Sylhet Today 24 PRINT

প্ররোচনা ছাড়া কুমিল্লার ঘটনা ঘটেছে আমরা মনে করি না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ২১ অক্টোবর, ২০২১

কুমিল্লার পূজামণ্ডপের ঘটনাটি ‘কারো’ প্ররোচনায় হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমরা যতটুকু দেখেছি, তিনি কোরআন শরিফ রেখে গদা কাঁধে করে নিয়ে এসেছেন। এই লোকটি কার প্ররোচনায়, কার নির্দেশে, কীভাবে কাজটি করল—পরিকল্পনা অনুযায়ী করেছে; একবার গেছে আবার এসেছে আবার গেছে। ২-৩ বার আসা-যাওয়ার মধ্যে সে এই কাজটি শেষ করেছে। এটা নির্দেশিত হয়ে বা কারো প্ররোচনা ছাড়া কাজটি করেছে বলে এখনো আমরা মনে করি না। তাকে ধরতে পারলে বাকি সব কিছু আমরা উদ্ধার করতে পারবো বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

মূল হোতার নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘মূল হোতা মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন না, এর ফলে তার অবস্থানও জানা যাচ্ছে না। হয়তো যারা তাকে পাঠিয়েছিল তারা তাকে লুকিয়ে রাখতে পারে। আমরা মূল হোতাকে চিহ্নিত করেছি।’

কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দিঘিরপাড়ের পূজামণ্ডপে গত ১৩ অক্টোবর ভোরে হনুমানের মূর্তির ওপর পবিত্র কোরআন শরিফ পাওয়ার পর ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। ওই মণ্ডপের পাশাপাশি আক্রান্ত হয় নগরীর আরও বেশ কিছু পূজামণ্ডপ। পরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায়।

দুর্গাপূজার সময় এবং পরে দেশের কয়েকটি জেলায় যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা দেখা গেছে সেগুলোকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যা ঘটেছে বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কারও মধ্যে কোনো আতঙ্ক নেই। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে, নিয়ন্ত্রণে আছে।’

সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং তদন্ত সংশ্লিষ্টদের তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার জানা যায়, নানুয়ার দিঘির পাড়ের পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রেখেছিলেন ইকবাল হোসেন নামের স্থানীয় এক যুবক। সহিংসতার আগের রাতে তিনি কোরআনটি নিয়েছিলেন মণ্ডপের পাশের শাহ আবদুল্লাহ গাজীপুরি (রা.)-এর মাজারের মসজিদের বারান্দা থেকে।

ইকবাল রাত ২টা ১০ মিনিটের দিকে কোরআন শরিফটি হাতে নিয়ে মণ্ডপের দিকে রওনা হন। এরপর মূল মণ্ডপের বাইরে পূজার থিম হিসেবে রাখা হনুমানের মূর্তির ওপর কোরআন রেখে ফিরে আসেন। এসব দৃশ্য ধরা পড়েছে ওই এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরায়।

নানুয়ার দিঘির পাশেই শাহ আবদুল্লাহ গাজীপুরি (রা.)-এর মাজারটির অবস্থান। মণ্ডপ থেকে হেঁটে যেতে সময় লাগে ২ থেকে ৩ মিনিট। দারোগাবাড়ী মাজার নামে কুমিল্লাবাসীর কাছে ব্যাপকভাবে পরিচিতি রয়েছে মাজারটির। এই মসজিদের বারান্দায় তিলাওয়াতের জন্য রাখা থাকে বেশ কয়েকটি কোরআন শরিফ। রাত-দিন যেকোনো সময় যে কেউ এখানে এসে তিলাওয়াত করতে পারেন।

ইকবালের বিষয়ে জানতে বুধবার রাতে দারোগাবাড়ী জামে মসজিদের পেশ ইমাম ইয়াসিন নূরীকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে সিসিটিভি ফুটেজ দেখিনি।’

মণ্ডপে সহিংসতার আগের রাতে তিনি কোরআন শরিফটি হাতে নিয়ে মণ্ডপের দিকে রওনা হন। এরপর মূল মণ্ডপের বাইরে পূজার থিম হিসেবে রাখা হনুমানের মূর্তির ওপর কোরআন রেখে ফিরে আসেন ইকবাল। এসব দৃশ্য ধরা পড়েছে ওই এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরায়।

প্রধান অভিযুক্ত ইকবালের সহযোগী হিসেবে অন্তত চারজন এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মনে করছে, ইকবাল গ্রেপ্তার হলেই এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.