Sylhet Today 24 PRINT

ওমিক্রনে টিকা অকার্যকর: মডার্না

সিলেটটুডে ডেস্ক |  ৩০ নভেম্বর, ২০২১

করোনাভাইরাসের রূপ পরিবর্তিত নতুন ধরন ওমিক্রন প্রতিরোধে সাধারণ বিদ্যমান টিকা কাজ করবে না বলে ধারণা করছেন টিকা উদ্ভাবকরা। করোনা প্রতিরোধী টিকার অন্যতম উদ্ভাবক ও প্রস্তুতকারক যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মডার্নার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্তেফানে ব্যাঁসেল জানিয়েছেন এ কথা।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, মডার্না নির্বাহীর শঙ্কা সত্যি হলে ‘উচ্চ সংক্রামক’ ওমিক্রনের ওপর প্রচলিত টিকার সবগুলোই প্রায় অকার্যকর হবে। আর ওমিক্রন ঠেকানোর মতো কার্যকর নতুন টিকা উদ্ভাবনে লেগে যেতে পারে কয়েক মাস।

ফাইনানসিয়াল টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন ব্যাঁসেল। মঙ্গলবার প্রকাশিত সাক্ষাৎকারটিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ওমিক্রন প্রতিরোধে বিদ্যমান টিকা কার্যকর কি না- সে বিষয়টি সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে জানা যেতে পারে।

সাউথ আফ্রিকায় প্রথম চিহ্নিত ভাইরাসটি অল্প সময়ের মধ্যেই বিশ্বের কমপক্ষে ১৬টি দেশে শনাক্ত হয়েছে। আফ্রিকা থেকে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়া ওমিক্রন সারা বিশ্বের জন্যই ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে সোমবার সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

এমন পরিস্থিতিতে ওমিক্রনের বিস্তার রোধে পূর্বসতর্কতা হিসেবে ভ্রমণ নীতিমালা কঠোর করেছে বিভিন্ন দেশ। জাপান, ইসরায়েলের পর হংকংও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধের মতো পদক্ষেপ নিয়েছে।

এখন পর্যন্ত ওমিক্রন শনাক্ত করা দেশগুলো হলো অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, বতসোয়ানা, কানাডা, চেত প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, জার্মানি, হংকং, ইসরায়েল, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল, সাউথ আফ্রিকা, স্পেন ও যুক্তরাজ্য।

সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে সাউথ আফ্রিকায়, ৭৭ জনের দেহে। বতসোয়ানায় ১৯ জন এবং নেদারল্যান্ডস ও পর্তুগালে ১৩ জন করে মানুষের দেহে ওমিক্রনের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে।

আফ্রিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আমেরিকায় পৌঁছে গেলেও এখনও এশিয়ার কোনো দেশে ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, করোনাভাইরাসের রূপ পরিবর্তিত নতুন ধরন ওমিক্রন ‘উদ্বেগের কারণ হলেও আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নয়’। টিকা নেয়া থাকলে এবং মাস্ক পরলে ‘আপাতত’ লকডাউন আরোপের কোনো প্রয়োজন নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে কারো মৃত্যু হয়েছে, এমন খবর এখনও পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ২০১৯ সালে চীনের উহানে শনাক্ত কোভিড নাইনটিনের চেয়ে ওমিক্রন একেবারেই আলাদা।

ওমিক্রনের মধ্যে অনেক পরিবর্তন শনাক্ত হয়েছে, যা ভাইরাসটির আচরণেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত করা সাউথ আফ্রিকার স্বাস্থ্যবিদদের মতে, এখন পর্যন্ত অর্ধশত পরিবর্তন শনাক্ত হয়েছে নতুন ধরনে। এর বহিঃ আবরণীতে থাকা আমিষের যে অংশটি ভাইরাসকে কোষের সঙ্গে যুক্ত থাকতে সাহায্য করে, সেই ‘স্পাইক প্রোটিন’-এর সংখ্যা ৩০টি।

করোনা প্রতিরোধী টিকা মূলত ভাইরাসের এই ‘স্পাইক প্রোটিন’কেই আক্রমণ করে। কারণ ‘স্পাইক প্রোটিন’ ব্যবহার করেই ভাইরাসটি দেহের কোষে প্রবেশের পথ উন্মুক্ত করে।

ভাইরাস তার যে অংশ ব্যবহার করে প্রথমবার মানবদেহের কোষের সংস্পর্শে আসে, করোনার নতুন ধরনেই সেই অংশে ১০টি পরিবর্তন শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়ানো আগের ধরনটি, অর্থাৎ করোনার ডেল্টা ভাইরাসে এ পরিবর্তনের সংখ্যা ছিল মাত্র দুই।

ফলে এসব পরিবর্তন ওমিক্রনকে আরও সহজে ও দ্রুত সংক্রমণযোগ্য করে তুলেছে কি না, এটি আরও গুরুতর অসুস্থতার কারণ হতে পারে কি না, এর ওপর বিদ্যমান করোনা প্রতিরোধী টিকা কতটা কার্যকর ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা।

টুডে মিডিয়া গ্রুপ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
[email protected] ☎ ৮৮ ০১৭ ১৪৩৪ ৯৩৯৩
৭/ডি-১ (৭ম তলা), ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি,
জিন্দাবাজার, সিলেট - ৩১০০, বাংলাদেশ।
Developed By - IT Lab Solutions Ltd.