Sylhet Today 24 PRINT

অনলাইনে ডায়াপার বিক্রি দিয়ে যাত্রা শুরু করেন রাসেল

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আলোচিত-সমালোচিত ই-কমার্স প্লাটফর্ম ইভ্যালি। আকর্ষণীয় মূল্য ছাড়ের পাশাপাশি ক্যাশব্যাকের অফার দিয়ে আলোড়ন তৈরি করে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার মোহাম্মদ রাসেল গ্রাহকদের আস্থা ফেরাতে নানা উদ্যোগের কথা বললেও শেষ পর্যন্ত কথা রাখতে পারেননি। তাই প্রতারণার মামলা হলে গ্রেপ্তার করা হয় রাসেল এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে।

বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে মোহাম্মদপুরের নিলয় কমপ্রিহেনসিভ হোল্ডিংয়ের বাসায় অভিযান চালিয়ে রাসেল ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

জানা যাচ্ছে, ইভ্যালির সিইও মোহাম্মদ রাসেল রাজধানীর রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০১১ সালে ঢাকা ব্যাংকে চাকরি নেন তিনি। চাকরির পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ করেন রাসেল। ছয় বছর পর ঢাকা ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে অনলাইনে পণ্য বেচাকেনার ব্যবসা শুরু করেন।

২০১৬ সালে প্রথমে অনলাইনে ডায়াপার বিক্রি দিয়ে যাত্রা শুরু করেন রাসেল। ২০১৭ সালে এই ব্যবসা করতে গিয়ে বড় একটি অনলাইন প্লাটফর্মের কথা চিন্তা করেন। সেই চিন্তা থেকেই ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে মোহাম্মদ রাসেল ইভ্যালি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রায় ১৭ লাখ নিয়মিত ক্রেতা, ২০ হাজারের বেশি বিক্রেতা নিয়ে বাংলাদেশের ই-কমার্স খাতে স্বল্প সময়ে প্রথম সারিতে উঠে আসে ‘ইভ্যালি’। এশিয়ার মধ্যে স্বল্প সময়ে দ্রুতবর্ধনশীল ই-কমার্স স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি ও বিজনেস লিডার হিসেবে অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন মোহাম্মদ রাসেল।

মোটরসাইকেল, গাড়ি, মোবাইল, ঘরের সরঞ্জাম এবং আসবাবপত্রের মতো উচ্চমূল্যের পণ্যে লোভনীয় ছাড় দেয় ইভ্যালি। প্রতিষ্ঠার শুরুতে সাইক্লোন, আর্থকোয়েক ইত্যাদি নামে তারা ক্রেতাদের ১০০ শতাংশ ও ১৫০ শতাংশ ক্যাশব্যাকের মতো অত্যন্ত লোভনীয় অফার দেয়। ইভ্যালির ব্যবসার এ কৌশলের ফলে মানুষের মধ্যে উদ্দীপনা সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি অনেক সমালোচনারও সৃষ্টি হয়। বিশাল অফার, ছাড়ের ছড়াছড়ি আর ক্যাশব্যাকের আকর্ষণ দিয়ে ক্রেতা বাড়ানোর কৌশল নিয়ে সফল হলেও প্রতিষ্ঠানটি এখন গ্রাহক ভোগান্তির শীর্ষে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে ইভ্যালির ‘সম্পদের চেয়ে ছয় গুণ বেশি দেনা’ বলে তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনে উঠে আসে ইভ্যালির মোট দায় ৪০৭ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম নিয়েছে ২১৪ কোটি টাকা, আর মার্চেন্টদের কাছ থেকে বাকিতে পণ্য নিয়েছে ১৯০ কোটি টাকার। ফলে গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে ই-ভ্যালির দায় ৪০৪ কোটি টাকা। কিন্তু সম্পদ আছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকার।

এছাড়া গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছ থেকে গত ১৪ মার্চ পর্যন্ত ইভ্যালির নেওয়া অগ্রিম ৩৩৯ কোটি টাকার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এ টাকা আত্মসাৎ বা অবৈধভাবে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। পরে গত ১৯ আগস্ট বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে সম্পদ ও দা‌য়ের হিসাব দেয় ইভ্যালি। প্র‌তিষ্ঠানটি জানায়, তার নিজের ব্র্যান্ড মূল্য ৪২৩ কোটি টাকা। গত ১৫ জুলাই পর্যন্ত তাদের মোট দায় ৫৪৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে এক কোটি টাকা শেয়ারহোল্ডার হিসেবে কোম্পানির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল কোম্পানিকে দিয়েছেন। বাকি ৫৪৩ কোটি টাকা হচ্ছে কোম্পানিটির চলতি দায়।

ইভ্যালি জানায়, দায়ের বিপরীতে তাদের চলতি সম্পদ রয়েছে ৯০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। আর সম্পত্তি, স্থাপনা ও যন্ত্রপাতি মিলিয়ে রয়েছে ১৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। সব মি‌লি‌য়ে স্থাবর সম্পত্তি দাঁড়ায় ১০৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। মোট দায় ৫৪৪ কোটি টাকা থেকে স্থাবর সম্পত্তি ১০৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বাদ দিলে বাকি থাকে ৪৩৯ কোটি টাকা, যাকে ইভ্যালি বলছে তার অস্থাবর সম্পত্তি।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.