জানানো হয়, যারা অফিশিয়াল কাজের জন্য এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় বদলি হয়েছেন, তাদের দ্বিতীয় ডোজ পাওয়ার ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছে।

করোনার চিকিৎসায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও কিছু তথ্য দিয়েছে। করোনার জন্য সারা দেশে শয্যা আছে ৭ হাজার ৪২০টি, আইসিইউ ৪১১টি, ভেন্টিলেটর ৪৪২টি, অক্সিজেন সিলিন্ডার আছে ১৬ হাজার ৪৯৮টি, হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা ৬৩৬টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর আছে ৪৬৭টি। করোনা ছাড়াও অন্যান্য নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচি এখনো চলছে। করোনা পরীক্ষা নিয়ে সমস্যা হলে অ্যান্টিজেন টেস্ট করানোর পরামর্শও দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার খুরশীদ আলম জানান, এখন থেকে সপ্তাহে দুই দিন করোনা বুলেটিন সরাসরি প্রচার করা হবে। অধিদপ্তরের দুজন মুখপাত্র সেখানে নিয়মিত অগ্রগতিসহ বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোলের (এনসিডিসি) পরিচালক মোহাম্মদ রোবেদ আমিন, অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও রোগতত্ত্ব বিভাগের পরিচালক নাজমুল ইসলাম, পরিচালক (এমআইএস) মিজানুর রহমান, অধিদপ্তরের মাতৃ, নবজাতক ও শিশুস্বাস্থ্য কর্মসূচির পরিচালক শামসুল হকসহ প্রমুখ।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.