Sylhet Today 24 PRINT

আন্দোলনের ভয়ে বিশ্ববিদ্যালয় না খোলার দাবি ‘হাস্যকর’: শিক্ষামন্ত্রী

সিলেটটুডে ডেস্ক: |  ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আন্দোলনের ভয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হচ্ছে না এমন দাবি ‘হাস্যকর’ বলে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তো সারাজীবন আন্দোলন করেছে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছে। কারা তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে? জনবিচ্ছিন্নদের আন্দোলন নিয়ে আওয়ামী লীগ ভয় পাবে-এটা হাস্যকর।’

বুধবার জাতীয় সংসদে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিলের বিষেয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

করোনাকালে বিশ্ববিদ্যালয় সরাসরি পাঠদান বন্ধ থাকলেও অনলাইনে ক্লাস চালুর বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল তা সঠিক নয়। শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধ ছিল। তবে টেলিভিশন ও অনলাইনের মাধ্যমে পাঠাদান পুরোপুরি চলমান ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে পাঠদান চলছে। আর পরীক্ষাও চলেছে। সরকারি ও বেসরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয়ই চলেছে। খুব একটা সেশনজটেরও সুযোগ নেই। খুব সহজে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে।’

তিনি বলেন, ‘পিএসসি ও জেএসসি নিয়ে এক্সপেরিমেন্টের ব্যাপার নেই। নতুন শিক্ষাক্রমে যাওয়া হচ্ছে। সেই অনুযায়ী যেটা যুগোপযোগী ঠিক সেভাবেই করা হবে। এনটিআরসি নিয়োগে পুলিশ ভেরিফিকেশন এখন খুবই প্রয়োজনীয় বিষয়। এখন জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসসহ নানা রকমের সমস্যা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেভাবে জাল বিস্তার করছে। সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে সজাগ ও সতর্ক থাকা উচিত।’

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৬ ভাগ শিক্ষার্থী বেকার থাকেন এমন পরিসংখ্যান নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সারাদেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যে কলেজগুলো রয়েছে সেখানে জনপ্রতিনিধিদের কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বাধ্য হয়েছে দীর্ঘদিন একবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেখানে অনার্স ও মাস্টার্স করার অবকাঠামো নেই, শিক্ষক নেই, যোগ্যতা সম্পন্ন অনার্স-মাস্টার্স খুলে যত্রতত্র সনদ দেওয়ার। তার জন্য জনপ্রতিনিধিরাই অধিকাংশ দায়ী। এই খারাপ দিক কাটিয়ে উঠার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করছে। অনেকগুলো শতবর্ষী প্রতিষ্ঠান আছে, অনেকগুলো খুবই ভালো প্রতিষ্ঠান আছে। সেগুলো ছাড়া আর বাকিগুলোতে মাস্টার্সের বিষয় থাকবে না। সেখানে অনার্স থাকবে, বিএ, বিএসসি, বিকম সেগুলো থাকবে। ডিপ্লোমা করানো হবে। যাতে তারা বিভিন্ন কর্মে যুক্ত হতে পারেন।’

মন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিতে সংসদ সদস্যদের সভাপতিত্বের মামলাটি এখনও বিচারধীন। কোর্টের মামলার বিষয়ে কিছু বলার নেই। আইনমন্ত্রী ও অ্যার্টনি জেনারেলের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ হয়েছে। তারা আশ্বস্ত করেছেন যে বিষয়টি দেখবেন।’

শিক্ষার মান সম্পর্কে বিরোধী দলীয় সংসদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার মান নিয়ে আমাদের প্রায়শ প্রশ্ন করা হয়। কিন্তু আমাদের এখান থেকে পাস করে দেশে ও বিদেশে যে সাফল্য আমরা দেখি তাতে শিক্ষার মান তলিয়ে গেছে এই কথাটি বলার সুযোগ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মানসম্পন্ন নন এই কথাগুলোও আসে না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ভিসি নিয়োগ দেওয়ার সময় অনেকগুলো বিষয় সামনে আনা হয়। তার একাডেমিক এক্সিলেন্স, প্রশাসনিক দক্ষতা ও নেতৃত্বের গুণাবলী দেখা হয়। সবকিছু দেখে আমরা প্যানেল নির্ধারণ করি। তারপর সেটা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যায়, সেখানেও যাচাই-বাছাই করা হয়। তারপরে সেটা রাষ্ট্রপতির কাছে যায়। দীর্ঘ ভেটিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা চূড়ান্ত করা হয়। এখন পর্যন্ত যে অভিযোগ এসেছে তা খুব হাতেগোনা।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক সময় দেখা যায় ভিসির মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে। তখন অনেকেই নতুন ভিসি হতে চান। সেকারণে যিনি দায়িত্বে থাকেন তার সময়কাল নিয়ে প্রশ্ন তোলবার জন্য নানা কথা তুলে ধরা হয়। কিন্তু কোনো জায়গায় কোনো অভিযোগ আসলে আমরা ইউজিসির মাধ্যমে তদন্ত করি।’

তিনি বলেন, ‘চাকরি প্রার্থী বলেন তিনি চাকরি পান না। আর দাতা বলেন, তিনি যোগ্য লোক খুঁজে পাচ্ছেন না। দুটোর মাঝে যে দূরত্ব সেটা দূর করার জন্য আমরা সফট স্কিল শিখানোর কাজ করছি।’

শিক্ষক নিয়োগের অনিয়ম প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষক নিয়োগের ন্যূনতম যোগ্যতার একটি নীতিমালা করে দেওয়া হয়েছে ইউজিসির মাধ্যমে। ইউজিসির সক্ষমতার বৃদ্ধির জন্যও কাজ করছি। আশা করি খুব শিগরিই এটা সংসদে উঠবে।’

স্কুল-কলেজ সরকারিকরণের প্রক্রিয়া দীর্ঘ উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, ‘এই প্রক্রিয়াটি খুবই জটিল। দীর্ঘদিন আগে তারা (শিক্ষক) নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাদের নিয়োগের সঠিক কাগজপত্র অনেক জায়গায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারিকরণ করা হবে বলার পরে অনেক জায়গায় অনিয়ম করার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। এটি সঠিকভাবে করার জন্য আমরা জনবল নিয়োগ করে সেটি দ্রুততার সঙ্গে শেষ করতে চাচ্ছি। কাগজের প্রয়োজনীয়তা যত পারি কমানোর চেষ্টা করছি।’

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.