Sylhet Today 24 PRINT

‘গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ব্ল্যাকমেইল করতেন হেলেনা জাহাঙ্গীর’

সিলেটটুডে ডেস্ক: |  ৩১ জুলাই, ২০২১

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ৩ দিনের রিমান্ডে থাকা আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার হওয়া বিতর্কিত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীর মুখ খুলতে শুরু করেছেন। রাজধানীর গুলশান থানায় দায়ের করা মামলায় রিমান্ডে থাকা হেলেনা ইতিমধ্যে বেশকিছু বিস্ফোরক ও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন।

বিতর্কিত এই ব্যবসায়ী রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে প্রথমে সখ্যতা গড়ে পরে তাদের ব্ল্যাকমেইল করতেন। এরপর ভিকটিমদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতেন বলে জানা গেছে।

শনিবার দুপুরে র‌্যাব সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘ব্ল্যাকমেইল করে তাদের (রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) কাছ থেকে টাকা আদায় করার তথ্য আমরা পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘হেলেনা সুনির্দিষ্ট একজন ব্যক্তির জন্য থেমে থাকেননি। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে পরিচয় ঘটেছে তার। উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য যাকেই প্রয়োজন হয়েছে, তাকে তিনি ব্যবহার করেছেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলেছেন এবং সেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছেন উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য। আমাদের মামলার কারণ এটাই। তিনি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন, যা তাদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে।’

আল মঈন বলেন, ‘আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে, মামলাটি র‌্যাব তদন্ত করবে, তাহলে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা আবেদন করব। তবে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘হেলেনা জাহাঙ্গীরের স্বামী ১৯৯০ সালে গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। পরবর্তীকালে বিভিন্ন সময়ে অন্যদের সঙ্গে পার্টনারশিপে ব্যবসা শুরু করে এখন পর্যন্ত পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি। আমরা জানতে পেরেছি, গত দুই বছরে বিভিন্ন মাধ্যম এবং টেলিভিশনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে, এজেন্সি দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা আদায় করতেন হেলেনা। এসব তার অফিস স্টাফদের ওপর চাপিয়েছেন। বাসা এবং অফিস থেকে যে পরিমাণ ভাউচার পাওয়া গেছে, তা এখনও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। জয়যাত্রা টেলিভিশনের আইডি কার্ড ব্যবহার করে অনেক প্রতিনিধিও এ চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।’

মঈন আরও বলেন, ‘হেলেনা আমাদের জানিয়েছেন, তার ১৫ থেকে ১৬টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি ফাউন্ডেশনের সঙ্গে তিনি জড়িত। বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজি কিংবা ব্ল্যাকমেইল করে আদায় করা টাকাগুলো তিনি ফাউন্ডেশনের কাজে লাগাতেন। সুনামগঞ্জে তিনি ত্রাণ বিতরণ করায় স্থানীয়রা তাকে পল্লীমাতা উপাধি দিয়েছেন। ফাউন্ডেশনের নামে প্রবাসীদের কাছ থেকে অনেক টাকা এনেছেন। এগুলো কী কাজে ব্যবহার করা হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদে ফ্ল্যাট কিংবা গাড়ির সংখ্যা কতগুলো, সে বিষয়ে প্রকৃত কোনো তথ্য আমাদের দিতে পারেননি হেলেনা। কখনও ছয়টি গাড়ি, কখনও আটটি গাড়ির কথা বলছেন। এসব বিষয়ে যারা তদন্ত করবেন, তারা খতিয়ে দেখবেন।’

‘আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামে একটি সংগঠনকে কেন্দ্র করে বিতর্কে আসার পর আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটির পদ হারান হেলেনা জাহাঙ্গীর। এরপর তার বাসায় দীর্ঘ প্রায় চার ঘণ্টা অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযান শেষে তাকে আটক করা হয়। অভিযানে তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, অবৈধ ওয়াকিটকি সেট, ক্যাসিনো সরঞ্জাম ও হরিণের চামড়া জব্দ করা হয়।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.