Sylhet Today 24 PRINT

‘ক্রেতা সেজে’ স্ত্রী তথ্য সংগ্রহ করেন, স্বামী করেন চুরি

সিলেটটুডে ডেস্ক: |  ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

মুক্তা আক্তার কখনো ক্রেতা, কখনো আবার সেবাগ্রহীতা সেজে ঘুরেন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার কর্পোরেট অফিস। ওইসব অফিস ঘুরে খোঁজখবর নেন মুক্তা। তথ্য সংগ্রহ করে তা পৌঁছে দেন স্বামী শফিক ভূইয়ার কাছে। এরপর স্ত্রীর দেওয়া 'গোয়েন্দা তথ্যের' ভিত্তিতে শফিক দলবল নিয়ে সেখানে চুরি করেন।

উত্তরার একটি কর্পোরেট অফিসে চুরির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে এই চক্রের সন্ধান পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

এরপর সোমবার অভিযান চালিয়ে রাজধানীর ডেমরা ও কুমিল্লা জেলা থেকে শফিক-মুক্তাসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।

শফিক ও মুক্তা ছাড়া গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন জামাল উদ্দিন, জসিম উদ্দীন, কাদের কিবরিয়া ওরফে বাবু, মো. শাকিল এবং আলামিন। তাদের কাছ থেকে হাতুড়ি, লোহার রেঞ্জ, ব্লেড, প্লায়ার্স, স্ক্রু ড্রাইভার, ২০টি সিম কার্ডসহ চুরি কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

মঙ্গলবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে ওই চোর চক্রটিকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ডিবি কর্মকর্তারা।

সেখানে সংস্থাটির যুগ্ম কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ডিবি-দক্ষিণ) মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘উত্তরার প্যারাডাইস টাওয়ারে একটি অফিসে চুরির ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে এই চক্রটির সন্ধান পাওয়া যায়। এরা এর আগে চট্টগ্রামের বন্দরে বিভিন্ন সরঞ্জাম চুরি করত। কয়েক বছর আগে তারা ঢাকায় চলে আসে। এরপর নানা অফিসে চুরি করে আসছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘চক্রটি সেবা গ্রহীতার বেশে প্রথমে টার্গেট করা অফিসকে ২ থেকে ৩ দিন ধরে রেকি করার মাধ্যমে চুরির পরিকল্পনা সাজাতো। টার্গেট করা অফিসের তালা, সিকিউরিটি লক, ডিজিটাল লক ও অফিস কক্ষের ড্রয়ার ভেঙ্গে মূল্যবান মালামাল ও টাকা পয়সা চুরি করে কৌশলে বের হয়ে চলে যায়।’

ডিবি কর্মকর্তারা জানান, তারা সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্নেষণ করে দেখেছেন, গ্রেপ্তার গ্রুপটি আদাবর টাওয়ারের চতুর্থ তলার এপপার্ট গ্রুপে, কাকরাইল নাসির উদ্দিন টাওয়ারের ১০ম তলায় আমিন গ্রুপে, গুলশান জব্বার টাওয়ারের ১৯ তলায় এসিউর গ্রুপে, বাড্ডা রূপায়ন টাওয়ারের ষষ্ঠ তলায় সফট লিংক কোম্পানীতে ও সপ্তম তলায় এপজিবল কোম্পানীর অফিসে চুরি করেছে বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে।

ওই অভিযানে থাকা ডিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন এলাকার কর্পোরেট অফিসে চুরি করার টার্গেট করে চক্রের নারী সদস্য মুক্তা দুই-তিন দিন ওই অফিস ও আশপাশের এলাকা ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করতেন। টার্গেট করা অফিসের নিরাপত্তাব্যবস্থা কেমন, কোনো দিক দিয়ে ওই অফিসে ঢুকতে হবে, চুরির পর কীভাবে সেখান থেকে নিরাপদে বেরিয়ে আসতে হবে-এসব তথ্য তিনি স্বামী শফিককে জানাতেন। এ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ওই অফিসে চুরি করতেন চক্রের সদস্যরা। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে জামালের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে ১০টি ও ঢাকায় ৪টি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া চক্রের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.