Sylhet Today 24 PRINT

শিল্প-কারখানা খোলার ঘোষণায় ফেরি ঘাটে মানুষের ঢল

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ৩১ জুলাই, ২০২১

চলমান কঠোর লকডাউনের মধ্যে ১ আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা খুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের পর ঢাকামুখী মানুষের ঢল নেমেছে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে।

শনিবার (৩১ জুলাই) ভোর থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া এবং শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে চলাচলকারী প্রতিটি ফেরিতে মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। গাদাগাদি করে মানুষ পদ্মা পার হচ্ছেন ফেরিতে করে। তাদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। যে যেভাবে পারছেন ফেরিতে করে পদ্মা পার হচ্ছেন।

করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ হারের কারণে কোরবানি ঈদের আগের লকডাউনের বিধিনিষেধের মধ্যে জরুরি ছাড়া সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও শিল্প কারখানা চালু ছিল। সংক্রমণ না কমায় ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোর লকডাউনে শিল্প কারখানা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সব ধরনের অফিস আদালতও বন্ধ রাখা হয়, যা চলবে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত।

ঈদের ছুটিতে যারা গ্রামে গিয়েছিলেন, তাদের ৫ আগস্টের আগে না ফিরতে অনুরোধ করেছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

করোনার সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে এতদিন শিল্প কারখানা বন্ধ রাখার বিষয়ে সরকার অনড় ছিল। কিন্তু তৈরি পোশাক শিল্পসহ সব ধরনের শিল্প কারখানা খুলে দিতে সরকারের উচ্চ মহলে বারবার অনুরোধ করছিলেন শিল্পমালিকরা। আন্তর্জাতিক বাজার হারানোর শঙ্কা, সাপ্লাই চেইন ভেঙে পড়া, বন্দরে জট, সার্বিক অর্থনীতিসহ সবকিছু বিবেচনা নিয়েই তারা এ অনুরোধ জানাতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান।

একই অনুরোধ জানিয়েছিল পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ। এমন অবস্থার মধ্যে ১ আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা খোলা রাখার অনুমোদন দেয় সরকার।

সরকারের এমন সিদ্ধান্তের পর ঈদে বাড়ি যাওয়া তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকরা ঢাকামুখী হতে শুরু করেছেন। শনিবার সকাল থেকে পাটুরিয়া ঘাট দিয়ে ঢাকায় ফিরতে দেখা গেছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাজারো মানুষকে। তারা যে যেভাবে পারছেন ফেরিতে করে ঢাকায় ফিরছেন। দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়া ঘাটে ছেড়ে আসা প্রতিটি ফেরিতেই যাত্রীর ভিড় দেখা গেছে। ঘাটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও বন্ধ রয়েছে লঞ্চ চলাচল।

এদিকে সড়ক-মহাসড়কে গণপরিবহন না চলায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। বিকল্প উপায়ে বিভিন্ন যানে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে ভেঙে ভেঙে কর্মস্থলে ফিরছেন মানুষ। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় পাটুরিয়া ঘাট থেকে প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ও সিএনজিতে জনপ্রতি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। আবার অনেকে যানবাহন না পেয়ে পায়ে হেঁটে রওনা দিয়েছেন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে।

আরিচা অফিসের বিআইডব্লিউটিসির ডিজিএম জিল্লুর রহমান বলেন, কারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণায় সকাল থেকে ঢাকায় ফেরা মানুষের ঢল পড়েছে। এই নৌ-রুটে ৭টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। কালকের পর এই চাপ কমে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পাটুরিয়ার মতো শিমুলিয়া ঘাটেও মানুষের ভিড় দেখা গেছে। করোনা মহামারির কারণে চলাচলে বিধিনিষেধ থাকায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে লঞ্চ, স্পিডবোট ও ট্রলার চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের চাপ বেড়েছে ফেরিতে। বাংলাবাজার ঘাট থেকে যেসব ফেরি ঘাটে আসছে তাতে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই পারাপার হচ্ছেন ঢাকামুখী যাত্রীরা।

বিআইডব্লিটিসির শিমুলিয়া ঘাটের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ঘাটে অল্প কিছু যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী যাত্রীর চাপ কম। তবে বাংলাবাজার ঘাটে প্রচুর যানবাহন অপেক্ষমাণ আছে। সেখান থেকেই যে ফেরিগুলো আসছে, তাতে প্রচণ্ড যাত্রী চাপ রয়েছে। আগামীকাল থেকে গার্মেন্টস খোলা থাকার কারণে এই চাপ বেড়েছে। দুই দিন পর চাপ কমে যাবে বলে আশা করছেন তিনি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.