Sylhet Today 24 PRINT

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি: আ.লীগের পদ হারালেন আব্বাস

সিলেটটুডে ডেস্ক: |  ২৪ নভেম্বর, ২০২১

রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীকে পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বুধবার বিকেলে পবা উপজেলা আওয়ামী লীগ এ সিদ্ধান্ত নেয়। একই সঙ্গে তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ এবং চূড়ান্ত বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইয়াসিন আলী জানান, এক জরুরি বৈঠকে কাটাখালী পৌরসভার আহ্বায়ক পদ থেকে আব্বাস আলীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারলে তাকে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠানো হবে। কেন্দ্র তাকে চূড়ান্ত বহিষ্কার করবে।

এ বিষয়ে রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল সমকালকে বলেন, 'আব্বাস আলীর মন্তব্য সংগঠনের আদর্শ ও চেতনা পরিপন্থি। তাকে শোকজ করার জন্য জেলা আওয়ামী লীগকে চিঠি দিতে বলেছি। এরপর সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

এদিকে, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবদুল মোমিন। মঙ্গলবার রাতে বোয়ালিয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়।

বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, 'ডিজিটাল মাধ্যমে ইচ্ছাকৃতভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে প্রপাগান্ডা, মিথ্যা তথ্য প্রকাশ ও প্রচার, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে এমন বাক্য উচ্চারণ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটানোর উপক্রম সৃষ্টির অভিযোগে কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করা হয়েছে। মামলায় আব্বাস আলীকে একক আসামি করা হয়েছে।' তিনি আরও বলেন, 'আসামি আব্বাস আত্মগোপনে রয়েছেন।'

এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া ও চন্দ্রিমা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরও দুটি এজাহার জমা দেওয়া হয়েছে। তবে এ ঘটনায় একটি মামলা রেকর্ড হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

মহানগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, তিনটি অভিযোগ হলেও ঘটনা একই। তাই একটি মামলা নেওয়া হয়েছে। অন্য দুটি অভিযোগ এ মামলায় যুক্ত হবে। আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করবে। তবে যেহেতু জনপ্রতিনিধি, তাই তাকে গ্রেপ্তারের অনুমতি চেয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

আব্বাসকে গ্রেপ্তার ও তার শাস্তির দাবিতে গতকাল দিনভর নানা কর্মসূচি পালন করেছে বীর মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগ ও সাবেক ছাত্রলীগ ফোরামসহ বিভিন্ন সংগঠন। সকালে রাজশাহীর সাহেববাজারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধারা বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তিকারী মেয়র আব্বাস আলীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানান। না হলে তার অফিসে তালা ঝোলানোর হুঁশিয়ারি দেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর রুহুল আমিন প্রামাণিকের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার ডা. আব্দুল মান্নান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হাসান খন্দকার প্রমুখ।

আব্বাস আলীর শাস্তি ও বহিষ্কার দাবিতে কাটাখালীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জহুরুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন- আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মোতালেব, পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোতাহার হোসেন, পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক জনি ইসলাম প্রমুখ। বক্তারা আব্বাসের সম্পদের হিসাব নেওয়ার জন্য দুদকের প্রতি আহ্বান জানান।

বুধবার বিকেলে নগরীর গণকপাড়ায় সাবেক ছাত্রলীগ ফোরাম বিক্ষোভ সমাবেশ করে আব্বাস আলীর শাস্তি ও সংগঠন থেকে আজীবন বহিষ্কার দাবি করে।

কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ও মেয়র আব্বাস আলীর একটি অডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়। এতে তিনি বলেন, 'যে ম্যুরালটা দিয়েছি বঙ্গবন্ধুর, সেটা ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী সঠিক না। এ জন্য আমি ওটা থুবো না...। আমি দেখতে পাচ্ছি, আমাক যেভাবে বুঝালো ম্যুরালটা ঠিক হবে না দিলে, আমার পাপ হবে। কেন দিবো? দিবো না। আমি তো কানা লোক না।... বঙ্গবন্ধুক খুশি করতে যায়া আবার আল্লাহক নারাজ করবো নাকি?'

আব্বাস আলীর এক মিনিট ৫১ সেকেন্ডের এই অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।

সূত্র: সমকাল।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.